শর্মিলা ঘোষ

মায়াজম
0
                              বিসর্জন 


"শরতের ছোঁয়া পেয়ে সিক্ত হয় মন
সংসার শুধু রক্ত মাংসের
শরীর উচাটন"
বেলা বাজার থেকে একটা লতানো পুঁইডাটা আর চিংড়ি কিনে এনেছে। আজ শাক চচ্চড়ি,ওল ভাতে আর ভাত। আজ দুর্গা সপ্তমী। কাল অষ্টমীতে একটা লাল পাড় শাড়ি পড়বে। যেমনটা বিয়ের দিন পড়েছিল।সুবীর যে বিয়ে করে এনে বেচে দেবে বেশ্যাপট্টিতে কে জানতো। উফ্ ব্যথায় ককিয়ে ওঠে বেলা,কাল রাতের মাতালটা খিমচে পিঠের চামড়া তুলে দিয়েছে। সকাল থেকে উপোস, একটা রেকাবিতে ফুল, ফল নিয়ে প্যান্ডেলে চললো। তার পট্টিরই পুজো, সবাই এসেছে। আরে ঐকোণে দাঁড়িয়ে সুবীর না! সাথে একটা বাচ্চা মেয়ে সিঁদুর পরা। দাঁতে দাঁত চাপে বেলা। সন্ধে নামলে খোঁজ খবর নিয়ে সুবীরের ভাড়া বাড়িতে যায়। মেয়েটি তখন সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালছে,কি মায়া মাখা মুখ, বয়স খুব জোর উনিশ। এর ঠাঁই কাল পরশুর মধ্যে কোথায় হবে ভাবলেই শিউড়ে ওঠে বেলা। সে সব কথা মেয়েটিকে খুলে বলে আর নবমী সকালে সুবীর বেরোলে তৈরি থাকতে বলে। পুলিশের বড়কত্তার সঙ্গে স্পেশাল খাতির বেলার, বেলা জল মাপে, সোজা পুলিশের ভ্যানে চাপিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয় মেয়েটিকে।
সুবীর পাগল হয়ে যায়, জলজ্যান্ত শিকার ফসকে গেলো! দশমীর রাতে সুবীর এসে উপস্থিত হয় বেলার খোঁজ পেয়ে। বেলা তৈরি ছিল অসুরের বুক ফালা ফালা করার জন্য। বটিটা উঠোনে ফেলে পুকুর ঘাটে ডুব দেয় সে, সঙ্গে সঙ্গে ঝুপ করে প্রতিমা বিসর্জন হয়,বেলা দেখে রঙ রূপ সব গলে যাচ্ছে, শুধু কাঠামো ছাড়া আর কিছু ভেসে নেই,আজ বিসর্জন ......

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)