যারা বালুঘড়ি বুকে নিয়ে ঘোরেন , তারা বুঝতেই পারেন না কখন সময় শেষ হয়ে গেল । যারা হাওয়ার সঙ্গে , মেঘের সঙ্গে , ফসলের সঙ্গে , নদীর সঙ্গে ঘোরেন , তাঁদের কাছে সময়ের ধারনাটাই ভুল প্রমাণিত হয় । সময়কে ব্যবহার করতে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষ সময়ের দ্বারা ব্যবহৃত হয় । সময়কে বদলাতে গিয়ে নিজেই একজন সময়ের ফাঁপরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যায় । সময় সেই জাদুকর , যার শেষ ম্যাজিকটা কোনোদিন দেখানো হয়ে ওঠে না । আমরা সবাই ম্যাজিকটা দেখতে চাই , প্রতীক্ষা করি , আর প্রতীক্ষা করতে করতে মাটির অন্দরে পৌঁছে যাই । পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে সময়কে বদলাতে চেয়ে বদলে যাওয়া মানুষে গিয়েছে ভরে । সময় হল জলস্তম্ভের মতো ।প্রতি মুহূর্তের ঢেউয়ে ভেঙে গিয়ে নতুন নতুন রূপে আবির্ভাব ঘটে ।
কিন্তু , মানুষ তো এমন নিঃস্ব ছিল না ! মানুষের পাঁজরে নেই কি প্রাগৈতিহাসিক অস্তিত্বের বিশ্বাস ? নেই কি পূর্বপুরুষের রক্ত ? অথচ ভুলে যাওয়া যেন মানুষের স্বভাব । সমস্ত কিছু ভুলতে ভুলতে আজকে নিজেকেই ভুলে গিয়েছে মানুষ । বয়ে যাওয়া সময়ের মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারছি , মানুষের ভাষা মানুষ আর বুঝতে পারছে না । মানুষের রক্ত মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের জন্য তৈরি । ভাইয়ের বুকের রক্তে স্নান করছে অন্য আর এক ভাই । সমস্ত সম্পর্কগুলো মানুষকে বেঁধে রাখার জন্য যথেষ্ট নয় বোধহয় । মানুষের সঙ্গে মানুষের এই ভেদাভেদ মানুষকে নিয়ে যাচ্ছে সভ্যতার শেষ প্রান্তে ।
অথচ মানুষ তো থাকতেই এসেছিল মানুষের কাছে । প্রকৃতি এসেছিল পুরুষের পাশে । হাতে হাত ধরে পাথর ভেঙেছিল , লড়াই করেছিল পশুদের বিপক্ষে । ধীরে ধীরে সেই প্রিয় পুরুষ মানুষের থেকে দূরে সরে গেল ্প্রকৃতি । শুধু বিপরীত লিঙ্গের কারণেই কি দূরত্বের অবস্থান ? নারীর শরীর কি তাহলে নারীর মনের প্রতিবন্ধক ? পুরুষেরা নারীকে ভালোবাসতে গিয়ে ভালো বেসে ফেলল শরীরকে । শরীরকে যত ভালোবাসতে শিখল তত বাড়ল লোভ । সেই লোভ টেনে নিয়ে গেল নরকের কিনারে । অধঃপতন থেকে মুক্তি নেই , কিংবা মুক্তি চায় না বলেই পতন ডাকে আয় ।
মানুষের ইতিহাসে শেষ নামের কোন শব্দ নেই । শুরু আছে । শেষ একটা ধারণার নাম । শেষের পর থেকেও শুরু হতে পারে ।মানুষের এমনই এক নিয়ম তারা বেশিদিন শোক বইতে পারেনা।এক একটা অন্ধকারের পরেই হন্যে হয়ে আকাশে উড়িয়ে দেয় আলোর রোশনাই। এই দুঃসময়ের মুহূর্তে , একটু বিলম্বিত তালে সেই আলোর উৎসব নিয়ে আসছে মায়াজম । এই বিলম্বের জন্য সম্পূর্ণ দায় আমার । সৈয়দ হাসমত জালাল দাদার সম্পাদনা করার কথা ছিল এই সংখ্যাটি , কিন্তু ওনার ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য উনি সময় করে উঠতে পারেননি । তাই বাধ্য হয়ে নিজে সম্পাদনার কাজটি করতে হল । আশা করি আপনারা মার্জনা করবেন । এ বারের সংখ্যায় যারা লেখা দিয়েছেন সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানাই । শুভেচ্ছা জানাই মায়াজম এর পাঠকবর্গকে । খুব ভালো থাকুন ,সকলকে ভালো রাখুন।
ধন্যবাদ
সোনালী মিত্র
অসাধারণ সম্পাদকীয় ।
উত্তরমুছুনসময়ের কাছে সকলেই মাথা নত করছি। স্পার্টাকাস হতে পারছি না।
উত্তরমুছুনএভাবেই উদ্ভাসিত হও দিদি, আপন মহিমায়। মায়াজম দীর্ঘজীবী হোক।
উত্তরমুছুনখুব সুন্দর । শুভকামনা নিরন্তর ।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ ...
মুছুনভালোবাসা নিও।
উত্তরমুছুন