জপমালা ঘোষরায় - মায়াজম

Breaking

২৯ জুল, ২০১৬

জপমালা ঘোষরায়


                       জপমালা ঘোষরায় এর কবিতা




যাপন
-----------

প্রত্যুষ আর প্রত্যাশ, এই দুই খুঁটে বেঁধেছি লাবডুব। ঘাম মুছে মুছে চরকা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গুটিয়েছি রঙীল। সাদা বা কালো কোন হাতকেই অস্বীকার করিনি। এখানে তাঁতশব্দে সূর্য ওঠে কপালের টিপে। সিঁদুরে, আলতাপায়ে বুনন। ডুরে, স্ট্রাইপ, গুটিদার বুনন। মুড়ো ঝাঁটায় লাগল পেঁচায় খোঁটা কেঁচো, মৃত। মাটি খুঁড়ে মৃত্যু খুঁটে ফেলে দিলেন বোষ্টুমি। গোবর নিকানো উঠোনে কীর্তনীয়ার চা ফুটছে, মাচায় ফুটছে কুমড়োফুল। আলতামিরার মত ঘন হরতুকি গাছগুলোতে গামছা ঝুলছে.... শাড়ি.... এক একটা শাড়ি মানে এক একটা ১২হাত সময়ের গল্প।

২* হয় বদল
-----------------
নুপুর বাঁধা মাটন রাঁধা একসঙ্গে হয় না তাই শেষেরকবিতা। বাছাইকরা ননভাইরাল শব্দেরাও জানে যে পলিগ্রাফীতে বুঝে নেওয়া যাবে মুখ যা বলে কোশ তাই বলে কি না। যেখানে আমার নিজস্ব দীপ্তি সেখানে তোমার কোন প্রাণনা ছিল কি না। হয়বদল নাটক করলে বাকী সমস্যাগুলো মিটে যেত কিন্তু সেটা করা যাবে না। আমি পুঁথিপত্রের মত পড়ে শেষ করে ফেলেছি কভার টু কভার,গ্রহে অনাগ্রহে। অতঃপর অনিঃশেষ কাছে আসতে পারো মহাকেন্দ্রের দিকে, কৃষ্ণতিল অস্তিত্বের দিকে, কপাল এবং কপোলের আগ্রহের দিকে, এসে দেখতে পারো সীমারা দলবেঁধে যাচ্ছে আর্ট গ্যালারি।

৩* আনলিমিটেড টকটাইম
-------------------------------------
তোমার বালিশের পাশে চশমা আর বাঁধানো দাঁত দুটোই থাক। আর এই মোবাইল ফোন, এতে আনলিমিটেড টকটাইম।
মায়ের চশমাটা এখন সময়ের চেয়েও,এমন কি তাঁর দৃষ্টির চেয়েও ঝাপসা।খড়িওঠা বাঁ চোখের মণি। এই যাপন একপ্রকার পশ্চিমী লকডান্স। স্বেচ্ছায় লক করা আর খোলা মেরুদন্ড দাবনা আর হাঁটু আর হাতের খিলান। যেন কাঠপায়ে চলন, জল পি পি কাঠের ঘোড়া। দেখো মা, যেমন টিভিতে দেখাচ্ছেন জাভেদ জাফরি।
# আজ খেতে বসার আগে মা ফোঁকলা হেসে বললেন এসব খাওয়ার আর বয়েস নেই দাঁতও নেই।কামড়ের আগেই বাঁধানো দাঁতের মত জরুরী হয়ে পড়েছে সময় ও মাড়ির সংবেদনা। চোখের কোণে যে ভিজে সময় জমে আছে তাকে আঁচলের খুঁট দিয়ে মোছা। সময় কি তোমার দিকে এগিয়ে আসছে? সময় কি তোমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে? চলন না কি গমন কোনটা চাই? যদি চলেই যাচ্ছে তাহলে সময়কে এত ভয় পাচ্ছো কেন মা?

৪* ইঁদারাপাড়
---------------------
ফোন থেকেই ঠিকানা পাওয়া গেল যে জোন এর, ভাঙা ইঁদারাপাড়, মাইলস্টোন দিয়ে ঘেরা। এত জল তুলেছি পুরোনো শ্যাওলাগন্ধ, কপিকল কোন প্রতিদানই চায় নি। এই যে মাদুর বোনা হচ্ছে এখানে তাকে বুননেই রেখো। এই যে পাখির হাট এখানে এদের বেচে দেওয়ার আগে জল দিও দানা দিও। নির্মম বন্দীত্বের আগে একবার করুণ চোখ দিও মুক্তির দিকে। পাখিদের খাঁচার নাম কখনো নীড় হয় না। নির্মাণ অপূর্ণ থাকতেই বুনন থেমে গেলে আমি ছুঁতে চাইলাম একা একা নদীর নিশ্চুপ। তুমি এবং শুধু তুমিই কখনো পাখিরালয়ে, ঘন সবুজে নিয়ে যাবে এই প্রতিশ্রুতি যদি সৎ হয়, আমি অ্যান্টিজোনেই অপেক্ষা করতে পারি আরও কয়েকটা হেমন্ত।

5* H2O
-------------
নষ্ট ঘুমের তুলোর ভিতর পরাজয় দলা পাকিয়ে আছে,ভাঙন চোঁয়া রক্তে ভিজে যাচ্ছে মন। পরাগ দাও,পরঞ্জয় কথা দাও।
# কান্নার সমীকরণে তুমি H2O খুঁজে পাবে না কোনদিন। এমন কিছু সহানুভবও তাতে নেই যা মহানুভব জীবন গড়বে। অথচ একটা খুব ভারী অশ্রুবিন্দু কেমন পেপারওয়েটের কাজ করছে দেখো,উড়ে যেতে দিচ্ছে না ছেইরে ঘুড়ি।

1 টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র