শবরী শর্মা রায়'কবিতাগুচ্ছ
---------
হলুদশাড়ি মাঠ
বুকভরা ধান
অনন্ত আত্ম আবিষ্কার
#
ঘর আঁকতে আঁকতে মা হয়ে গেছো
নিজেকে বেড়ে দিয়ে
বাতাস করছ পাশে বসে
#
অবলা ভুল
ছিঁড়ে নিতে পারে লোভ
ঘরের মেয়ে ...ত্রিশূল!
আবহ
-------------
১)
কিছু না বললেও চলত।ধীমানবাবু বললেন।সারা হলঘর বেজে উঠল।দেয়াল,জানলা,দরজা,চেয়ার দুলতে লাগল গলার আওয়াজের দোলনায় ধিন তা, ধিন ধিন তা...
২)
মায়া নৃত্যপটীয়সী। ফুলঝাড়ু নৃত্য।ধুলোবালি নাচছে সারা বাড়ি,খাটের কোণা থেকে সোফার নীচে,জানলার কার্ণিশে।পাঁচ ঘর,বারান্দা,উঠোন, ধুলোর মায়া ছড়িয়ে মায়া চলল তা ধিন ধিন না...তা ধিন ধিন না
৩)
পুকুর পাড়ে একা শুকুদি।সন্ধ্যা হয় হয়।দুচোখে টলটল ব্যথা।নি:শব্দ জলতরঙ্গ... ধারা
৪)
শ্মশানঘাট। ফিরে যাচ্ছে আত্মীয়বন্ধু।শ্মশান বাজছে।বুড়ো বট দেখছে,চাঁদের আলোয় কারা যেন মিলিয়ে যাচ্ছে।দূরে কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুরে ঘুরে গোল হয়ে নাচছে সাদা ঘাগরা, যুবতী...ধোঁয়া...
মেঘ কথা
---------------
ভেতরে একটু একটু মেঘ উঁকি দিচ্ছে।মাননীয় মেঘমন্ত্রী, কেরালার লবনহ্রদে গ্রীষ্মের ছুটি কাটাচ্ছেন, কপ্টার চড়ে সংগে গেছেন ৮০ জোড়া শৌখিন জুতো।
আকাশে আইনষ্টাইন আর কবিগুরু মেঘ, শিশুমৃত্যুর হার দেখে চোখের জল ফেলছেন।বৃষ্টিকণারা মাটিতে পড়ে আবার অনাথ,রোগা শিশুমেঘ হয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশের ম্যাজিশিয়ান মেঘ হাপিশ করে দিচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ঠোঁটকাটা মেঘবৃশ্চিক
যুবতী সাঁওতাল মেঘ শালজঙ্গলে মাথায় পালক গুঁজে বাঁশীর সবটুকু হাঁড়িয়া উজার করে নাচছে
মেঘমন্দিরে বাবা কখনও যান নি।কাল গভীর রাতে ঘুম ভেংগে আমি দেখেছি, সারাটা আকাশ জুড়ে বাবা অসংখ্য ঘন্টা বাজিয়ে চলেছেন।
উর্দি পরা কিছু লোক জটলা করছে দূরে।
আমার লাল শাড়ি মেঘবোন, চিতকার করে বলছে,আমরা হেরে যাই নি...হেরে যাই নি..
অপু
---------
অপু নামে ছিল পেন্সিল
যার কাব্যগ্রন্থ নেই কোনো
আছে জেদ। কিছু পাতা লেখে,কাটে...খাতা মেঘলা হয়।বছর গড়ায়।পড়ে থাকে পেন্সিলবক্সের এককোণে।
বসে বসে দেখে,রঙিন পেন্সিল রামধনু আঁকে বৃষ্টিপাড়ায়।
একদিন খোঁজ পড়ে, অপু নামে ছিল পেন্সিল,এ পাড়ারই।কবিতাও ছিল হাতে বেশ।
কিছু বদ কিছুটা মেজাজ।ঘাড়গুঁজে ইদানিং পড়ে থাকে অন্ধকার ঘুপচি পাড়ায়।
কবিতা লেখে না...পেষে।ক্ষয় হয়,আঙুল নাগাল পায় না আর...
সুচিন্তিত মতামত দিন