তোফায়েল তফাজ্জল
জানুয়ারী ২৪, ২০১৬
0
একগুচ্ছ অণু কবিতা
১। ফুল, ব্যক্তি বোঝে
ছড়ায় না ঘ্রাণ।
২। নদীর থাকে না বাছবিচার
কে কায়েস্ত বা বামুন,
হাত বাড়ালেই জল।
৩। সূর্য, চাঁদের আলোও চরিত্রে অভিন্ন,
বাতাসও বিধি মানে কেবল সাম্যের।
৪। পাখি-রব, ঝরনা
দেখে না কে হাতী চড়ে এলো,
না নরম রোদে পদব্রজে, নগ্ন পায়ে।
৫। বৃক্ষ-লতা, সবুজ সৌহার্দ্য
বিলায়, যে যায় কাছে ।
৬। রক্তের মিশ্রণ নাকে এলে
হাঙ্গর মানে না বাল্যশিক্ষা।
৭। হতাশার মন
আর দাবদাহে পাওয়া বন।
৮। প্রতিভা অণুর সহোদর
বিস্ফোরণ ঘটলেই স্বাক্ষর।
৯। পেঙ্গুইন নাচে মনের আনন্দে
কবিতাও সেরূপ ছন্দে।
১০। ছন্দে লুকিয়ে যে মণি
তা দিয়ে মোহিনী করে তোলে কথা
দূর করে পুষ্টি-দুর্বলতা।
তাই বলে, উঠে আসা সামুদ্রিক ঝড়
শুনে এ খবর
ফিরবে কি গুটিয়ে লেজ
হারিয়ে গায়ের তেজ ?
১১। পঙ্গু ও প্রতীক
এক পাল্লায় ওজন সম্পূর্ণ বেঠিক।
১২। ফুল নয় কারো ঠোঁট
হয়তোবা ফুলের অধিক।
১৩। গাধা আর ঘোড়া সম গোত্রীয় হলেও
কর্ম বিশেষে দাঁড়িয়ে চীনের প্রাচীর।
১৪। ওষ্ঠাধর পার হওয়া বুলি
আর বন্দুকের নল পার হওয়া গুলি
গতি ও ওজনে সমান
এর ভুক্তভোগী, এর জ্বলন্ত প্রমাণ।
১৫। পাগলের কাছে সাবধানী বার্তা পেশ
স্বেচ্ছায় পাঠালে ডেকে বজ্রের বিদ্বেষ।
১৬। কাজই ধর্ম বিপদের বর্ম।
১৭। সকল উননই নিভে – জানো কি হে তন্বী,
মা থেকে নিভে না সন্তান বিয়োগ বহ্নি।
১৮। যা কিছু ফুটফুটে,
সুডৌল সৌরভে গড়ে ওঠে,
এর পিছনে যে ছায়া ছায়া হয়ে থাকে
ভুলো না কখনো তাকে।
১৯। গাধা : জল জরিপে যে
তুলা-চিনি একই দাগে মাপে।
২০। বোকা: সাঁতার না জেনে
যে গড় অংকের হিসাব চালায় জলে।
২১। নেহাই :গুঁতার ভয় দেখিয়ে কী লাভ!
২২। দুঃখ: এর পাল্লাজাত করা
আর সাগরকে হাতের মুঠোয় উঠানো সমান।
২৩। সুখ: তুষ্টিকে সঙ্গেই রাখো
যেখানে যেমনই থাকো।
২৪। কাজকে করো না ঘৃণা –
পা দেবার আগেই ভেবো না, কতো জল জানি,
সাঁতার শিখেছো কিনা।
২৫। সুযোগটা বাবুই ফুড়ুত
কিংবা চমকানো বিদ্যুৎ,
মাছ ভেবে ধরবে ছাইয়ে নির্ভয় - নিখুঁত।
২৬। দিন যদি রেখা টানে দিনের হিসেব
ঘুমে টেনে ধরে লেপ।
২৭। গণিতজ্ঞ, কটি কষে নেমে
ক'দিন না থেমে, ঘেমে
লোকারণ্যে ছাড়ো, হিমালয় কতো মন ?
এর চেয়ে ঢের জেনো
আমানতি কথার ওজন।
২৮। বন, রেখে এসো বনে।
তবে, নিয়ে এসো সৌম্যলীলা
যতো ধরে মনে।
২৯। মানীকে মানিও পথে
বাণীকে রাখিও ব্রতে।
৩০। শিক্ষা বড় অস্ত্র, অনেক কিছুর ভরসার স্থল,
এ রাজ্য বিজয়ে শেষ শব্দটি অচল।
৩১। মানবতা মাথা ঠুকে মরে
নীরবে সবখানে,
দেখা যায় কেবল সরব
বক্তার বয়ানে।
এতেও আবার দিবালোকে দুলতে দেখবে
ধর্ম, বর্ণ কিংবা জাতি বৈষম্যের দিক,
একই কাজ পাত্রভেদে অন্যায় বা মোটা দাগে ঠিক!
৩২। ফুল, ফুল জেনো,
কাঁটাকে কাঁটাই
ছাগল হরিণ নয় – পাঁঠাকে পাঁঠাই।
Tags
সুচিন্তিত মতামত দিন