(1)
গ্রীষ্ম আসতে ঢের দেরী
কেবল ঝাঁঝ উঠছে বনের গায়ে
শিকারি অনুচরেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে রুখু আস্তানার আশেপাশে
কতোটা স্বনির্ভর হলে চিনে ফেলা যায় নিজের ভিতরের নৈর্ব্যক্তিক আমিটাকে
এসব চটুল প্রশ্নের দিন নয় এই নাতিদীর্ঘ বনবাসর, জানি
পাহাড়ের উদলা কালো গায়ে শঙ্খচুড় সাপের জোড় লাগার দৃশ্য দেখতে, উৎসুক চোখে জেল্লা বাড়াচ্ছে সময়
ফুলগুলো দুলছে দীর্ঘসূত্রী মুশকিল-আসানের আশায়
হালকা সবুজ হিলহিলে দৃশ্যের ফাঁক ফোঁকরগুলো ভরে উঠছে নিষ্পাপ নদীডাকে
ভাঙতে যদি হয় না হয় ওবেলা ভাঙা যাবে
এবেলা সংকল্প করতে দোষ কি !
গ্রীষ্ম আসতে এখনও দেরী
এখনও বসন্তের এই ছদ্মবেশ ভালোলাগছে
(2)
পাখিই শুধু বোঝে পাখির ভাষা
আকাশ দেখতে পেলে তার দানা লাগেনা
মাথার ভিতরে গুলি খাওয়া তিতিরের ছটফটানি
শীতের শেষে ভীড় করে আসে বন্য নালার ধারে
শূন্যতা কোনো নিভে যাওয়া দাবানল নয়
বুকের খাঁচায় বাঘে খাওয়া মোরগের শেষ ঝাঁপাঝাঁপির দাগ
পতঙ্গের ডানা অনুসরণ করে পথের পাশে পথ হয়ে যায় মন
শক্ত করে ধরতে গেলেই পিছলে যায় পথিকের হাত
থেমে যায় হাঁটাহাঁটি
বয়সী গাভীর বাঁটের মতো ঝুলে থাকে
আধখাওয়া ফল'টি
'ফিরে আসা' কাকে বলে জানতে চাইলে
তিরতিরে নালাটি ডাকে, কথা বলেনা
3)
চলো ফিরি
দ্যাখো, অন্ধকার নেমে আসছে ডাহুকের ডানায়
তবে যাবার আগে রুখু বুকের গন্ধ,স্পর্শ শুষে নিই, এসো |
প্রতিটা দিনের মৃত্যুর সাক্ষী থেকে রাতে ডেকে ওঠে যে তক্ষক
তার পায়জোরের ঝুমঝুমি চকিতে সজাগ করে তোলে বুনো শুয়োরের চোখ |
নিজেকে আদিম ভেবে ঝাঁপ দিই একে অপরের অরণ্যে
উড়ে যাক শিকারি ঈগল নাগকেশরের ডালে
প্রস্তরীভূত অহল্যাও জানুক
প্রাপ্তি কিংবা রিক্ততা দুইই বড়ো অবুঝ
4)
কাঁঠালের মুচি আর আমেরে বোলের গন্ধে
ঘন হয়ে আসে সান্নিধ্য
আলো ফোটে ডিমের কুসুমের মতো, হলুদ
জানলা দিয়ে কুবোটা চোখে পড়ে
খুব নজর করলেই ওকে কেমন বিজ্ঞ লাগে, দার্শনিকও
এসময় কাক দেখিনা
হেঁড়ে গলায় আলোড়ন তোলেনা তারা
গ্রীষ্ম এসেছে, তবু
হয়তো ওদের নিজস্ব শীতেই
বুঁজে আসে গলা
আরো খানিকটা গড়িয়ে নেওয়া যায় কোঁচকানো বিছানায়
আমি তো জানি 'কাক না ডাকলে সকাল হয়না '
শিশুকালের অভ্যেস !
সুচিন্তিত মতামত দিন