মলয় রায়চৌধুরী - মায়াজম

Breaking

২৯ জুল, ২০১৬

মলয় রায়চৌধুরী


                 এ-৪ মাপের কাগজে






এ-৪ মাপের কাগজের একেবারে মাঝখানে ইন্সপেক্টর অ. ব্যা.
লিখে রেখেছিলেন, "আমার মৃত্যুর জন্য কেহ......."
ডাকসাইটে ইন্সপেক্টর বলে বেশিদিন একই পুলিশ স্টেশনে
টিকতেন না
অ. ব্যা. ছিলেন যাকে ভালো বাংলায় বলে অকৃতদার, মানে
যিশুখৃষ্ট টাইপ নয়, চলতি বাংলায় যাকে বলে লুচ্চা
এ-৪ কাগজের পেছনে খুদেখুদে অক্ষরে দেড়-হাজার নাম লেখা ছিল
মেয়েদের নাম, কিন্তু অনুসন্ধানকারী কমিশনার শ. চ্যা.
হদিশ পাচ্ছিলেন না নামগুলোর মালকিনি কারা
অ্যাসিসস্ট্যান্ট ইন্সপেকটরের মতে এই মেয়েগুলোই অ. ব্যা-কে
খুন করেছে, কিন্তু কেন লেখা, "আমার মৃত্যুর জন্য কেহ..."
যতোগুলো থানায় ইন্সপেক্টর অ. ব্যা-এর পোস্টিঙ হয়েছে
কন্সটেবলরা জানতো উনি প্রতিদিন সকালে গায়ত্রীমন্তর
গুজগুজ করে পড়েন
অথচ ইন্সপেক্টর অ. ব্যা-এর বাড়িতে পুজোর ঘর পাওয়া যায়নি
গঙ্গাজল পাওয়া যায়নি, পাঁজিও না
কিন্তু একটা ঘরে রঙিন ফোলানো গ্যাস-ভরা কনডোম পাওয়া
গেছে, সেই ঘরে তারা নিজের ইচ্ছেয় উড়ছিল
বেলুন ফোলাবার সিলিণ্ডারও পাওয়া গেছে, ঘরের ভেতরে ঢুকে
কমিশনার সায়ের লাফিয়ে লাফিয়ে যতোই অন্তত একটা
কনডোমকে নাগালে আনার চেষ্টা করেন, সেগুলো পালিয়ে
সিলিঙে গিয়ে ফিকফিকিয়ে হাসে
মেঝেয় খুঁজে পান একটা গ্যাস-ফুরোনো কনডোম তাতে কালি ওঠে না
এরকম রঙ দিয়ে একজন মেয়ের নাম লেখা
মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি কে মেয়েটি
যে কে তা একজন কন্সটেবল বলতে পারল
"হুজুর ও তো বেপাড়ার, এ-৪ কাগজে যতো নাম আছে সবই তার মানে
বেপাড়ার"
এ-৪ তালিকা নিয়ে অ. ব্যা-এর পোস্টিঙের শহরে বেপাড়ায় ঢুঁ মেরে
কমিশনার শ. চ্যা. বিশেষকিছু জানতে পারলেন না
তিনি তো আর খদ্দের হয়ে জাননি, পুলিশ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁকে দেখে
মেয়েরা নিজের অন্য নাম বলেছে, কেননা রোজ সন্ধ্যায় ওদের
নামবদল হয়
শেষকালে অ.ব্যা. সম্পর্কে গুজবই কাজে দিল । অ. ব্যা, গায়ত্রীমন্তর
পড়ার সময়ে রগের ওপরে পিস্তলের নল ঠেকিয়ে পড়তেন
তিনি মনে করতেন যে যদি বেপাড়ায় যাওয়া পাপই হয় তাহলে
৯ এমএম গুলি তাঁর মগজ ফুঁড়ে বেরিয়ে যাবে
তবু তেমন সুরাহা হল না কেননা পিস্তলের ট্রিগারে কারোর
আঙুলের ছাপ পাওয়া গেল না । শ. চ্যা. ফাইলে লিখলেন
"কেস ক্লোজড; কনডোমগুলো ভালো কোম্পানির । ৩৫৯৭টা
কনডোম । অফিসারের ভবিষ্যৎ উজ্জল ছিল । মরণোত্তর
সম্বর্ধনা দেয়া হউক ।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র