রত্নদীপা দে ঘোষ

মায়াজম
2
          রত্নদীপা দে ঘোষ'এর গুচ্ছকবিতা



অন্তরবাক্স 
জলের ভেতরে তখন কনকচুড় । আর গোলগাল আকাশ তোমার চিরন্তন সোহাগ। সে আয়নার সুগন্ধে ধরা পরে এমন সব অনুভব তোমাকে দিয়ে লিখিয়ে ন্যায় যা গতজন্মের মনহারানো। চমকানো জ’মে জ’মে গোলাপির পাহাড় । পরিচিত ঝিঁঝিঁর ফ্রেম । তবকের বৈজয়ন্তী থেকে সেই যে উড়লো উড়ালের বিজ্ঞাপন । আবর্ত নামের এক অতৃপ্ত গ্রহ । হরিতকিরোদের স্তুতিমালা । কিরণের ঝোলা । যে তান । আত্মাকে ঘষে মেজে আরও পরিষ্কার কোরে তোলে ।তার নিরিবিলিটি আমাকে নিরাপদের পোশাক পরায় । তোমাকেও ।

সতেরোর পার্বতী আর একুশের উমা
বগলে উঁকি ১০৩ দশমিক চার
যতখানি দেখা যায় তারচেয়ে
বেশি
ও মা উ মা তোমার
ভায়োলেট ব্রেসিয়ার
ট্রিহাউজ
 কুয়াশায় ঘুরছে
নানা মাপের মাস্কারা
আনাগোনার মিরর
আস্কারার নিওন জ্বলবে কবে গো

পাখি হয়েছি অবশেষে আর উড়তে উড়তে ঠিক পৌঁছে গেছি তোমার কিনারায় । তোমার ডৌল । আশেপাশে । কাছে থাকো । বিশদ। অঘ্রাণ আঁকার কৌশল । একটা কুশলসংবাদও দেওয়ার আছে তোমাকে । জানো তুমি , লালপদ্মঝুরির বিন্দি থেকে ছড়িয়ে গেছে সকল সম্ভাবনা । রোদতৃপ্ত সূর্যের মুখ । খুব যে পরিপাটি তা বলা যায় না । কিছু বেহিসেবি । কিছুবা কাহারবার ফিরতিরেখা।
একাভোরের অনায়াস । চারটি রাতসাইকেল। খুবসকালে তোমাকে সাজাবো দূর্বাদলের যতনে ।

অনেক গানগল্প হয়েছে
গোলপ্যানটির ফ্রিজি
টেরাকোটা খোলো দেখি
এবার
খুলে ফ্যালো যতো সব
পায়ুদ্বার ফাঁক করো
খুলে দাও সেই গলি
আমি যাকে বলি স্বর্গের তপোবন
আর অই শালা হারামির পোলা
তুলসিটা কয় হাড়কাটা গলি

যতদূর অনিকেত । তার ওপর যে অলীক তরঙ্গ । অসীমের । আমার কাছে তুমি ঠিক আমার কবিতার মত । যদি কোন সৎ পাঠক তোমার ভেতরে আমাকে পায় , অথবা আমার ভেতরে তোমার কবিতা পায় , অথবা আমাদের ভেতরে একই সম্পাদক আর সেই ম্যাজিকে লেখা আমাদের নিস্তরঙ্গ তোরঙ । বীণনাগিন । ধরো আমাদের শেষবেলাকার আস্তিন । হাতা গোটানো দিগন্ত । অলৌকিক থোকা থোকা । বাড়িফেরতের কলম । আমাদের হাতে তৈরি গরম । একটা কি দুটো। কথামলম। কোলের ওপরেই শুয়ে থাকা ক্ষত ... অশ্রু ।

