বেঁচে থাকার জন্য কত যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়? ওটা তোমরা বুঝবে!
সব জীবিত আর মৃতের খেলা! চলন্ত ইতিহাসের রক্তপাত, দিশাহীন আঘাতের জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবো আমি। আমি কে জানো? নাম নেই কোনো! আমি ঠানে ( মুম্বাই)।
ঠানে ভারতবর্ষের একটি জায়গার নাম।ওখানেই আমার ৪ বছরের জীবন রক্তের ডেলা হয়ে কুকুরের মুখে ছত্রখান হয়েছে।কত ভুল করে যাচ্ছে এই মানব সমাজ। বলি হয়ে যাচ্ছি আমরা অনবরত এই সমাজের মানদন্ড বজায় রাখতে গিয়ে। এই সমাজের ভুলেরই একটি কাহিনী আমি।
জানো ৪ বছরের আমিও এসেছি
লাইমলাইট, দূরদর্শন আর খবরের কাগজে! হৃদয়ের গোপন
রক্তক্ষরণ চাপা পড়ে গেছে শরীরের অবিশ্রান্ত রক্তক্ষরণে।অথচ সম্ভাবনা কি ছিল না কোনো আমার জীবনে? তবে কেন নারী হয়ে ওঠার সুযোগটুকু কেড়ে নেওয়া হলো আমার কাছ থেকে? আমি তো পড়িনি কোনো
শরীর দেখানো পোশাক? উত্তেজিত কেন হলো তবে ওরা?
কেন ছিঁড়ে খুঁড়ে খেলো ওই পিশাচগুলো আমার ৪ বছরের শরীরটাকে? ৪-৫ জন পুরুষ! কাউকে এদের মধ্যেই আমি কাকা বা মামা বলে ডাকতাম! যন্ত্রণা... উফ্ কি যন্ত্রণা! রেহাই পাইনি তবুও। পড়ে থাকলাম ছিন্ন স্তন,ছ্যাঁচা ত্বক, পচে যাওয়া যৌনাঙ্গ নিয়ে আমি রয়ে গেলাম সংবাদ-পত্রের হেডলাইন -ঠানে -২০১৭।দিল্লীর নিরভয়া, কামদুনি
আরও আরও অনেকের মতো আমিও হারিয়ে যাবো। রক্তের ছাপ মুছে যাবে। মোমবাতি নিভবে,আবার জ্বলবে। ক্লেদাক্ত, রক্তাক্ত ভূমি আবার রক্তে ভাসবে!
এ রক্ত মিছিল শেষ হবে না জেনো।নীরবতা যেন আসলে নীরবে লুকিয়ে রাখা চোখের জল।
জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হওয়ার আগে
এই জলকে একবার অন্তত আগুনে পরিণত করো তোমরা। আমাদের নামে আমাদের পরিচিত হতে দাও।
আচমকাই থেমে গেলো ৪ বছরের
জীবন আমার। কিছু প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখে গেলাম ভবিষ্যতের কাছে।আমি চলে গেলাৃ। কিন্তু আমার পদধ্বনি যেন বেজে যায় তোমাদের কানে। জন্ম নেয় যেন
তোমাদের মনে এক অমোঘ বোধের। আমারও বাঁচার অধিকার ছিল। নতুন সূর্যোদয় যেদিন হবে সেদিনের স্বপ্ন বুকে
নিয়ে চলে গেলাম আমি! প্রশ্ন রেখে গেলাম... নারী হয়ে উঠতে
কেন দেওয়া হলো না আমাকে?
জিও জয়া।
উত্তরমুছুন