অর্ঘ্য দত্ত বক্সী

মায়াজম
0
                       উপকথা বিষয়ক
Image result for maimansingha gitika
পুরাকথা সম্পৃক্ত ধর্মের সঙ্গে। তাতে জাতির আদর্শ ও চরিত্র ব্যক্ত। জাতির সামাজিক সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক যাবতীয় বিষয়ের দিকনির্দেশিকা হল পুরাকথা। কিন্তু রূপকথা তা নয়। রূপকথা গঠিত হয় দৈনন্দিন চাহিদা অনুযায়ী। তাতে কোন ভারি নীতিজ্ঞান বা আদর্শ থাকে না। রূপকথার মূলত দুটি কাজ। এক, মানুষকে আনন্দপ্রদান ও দুই, উপশমকারী ক্ষমতা (healing process)। সারাদিনের কাজের পর গ্রাম্য আদিবাসী মানুষেরা আগুন ধরিয়ে তার চারপাশে বসে কথকের থেকে রূপকথা শুনে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে। আর সারাদিনে মনে যে মানসিক ময়লা জমে তাকে ধুয়ে মুছে ফেলে দেয়। মানসের মধ্যে যে সন্তুলন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা রূপকথার নায়কের সঙ্গে একাত্ম হয়ে অশুভের বিরুদ্ধে বিজয়লাভের মধ্য দিয়ে আবার স্থিতিশীলতা খুঁজে পায়। 
রূপকথার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যে তা জেনেরিক। তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নায়কের জাত ধর্ম বা অন্যান্য ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখিত থাকে না। এমনকি অনেক রূপকথায় নায়কের নাম পর্যন্ত বলা থাকে না। এর ফলে নায়ক বা নায়িকার সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজেই একাত্মতা অনুভব করতে পারে। যেমন কিনা টিনটিনের ক্ষেত্রে তার এমত জনপ্রিয়তার প্রধান কারণগুলির একটি হল যে টিনটিনের ব্যক্তিগত পরিচয়গুলি খুব স্পষ্ট নয়। এই একই সূত্রে পপুলার হিন্দি সিনেমাগুলিতেও শাহরুখ খানের চরিত্রের এমনকি পদবীও থাকে না। তার অর্থনৈতিক অবস্থা বা জাত বর্ণ ইত্যাদি তো নয়ই। 
আর সেই জন্যেই সারা পৃথিবীর রূপকথার মধ্যে একটি তুলনামূলক একাত্মতা লক্ষ্য করা যায় । কারণ মানুষের মধ্যে কিছু সাইকোলজিক্যাল সত্য থাকে যা ধ্রুব। যাকেই বলা যায় কালেক্টিভ আনকনশাস। দীনেশচন্দ্র সেন তার রূপকথা বিষয়ক বইতে দেখিয়েছেন ইউরোপীয় ও বাংলার রূপকথার আশ্চর্য সিমিলারিটি। রূপকথাগুলির ( মূলত রাশিয়ান ) মধ্যে যে সাধারণ সমতা তাকে লক্ষ্য করে ভ্লাদিমির প্রপ তার মহামূল্যবান “Morphology of the Folktale” গ্রন্থটিতে বৈজ্ঞানিক আলোচনার মাধ্যমে কতকগুলি কার্যক্রম এককে রূপকথাকে বিভাজন করে উপাদানগত দিক থেকে তার গঠনকে শ্রেণীবিভাগ করেছেন। এই এককগুলিকে তিনি বলেছেন “function”। এগুলি হল এক একটি ক্রিয়া যা রূপকথার চরিত্রেরা করেন... নাম রূপ বদলে যায় কিন্তু কার্যগুলি একইরকম স্থিতিশীল থেকে যায়।
Functions-গুলি হলঃ 
One of the member of a family absents himself from home [ পরিবারের একজন নিরুদ্দেশ হয়]
An interdiction is addressed to the hero [নায়কের প্রতি নিষেধাজ্ঞা]
The interdiction is violated [নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা ]
The villain makes an attempt at reconnaissance [ খলনায়কের প্রাথমিক নিরীক্ষা ] 
The villain receives information about his victim. [ খলনায়কের অনুসন্ধান সমাপ্ত হওয়া ] 