চুষতে চায় সক্কলে
নোলা ছক ছক করে সব্বারি
গর্জালো বুক আর গর্জানো সাইজ দেখলে
কারই বা মাথা ঠিক থাকে
টিপছাপ সইছাপ ট্রাপিজ
ট্রাপিজিওম
সব্বাই চিনতে চায়
ছোঁয়াছানি বাঁচিয়ে চিনতে চায়
একটু লুকিয়ে চুরিয়ে করতে চায়
মধুরেণ
খনি
যেন কেউ জানতে না পারে
যেন কেউ দেখতে না পারে
স্বর্গের দেবতারা নাচ নয়
নাচ নয়
আসলে চুষেছিল নাচময় বেহুলার যোনি

ঈশ্বর করেছি তোমাকে, বন্দেগির ঝিনুক । তোমার চাইতে বেশি জাঁহাপনা কাউকে পেলুম না । এমন একটা উড়ে যাওয়ার দিন বড্ড আকাশ করছে আর শীতের বর্মখানা আনা হয়নি সাথে । প্রতিটি তাজ । মহলের হাতে পড়েছি ধরা । ভালবাসার দপ্তরি হয়ে আছি । সিন্দুকের গোলোক উজাড় যাচ্ছি বৃষ্টির জঙ্গল । আশ্চর্য সব ইমেজারি । রোদের গায়ে চমকাচ্ছে আলোর মটরশুঁটি । তোমাকে ভাবতে ভাবতে ছায়াপথ কেমন প্রকাণ্ড । কত রঙমশলা । আরামকেদারার গা বেয়ে বেয়ে তৈরি হল চিত্রভানু। মেঘের দৈর্ঘ্য ভিজল অঙ্গীকারের সাবানে । এক একটা স্নানপরা। তোমার দু’পাশ ঘিরে কত দেবতার সজলবাস ।এমন মহাজীবন তুমি। তোমার । এত কবিওয়ালা পৃথিবী তুমি পাও কোথা থেকে ?

তাঁবু উঁচু যখন
শরীর তখন বাঘে খায়
শরীরের তখন পানুকাব্য পায়
বউদি বসের বউ
চাচি খালা নাকি নির্ভয়া
অথবা নানদিদি
মাল জমেছে বহুত
বহুদিন ক্যামেরার ভেতর
কাপ্তানি হয়নি যে
বিচির লাবডুব এমন বেড়েছে
বাঁড়াটি এমন তা থই থই তা জুড়েছে
নেচে নেচে আয় মা শ্যামা
তাপসী / মানসী / রত্নদীপা
ভেবে
ভেবে ভেবে
আজ তবে তোরই পান্না
লাল করি

এই যে তুমি এখন যজ্ঞসমস্ত বাঁচছো । আনন্দ আসছে খুব । দরিয়া ঘষে ঘষে আনন্দের সমুদ্র বানাচ্ছি এখন । এইসব ঠুং ঠাং আসলে তো কোন ক্যানভাস নয়। মেধাবী এক চতুষ্কোণ । প্রতিটা কোণের প্রতিভা আলাদা রঙের । সবাই মর্জিমাফিক দোটানায় পৌঁছে যায় একদিন। বুকের খাঁজে খুলে রাখে ছড় ।এই এক আহ্লাদীজ্বর। বিচিত্র ইশারার আনাচ কানাচ। রঙদল ।আসলে কি জানো আমরা কেউ-ই নই। এমনকি ঘুণাক্ষর রঙের ক্যানভাস। সেও কেউ নয় আমাদের। দূরক্যাম্পচেয়ারে বসে মহাকাল এখন পান করছে চা । একমাত্র সে জানে । কোথায় কার শেষনাগটি ফণাসহিত।

জ্বলে ওঠার পর
আর
নিভে যাবার আগে
করাকরি
পায় ফ্যাদা পায়
ছোট্ট খাঁচায় ঘষাঘষি
নুনুমুখ দুদুমুখ পায়
রেশমি জিভ
 নোনতা কাবাব পায়
দলাইমলাই আর
খুবখুশির খুদকুশি পায়
দু’ ইঞ্চির কিনারা
দিল্লেগির বাঁক ঘুরে
পাক্কা রাজনীতিবিদের মতো
আমার হাসানরাজা
তোমার রানীসোনার কোলে
দিব্যি সাদাকাজল ঢেলে
ঝমঝমিয়ে
লম্বা ঘুমায়ে যায়

