হৃদিকমলাসনে
সেবার বৃন্দাবনে বাঁকেবিহারী মন্দিরের গলির মুখটাতেই সন্ন্যাসীদের এক জমায়েত পেয়ে গেলাম।রোদ ঝলমলে সকাল, চারিদিকে তুমুল ব্যস্ততার মধ্যে ওঁরা রাস্তার ওপরেই বসে আছেন।হাতে হাতে গাঁজার কল্কে ঘুরে চলেছে।মাঝেমাঝে ধ্বনি উঠছে "জয় বাঁকেবিহারীজিউ কি জয়।" আমিও গিয়ে ওঁদের কাছেই রাস্তার ওপরেই বসে পড়লাম।পরম সমাদরে ওরা আপ্যায়ন করে নিলেন "আইয়ে মহারাজ, দর্শন হুয়া না কানহাইয়ালালকি?" তারপর গাঁজার কল্কে হাতে ধরিয়ে দিলেন।আমি একটা প্রণাম করে সেই কল্কে পাশের জনের হাতে ধরিয়ে দিলাম।ওঁরা বুঝেছিলেন আমি ও রসে বঞ্চিত।নানারকম কথা শুরু হল, ওঁরা আসছেন পঞ্চকেদার থেকে।যোগের গূহ্যাতিগূহ্য তত্ত্ব নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন দেখলাম এক সন্ন্যাসী, যুবক শরীর, ছিপছিপে বলিষ্ঠ চেহারা, মাথায় পিঙ্গল জটা, বিলকূল মস্ত।হাতে ত্রিশূল আর ডমরু, দিব্যন্মাদ অবস্থা, নাচতে নাচতে ছুটে চলেছেন বাঁকেবিহারীজির মন্দিরের দিকে।মনে হল সাক্ষাৎ বিশ্বেশ্বর রাধানাথকে দর্শন করতে চলেছেন।বাঁকেবিহারীজির গলির ওই ভীড় দুপাশে সরে গিয়ে তাঁকে পথ করে দিল।আশেপাশের আশ্রম থেকে মহন্তরা বেড়িয়ে এসে হাতজোড় করে দাঁড়ালেন।ওনার পিছু নিয়েছিলাম, শেষপর্যন্ত আর খুঁজে পাইনি।
সুচিন্তিত মতামত দিন