The villain attempts to deceive his victim in order to take possession of him or of his belongings. [ খলনায়ক নায়ককে বোকা বানিয়ে তার সম্পদ হরণ করে] “ the villain, first of all , assumes a disguise.” … “ imitates a mother’s voice” … বরাবরই হরিণরা নায়কদের বিভ্রান্ত করে বিপথগামী করেছে গোটা বিশ্বের রূপকথায়… 
The villain uses persuasion : “ a beggar seeks alms “ …
The victim submits to deception and thereby unwittingly helps his enemy. [ নায়ক না বুঝেই তার শত্রুর সুবিধা করে দেয়] 
The villain causes harm or injury to a member of a family. [খলনায়ক পরিবারের কারও ক্ষতি করে] 
8A. One member of a family either lacks something or desires to have something. [ নায়ক হয় কিছু হারায় অথবা ফিরে পেতে চায়]
Misfortune or lack is made known. The hero is approached with a request or command , he is allowed to go or is dispatched. [ দুর্ভাগ্যের বিষয়টি সর্বজনবিদিত হয়। নায়ক অনুরুদ্ধ বা আদেশপ্রাপ্ত হয়। নায়ককে কার্যে পাঠানো হয়]
The seeker agrees to or decides upon counteraction. [ অনুসন্ধানকারী ব্যক্তি তার কাজ শুরু করে]
The hero leaves home. [ নায়ক গৃহত্যাগ করে]
“ Now a new character enters the tale: this personage might be termed the donor, or more precisely, the provider”… 
The hero is tested, interrogated, attacked etc. which prepares the way for his receiving either a magical agent or helper. [ নায়ক পরীক্ষিত হয়, আক্রান্ত হয় এবং যার মাধ্যমে তার অলৌকিক সাহায্য লাভ হয়] 
The hero reacts to the actions of the future donor. 
The hero acquires the use of a magical agent. [ নায়ক অলৌকিক শক্তিপ্রাপ্ত হয় ]
The hero is transferred, delivered or led to the whereabouts of an object. [ নায়ক তার আকাঙ্ক্ষিত বস্তুর সন্ধান পায় ] 
“Generally the object of search is located in “ another ” or “ different” kingdom. The kingdom may lie far away horizontally or else very high up or deep down vertically.” 
The hero and villain join in direct combat. [ নায়ক ও খলনায়কের প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু হয়]
The hero is branded. [ নায়ক আহত হয়] 
The villain is defeated. [ খলনায়ক পরাজিত হয়]
The initial misfortune or lack is liquidated. [ প্রাথমিক দুর্ভাগ্যের অবসান হয় ]
The hero returns. [ নায়ক ফিরে আসে ]
The hero is pursued. [ আবার তাড়নের ঘটনা ঘটে] 
Rescue of the hero from pursuit. 
The hero, unrecognized arrives home or in another country. [নায়ক অপরিচিতের মতো অন্যদেশে চলে যায় ] 
A false hero presents unfounded claims. [ নকল নায়ক নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ]
A difficult task is proposed to the hero. [ নায়ককে কঠিন কাজ সমাধা করতে হয় ] 
The task is resolved. [ সেই কাজ সম্পন্ন হয় ]
The hero is recognized. [ আসল নায়ককে সবাই চিনতে পারে ]
The false hero or villain is exposed. [ নকল নায়ককেও সকলে ধরে ফেলে]
The hero is given a new appearance. [ নায়ক নতুন ভূমিকায় আবির্ভূত হয়]
The villain is punished. [ খলনায়ককে শাস্তি দেওয়া হয়]
The hero is married and ascends the throne. [ নায়ক বিবাহ করে রাজসিংহাসনে বসে]।
