অর্ঘ্য দীপ

মায়াজম
0

                                     দুখজাগানিয়ার গান





"মন দুঃখ আছে, যাকে ভোলার মতো দুঃখ আর নেই।"
বিশু পাগল বলেছিল। রক্তকরবী। অথচ টিভিতে ফাস্টট্র্যাক ঘড়ির বিজ্ঞাপন শুরু হলেই কে যেন অমোঘ মন্ত্রণা দিয়ে বলত, "মুভ অন, ম্যান!"। আমাদের প্রজন্মের অনেকেই এই উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছে৷ যে কোনও গভীর শোকের পরে, নীরবতা পালনের জন্য বরাদ্দ করেছে সর্বাধিক দু'মিনিট৷ জানলার ভাঙা কাচ যেভাবে বদলে যায় পরদিনই, ঠিক সেভাবেই রাতারাতি প্রতিস্থাপিত করে নিয়েছে ভেঙে যাওয়া, পুরোনো সম্পর্কগুলোকে৷ থেমে থাকেনি কেউ৷ থেমে থাকার কথাও হয়ত নয়৷
আমি পারিনি৷ আমি পারি না৷ আমি চোখ বুজলেই দেখতে পাই, অনেক দূরের কোনও গ্রহে একলাটি পড়ে থাকা একটা গোলাপের কাছে ফিরে যেতে চেয়ে লিটল্ প্রিন্স, একটি বিষাক্ত সাপের কামড় খেয়ে নিচ্ছে স্বেচ্ছায়৷ "He fell as gently as a tree falls. There was not even any sound." শেষ বয়সে উন্মাদপ্রায় বিনয় মজুমদার কবিতা লিখে, পাতাগুলোকে ছিঁড়ে মাটিতে পুঁতে রাখছেন। বলছেন, আমার কবিতা যদি সত্য হয়, একদিন এখানে গাছ হবে। অথবা, 'দ্য ডেথ ইন দ্য গঞ্জ'৷ খুব, খুব মনখারাপ হলেও সুটু কাউকে কিছুই বলছে না। আর 'অক্টোবর' ছায়াছবিতে ড্যান প্রতিদিনই জিজ্ঞেস করছে সবাইকে, শিউলি ওর কথা জানতে চেয়েছিল কেন?
এসব কথা যত ভাবছি, ততই আমাকে ঘিরে ধরছে কবেকার অবিকল মায়া। আমার জীবনের যাবতীয় আঘাত, প্রতিটি প্রত্যাখ্যান এবং সমস্ত অপূর্ণতাকে ক্রমাগতভাবে ভুলিয়ে দিচ্ছে একটি সামান্য দুঃখ৷ সেই দুঃখ থেকেই জন্ম নিচ্ছে একটি আশ্চর্য সুর।
তাকে আমি ভুলতে পারছি না কিছুতেই...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)