লিঙ্গভস্মের পুরনো পতঙ্গ...
নেশা এক প্রকার আতর। নেশা কমলহীরেও বটে। নেশা প্রিয় বাংলাভাষা। ভার্চুয়াল হাসির শব্দ, কান্নার প্রেরণা। নেশা চিরকিশোরী পরীদের বাড়ি। নেশার সাথে আমাদের কথা হয় প্রায়। ফুলেশ্বরি তৃষ্ণার হট্ট-নিনাদ আমাদের বাঁশী করে প্রায়ই। চিরন্তন মন-বকুলের কেয়াপাতায় জ্বলে ওঠে জীবন্ত ঝর্ণা। হৃদিকলম। নৃত্যপরায়ণা নেশার আলোয় কেটে যায় রাত, দিন কাটে চন্দ্রাবতীর ঝাপসায়।
নেশার প্রবল্যে ঘুম হয়না ঠিক মতো। স্বপ্ন শুধু। চইপাখির চশমা জুড়ে। নেশা কি আমাদের হতাশায় ডোবায়? নেশা আসলে বুঝি এক তুমুল দিঘী। মানুষ নামের পুকুরকে কেবলি খণ্ডকালীন খনিজ অপরাধবোধের কবিতর দিয়ে ভরায়। নেশা হতে পারে মাদকের। নেশা সিগারের...
নেশা ভালবাসা-ছোপছোপ হরিণের। নেশা ধর্ষণের। নেশা আত্মহত্যার ঢেউ খেলানো চুলের। নেশা ফেসবুক নামক সুরমার। নেশা আবার চুপিচুপি শিকারধরার ডাকনামও হতে পারে ..
নেশার প্রভাবেই আমরা জ্বেলে দিই অপার সবুজবাতির বাংলো। ফাঁদ পাতি ক্রেয়নের দুর্গে। মুখপুস্তিকার তিস্তানদী। অরূপ অপরূপের রহস্যে ঘেরা লয়-বিলয়ের নদীপথ। আমাদের হৃদয়ে ষ্টীমারের জ্যোতি। নেশাই আমাদের পথ দ্যাখায়। স্পষ্ট দেখিয়ে দেয় ... বিস্তর প্রেম। মুখর অগ্নুতপাত... মেঘাস্তের জাল ছড়িয়ে দিই চারদিকে। সেই নেশা যে কি ভয়ংকর তাড়িত করে আমাদের, চোখবন্ধ অবকাশ। যেন পঁচিশতলা উচু বারান্দা বিভোর টপকে আমাকের সিঁড়িকে দিচ্ছে ওঠানামার খানসামা ...
নেশা বলে, দাও ঝাঁপ, ঝাঁপ দাও আমার ভেতরে, হে চূর্ণরমণী, আমার রমণকে রমণ করো। প্রেমের কোন বয়েস নেই। মৃত্যুর শোণিতে দ্যাখো, অনুভব করো কি চূড়ান্ত প্লাবন, বিশ্বাস করো আমার বিশ্বাসকে ... কথা বলো আমার সাথে। কথা দাও আমার কথাগুলিকে নিভিয়ে দেবে না তোমার মোমবাতি। আমি যে তোমার অমোঘ দেশলাইয়ের আনন্দ-আগুন, আমাকে দাও সেঁকতাপ। আমার জড়োয়ায় তৈরি জরিকাজের নেকলেস, তাকে জড়াও তোমার কণ্ঠের আলাদিনে।
অভিতাপের এ নেশা, মাদকের চাইতেও বেশি ধুরন্ধর। মদিরার চাইতেও বেশি ধূমপান, সাম্পানের চাইতে বেশি তুমুল সর্পবিভ্রম। কেউ আমার প্রেমে মজে আছে, আমাকেই শুধু চাইতে চাইতে বাসতে বাসতে সে হয়ে পড়ছে তীব্র হ্যালোজেন-বন্দিত ... ভাবতেই কেমন নেশারু হয়ে উঠছে রঙ্গিলা এ-মন, বাতানুকূল আবৃত পানপাতার সদাকুশলরঞ্জনী। এই অবিরত ফেটে যাওয়া কামনা আর বাসনার বুদবুদ, মুখ তুল্লেই যেন দেখতে পাই বাসুকিফনার শ্যামল স্থায়ীরূপ...
নেশাজাত আমি, এই নেশা-সমস্ত মুহূর্তে চাইছি... মদির পতঙ্গের মত সে জড়াক আমাকে, আমার শরীরের প্রতিটি করিডরে চলাচল দিক ভার্চুয়াল জিভ। দানা দানা অমৃত আর বিষ, আরও চরমস্তরে জারিত হোক সেক্সচ্যাটের সাদা-পদার্থ।, সত্যি করে বল তো, এই নেশা কি চরমতর নেশাজনিত পাইপগান নয়? এই নেশা বুঝি পর্নোগ্রাফিরগ্রাফির গ্রাফাইট নয়?
নেশা মিছিলের হতে পারে। নেশা রাজনীতির হতে পারে। নেশা হতে পারে আত্মরচনার। মুখোশপরাও কিন্তু এক ধরণের নেশাই। কাউকে বুঝতে দিচ্ছিনা, আমি আসলে এক প্রবল জুডোবিদ, ক্যারাটে নির্মিত। সামনে দেখাচ্ছি, আমি এক সামান্য লুডো, এখনো ছক্কা আর পাঞ্জার কুচকাওয়াজ শিখে উঠতে পারিনি। দেখে মনে হচ্ছে আমি বুঝি এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রেমিক, ভালবাসা ছাড়া আমি আর দ্বিতীয় কোন নির্মাণ শিখিনি। অথচ আমার মনের শিরদাঁড়ায়, আমার চোখের বারোদুয়ারের সবার আড়ালে তৈরি হচ্ছে তুমুল চক্রান্ত, হিংসার হিসহিস আর ছোবলের ভাস্কোদাগামা।
এক অলীক রাজকাহিনী তৈরি করে দিচ্ছি। অলৌকিক নৌকোর এস এম এস ছড়িয়ে দিচ্ছি লাগাতার। তটিনীর তালেবানি-প্রহরে। প্রাজাপতির ডানায় মেখে দিচ্ছি রোম্যান্টিক জলসার পরাগ। রঙিনদুঃখের নাগরদোলায় চড়িয়ে প্রতিপক্ষকে বুঝিয়ে দিচ্ছি সততার জলতল। এ একপ্রকার নেশার রেললাইন। আমার ঠোঁটে বাজছে প্ল্যাটফর্ম। ওভারব্রিজ। আমি জানি না আমি কোনদিকে যাবো। একমাত্র আমার মুখোশই জানে কোথায় আর কতদূর তার নিজস্ব ডেসটিনেশন।
মুখোশ-নেশার বুকে এঁটে থাকে অহংকারী মোহিনী। মুখ শুদ্ধু ভাসিয়ে যায় অবাস্তব পরাজগতের জাগতিক কাঠামো-হীনতায়। আকর্ষণ ধীরে ধীরে প্রশস্ত নয়। নিরুদ্দশের পথে পা বাড়ায় নেশার রাজহাঁস। উদগ্রীব সৈকতে গাঁথা হয় বিনিসুতোর রমনভঙ্গিমা। কে কার পরমাণুর বার্তা, কে কাহার হৃদয়দীনতার কালোপাহাড়। বিষাদ। নেশা ঘুচে গেলে নতুনরূপে আবার ফিরে আসে নেশার ইউরেকা।
সকল নেশাই কিন্তু বিষাক্ত নয়, কোনো নেশার আভা বিষের জ্যোতিকেও ছাড়িয়ে যায়। কোনো নেশা আবার অঙ্কুরিত উদ্ভিজ, আরুনির রুপালী-বৃত্ত। নেশার ফাঁদে পা দেবো কি দেবো না, ভাবতে ভাবতেই, নেশার সেতুব্রহ্ম কখন যে আমাদের নিয়ে যায় নেশা-ঈশ্বরের কদম-ঘ্রাণে... আমরা নেশার কামদম্ভ মোচনের রসে শিখাময় হই, নেশাকে মনে হয় অলৌকিক দেবদূত। অন্যমাত্রার তারাতল। নভোতল। বিহংগপাখির গুহাশীর্ষ...
নেশার অজগর স্পষ্ট টেনে নিয়েছে আমাদের অস্পষ্ট পাহারচুড়া। নেশার প্রতিটি পল অঘ্রাণের অরুণ জোয়ার। শতাব্দীর আরকে জারিত নেশাদার পৃথিবী আমাদের শিখিয়ে দিয়েছে ধড়াচুড়োহীন জীবন আসলে এক চুষিকাঠি, প্রতিশ্রুতির ধোঁয়ারোদ ... চিরজীবী রুদ্রাক্ষের অন্তর্জলী যাত্রা... ভালো ঘুম না হলে রাতবিরেতে নেশাকেই ডেকে বলি, হে দিলদার...এভাবে ডাকছ কেন? সরে যাও একটু ... সরে গিয়ে মুছে দিয়ে যাও অপ্রাকৃত লিঙ্গভস্মের পুরনো পতঙ্গ...
আমাকে একটু ঘুমোতে দাও ... নেশার বাকচিহ্ন, নেশার তেজোময় বিভ্রম ঘুচিয়ে দিয়ে
শ্বেত কেতু আর সমুদ্রের ঊষাগর্ভে এবার চিরকালীন ছায়াচিত্রের কাঁথা জড়িয়ে একটু ঘুমোই ...
nesha na dhoriye e meye charbe na
উত্তরমুছুনe nesatur tai e dorojay
love from ratnodeepa
মুছুনআমি বারংবার নেশাগ্রস্ত হতে চাই। তোমার নেশাময় বিশ্লেষণ আমায় আরো নেশাময় হতে আহ্বান করছে দি। তুমি এত্তো কিউট করে কেমনে বলো? সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ তুমি।
উত্তরমুছুনতোমার লেখাতেও নেশা পাই দি...ষোল আনা নেশা।
উত্তরমুছুন