মোটামুটি এ হল রূপকথার প্রাথমিক স্ট্রাকচারাল অ্যানালিসিস। এর মধ্যে হতে পারে পারমুটেশন ও কম্বিনেশন। 
তবুও রূপকথা বানানো যায় না। তা অবচেতন চলকে চলকে বেরিয়ে আসে। এটি শাশ্বত। মূলত বেদ যেমন কারও দ্বারা রচিত হয়নি তা শাশ্বত। আবার যেমন প্রি-খ্রিষ্টীয় প্যাগান ধর্মাচরণে নেই খ্রিষ্টীয় পাপবাদ ও অতি আচারসর্বস্বতা যা অবচেতনের বিকাশপরিপন্থী। তাই আধুনিক ধর্মগুলি মানুষের অবচেতনের প্রতি সু-ব্যবহার করে না। আর তাই তাদের রূপকথা করে না মানসের উপশম। তবুও আধুনিককালের রূপকথা যেমন হ্যারি পটার এ জাতীয় জনপ্রিয়তা পায় এইকারণেই যে সময় পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন যুগের অবচেতনের জন্য চাই নতুন যুগের উপযোগী নাগরিক রূপকথা। এ বিষয়ে বিস্তারিত আমরা পাই রঁলা বার্থের মিথলজিস গ্রন্থে। সেখানে WWE রেসলিং বা মেনু কার্ড বা থিয়েটার নিয়ে আধুনিক মিথের সেমিওলজিক্যাল আলোচনা করা হয়েছে। তবুও বলতে হয় যে মানুষের মানসে যা শাশ্বত সেই যৌথ অবচেতনই রূপকথার মূল উৎসস্থল। কারণ রূপকথা লিপিবদ্ধ করার প্রক্রিয়ায় আধুনিক সভ্যতার শিক্ষিতদের হস্তক্ষেপে রূপকথা তার প্রাকৃতিক মাটিঘেঁষা ফ্লেবার হারায়। 
রূপকথায় যে সব অলৌকিক ব্যাপারগুলি ঘটে তার সবকিছুরই সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা আমরা পেয়ে যাই কার্ল ইয়ুঙ-এর ভাবনায়। তার বিখ্যাত গ্রন্থ ফোর আর্কিটাইপস-এর অন্তর্গত The phenomenology of the spirit in fairytales শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি রূপকথার উদ্দেশ্য হিসাবে নায়কের যাত্রার মধ্য দিয়ে তার সেলফ অ্যাকচুয়ালাইগেশন প্রক্রিয়ার অন্তর্গত হয়ে আত্মিকতায় উত্তরণকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে রূপকথায় নায়ক/নায়িকা যখন বিপদে পড়ে তখন আত্মাস্বরূপ বৃদ্ধ বা বামন এসে তাকে তার সমাধানের জন্য কিছু সহায়তা করে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিছুর বিনিময়ে। এর মাধ্যমে নায়কের কৃচ্ছ্রসাধন-ক্ষমতাকে চিনে নেওয়া হয়। সেই সাহায্য ভিত্তি করে নায়ক তার কমন সেন্স ও বাস্তব অভিজ্ঞতার সাহায্যে ইভিল স্পিরিটকে পরাজয় করে রাজার অ্যানিমা সত্তা তার কন্যাকে বিবাহ করে। 
রাজসভায় প্রায়ই দেখা যায় রাজা ও তার সভাকাররা বাস্তববিচ্ছিন্ন। আবার বহুক্ষেত্রে দেখা যায় রাজা অসুস্থ। সেখানে চাষীর ছেলে বা তাঁতির ছেলেরা প্রভূত বাস্তব বুদ্ধি ও নতুন যুগের টাটকা বাতাস নিয়ে আসে। প্রথমে তারা মূলত ঘর থেকে পালিয়ে এসে শুরু করে তার বয়ঃসন্ধির threshold অতিক্রম করার প্রক্রিয়া। তারপর তাদের রাজার আদেশে মূলত তিনটি প্রায় অসম্ভব কাজ করতে বেরোতে হয়। এখানেই তারা আত্মাদের কাছ থেকে সাহায্য পায়। যদিও তারা হতে পারে ডার্ক শেডেড ( যেমন কালা আলখাল্লা পরা জাদুকর ) । এদের অনেক ক্ষেত্রে পুত্রের পিতার প্রতি গূঢ়ৈষা ( father complex) বলা যায় যা বেশ জটিল বিষয়। তারপর তার শুরু হয় ব্যক্তি রূপায়ন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমেই সে wisdomসম্পন্ন হয়ে ওঠে ঠেকে শিখতে শিখতে। শেষে তিনবারের প্রচেষ্টায় সে সফল হয় বা শয়তানকে বধ করে রাজকন্যা ও অর্ধেক রাজত্ব পায়। 
এখানে বিবিধ পশু সত্তা তার সাহায্য করে যেমন পাখিদের দেখা যায় বহুরকম শুভ সহায়তা করতে। পাখিদের আত্মার প্রতীকরূপে ভাবা হয়। যেমন সাদা পক্ষীরাজ ঘোড়ারাও অসম্ভব সব কাজ সমাধা করতে সাহায্য করে। আবার ইঁদুর হরিণ বাঘ এরা হয় নেগেটিভ সত্তা যারা বাধাদান করে। কখনো কখনো ড্রাগনদের বা ইউনিকর্ণদের দেখা পাওয়া যায়। এরা সকলেই কালেক্টিভ সাইকোলজিতে এক একটি ধারণা নিয়ে অবস্থান করে। তারই বর্ণনামূলক আখ্যান আমরা পাই এই সব রূপকথায়। আবার ডাইনী বা শয়তানদের থাকে অলৌকিক সব কার্যকলাপ । যেমন তাদের খুব বড় জিভ বা নখ। অথবা তারা রূপ পরিবর্তন করতে পারে। এগুলিকে প্রতিটিকেই রূপক হিসাবে ধরতে হবে। যেমন কীনা স্বপ্নেও আমরা বহু অলৌকিক জিনিষ দেখি। স্বপ্নের ও রূপকথার সাইকো অ্যানালিসিস করার প্রক্রিয়া একই। পার্থক্য শুধু এই যে স্বপ্ন ব্যক্তিগত আর রূপকথা সমষ্টির।
আর একটি বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় হল ৩ সংখ্যাটির আধিক্য রূপকথায় বেশি যেখানে সব মহাকাব্য ও মিথলজিতে ৪ সংখ্যার গুরুত্ব। পুরাকথায় চরম উত্তরণ সাধিত হয়। সে আত্মসম্পূর্ণ। তাই পবিত্রতম ৪ সংখ্যা যা চতুর্ভুজ ও স্বস্তিক চিহ্ন তার প্রকাশ পুরাকথায়। কিন্তু সেই পূর্ণতা রূপকথায় নেই। তাকে আরও অনেক কিছু করে তবে উত্তরণ ঘটাতে হবে। তাই সে towards self actualisation। আর তাই সে ৩-এ সন্নিবিষ্ট। তবে আমাদের আধ্যাত্মবাদে তিন সংখ্যাও অতি পবিত্র ( ত্রি দেব, ত্রি নয়ন, তিন গুণ)। ২ এ যে দ্বান্দবিকতা তার থেকে উত্তরণ ঘটে তিনে। তাই তিন অন্তত একটি স্টেবল ষ্টেট অফ সাইকি।
শেষাবধি বলি যে একটি রূপকথার শেষ আসলে আরেক রূপকথার শুরু। তাই রূপকথার শয়তান যেমন কখনো মরে না তেমন নায়কও সারাজীবন ধরেই তার আত্মিক উত্তরণের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যায়। সভ্যতা স্থিতাবস্থায় থাকে। রাম ও রাবণ দুজনেই একসাথে বেঁচে থাকে। 
রামায়ণকেই আমার আদর্শ রূপকথা বলে মনে হয়। রামায়ণ ও রূপকথার জিনে আছে এমন এক জিনিষ যার আধুনিক সাইকোলজিক্যাল নাম projectiveness। যা তুমি তোমার মন তাকে তুমি বহির্জগতে অভিক্ষেপণ করছ আর তার পর ভাবছো বাইরেটা আসলে নিজেই অমন। বর্তমানে রস্যাক TAT ইত্যাদি সাইকোলজিক্যাল টেস্ট করা হয় যেখানে একটি ছবি যার সেই অর্থে নির্দিষ্ট কোন মানে নেই তা দেখানো হয় এবং ক্লায়েণ্টের মানসিকতা যেমন সে সেই ছবি গুলোর মধ্যে তাই দেখতে পায়। একই ছবি কেউ হয়তো বলবে ভাল্লুকের চামড়া ছাড়ানো কেউ বলবে চ্যাপলিনের বুট!! তার মধ্যে যা ও যে যে কমপ্লেক্স জমে আছে রোগ হিসাবে ... এই vague abstract generic ছবিগুলোর স্টিমুলি তার মনের defence mechanism অতিক্রম করে গল্‌ গল্‌ করে তখন বেড়িয়ে আসে। তাতে তার ক্যাথারসিস হয়ে মানসিক টেনশন কমে। তাকে হিল করে। আর সেই রেসপন্স বিচার করে একজন মানুষের পার্সোনালিটি ও তার মানসিক রোগের সন্ধান পাওয়া যায় তারই অগোচরে। একদম এই রকম আমার মনে হয় রূপকথাগুলিকে। তাদের বিশ্লেষণ করে তাই একটি জাতির মনস্তত্ব জানতে পারা যায়। এক এক দেশ জাতি এক এক ভূগোল জলবায়ু এক এক রকমের নদী সাগর মালভূমি বা দ্বীপ বা কৃষিক্ষেত্র...সবরকম ভাষা থেকে অবলুপ্ত প্রায় উপজাতি ভাষারা সবার মানসে তাই একটি রূপকথার নায়ক শয়তান ও রা






পেশায় শিক্ষক, শিক্ষায় ইঞ্জিনিয়ার ও সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর পাঠরত। পুর্ব প্রকাশিত গ্রন্থ আটটি। আগ্রহ রাখেন বিনয় ঋত্বিক ইয়ুঙ সহ রামায়ণ ও cognitive scienceএর ষড় শাখায়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)