তোমার সঙ্গে দেখা । কোথায় যেন দেখা। কুসুমিত ফেরিশয়ান । ঘুমশিস । দেখা পাওয়া গেল সেই দিব্যমূর্তির । তাকেও প্রেম দেবে ভেবেছিলে ? দিয়েছিলে । আর তোমার উল্লাস শুনে সেই রক্তযুবতী। নরম মশাল সেজেছিল । চোখে চোখে তারা । জ্বলে উঠেছিল চুম্বনধুন । খুব অদ্ভুত । তাই না ? সেই বিন্দু কি আর কখনো পাওয়া যায় ? যাবে ? তুমি তো বিজ্ঞানের । সে সাহিত্য । তুমি নৈশব্দময়। সে কিচিরমিচির । তুমি গন্তব্য । তার কান্না কেবলি ধাঁধা । তোমার সঙ্গীত সম্পূর্ণ । প্রতিটি পৃষ্ঠায় কেবল পরদেশ দাগিয়ে যাও । সে বেজায় রম্য । চারদেওয়ালের রঙ্কিণী । তার গা । গয়নাও । তুমি পরীক্ষামূলক । তার শ্লথ পা ।তুমি মজে যাও মরীচিকায় । ইশারার পংক্তিতে । কোহিনূরে ম’জে থাকো । তার অন্ধকার লাটভাঙা পাটভাঙা। নিয়তিঋষির মতো । সত্তায় জড়ানো । মাটির ঢেলায় ছিঁড়ে যায় বারবার । কিন্তু কিছুতেই মোছে না ।

বিখ্যাত তীর্থ বে
যেখানে ঈশ্বরের বদলে যৌনতন্ত্র
যেখানে মন্ত্রের বিরুদ্ধে বোঁটাযন্ত্র
সেখানে হরিকা দ্বার মানে ফ্রন্টিয়ার
মেইলট্রেনের সারাৎসার
নুনু প্রয়োগ করতে গিয়ে দেখি
বাপরে
লুকোনো কত কত ডিম
বাপ
দিই ঠাপ
ঠাপের পিঠে ঠাপ
এটুকুই থাক
কি দেখেছি ভেতরে তা বলবো না আর
কারাগার হয়ে যাবে ম্যা গো
আগে ট্রায়াল থেকে ফিরি
ট্রাইব্যুনালে শোরগোল তুলি
তারপর করবো পাঠ
গদ্য পদ্য নোয়াম চোমস্কি আর ...
বিনায়কবাদ

পাঠ করি অন্তঃস্থল তোমার । তামাম প্রাণীজগতের জোনাকিবিল। যখন আলো হোলো খুব।সম্ভ্রান্ত হোলো । আমি তোমার হোয়ে তাকেই চেয়েছি । আর বিছিয়ে দিয়েছি বাতাসের চুল আঁকা ধরিত্রী। এক অনন্ত ভিক্ষুক। মন চায় যখন । ম’নে ম’নে আসি । এই যে আসা আমার ... ফিরে ফিরে আসা ... এই যে ফিরে যাওয়া ... ফিরে ফিরে যাওয়াটি তোমার .. বুকের জীবিকাটি উদ্ভাসিত মসজিদ । শব্দহীন গড়নহীন । লয় সুর তাল । শরীরের মায়াছায়া ওড়ানো। সামান্য মন্দির। বাহিরের ভিতরে আমাদের ভুখাচারাটি । রোমাঞ্চের । আর অমলগর্ভের সুফিস্মৃতি ।
এইটি আসল মনাস্ট্রি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

  1. Manabiiboma..... kencho janma theke orangutan porzonta noRe choRe uThbe... vumikompe Mon Bose...

    উত্তরমুছুন
  2. কলমে যা এসেছে তাই কবিতা হয়ে গেছে--উপলব্ধির সোচ্চার--না ঢাকারাখা উচ্চারণ বেশ ভাল লেগেছে--

    উত্তরমুছুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন