মোনালি - মায়াজম

Breaking

১৭ এপ্রি, ২০২০

মোনালি

ইজম-সার্কাসটিক



"বুদ্ধের শিষ্যের গিটার থেকে দুপুরে পাশে এসে বসেন সেই ম্যাজিক উওম্যান আজও। কখনও ছিন্নমস্তা কখনও চপলা বার টেন্ডার সেজে এগিয়ে দেন গভীর ব্লাডি মেরি অথবা রাম অ্যান্ড কোক।"
....
হ)
কাল যেখানে গেছিলাম, সে জায়গার নাম দিকশূন্যপুর। নামটা ক্লিশে, জায়গাটা নয়। দূর না অথচ খুব কাছেও না। এমনও নয়, যে চাইলেই যাওয়া যায়। ভুল করে কখনো যদি হ্যারি পটার দেখে থাকো..... ওই ভগ্নাংশ প্ল্যাটফর্মের মতো। মাগলস্ দের জন্য ওয়ালটা আছে কিন্তু সেটা উইজার্ডদের কাছে টানেল হয়ে যায়..... যেখান থেকে একটা সম্পূর্ণ আলাদা সার্কাস শুরু। সেখানে সূর্যের রঙ ক্যাটকেটে সবুজ হতে পারে, তারারা গোলাপী আর ঘাসেরা সাদা..... বুঝলে নাহ! হ্যারি পটার পড়ো। সিরিজ নয়, শুধু প্রথম বইটার প্রথম কিছু পাতা। নইলে কিলো কিলো ভার অসহ্য হয়ে উঠবে আর, আর সব উইজার্ড মাগলস হয়ে যাবে। পৃথিবীতে বিস্মিত হবার মত কিস্যু থাকবে না। দু চারটে ফুল হাতে পেলে মনে হবে, আবার এসব কেন! অথচ তুমি জানো, এখানে দুই পরত আলাদা আলাদা খেলার মধ্যে এক পৃথিবী ম্যাজিক লুকিয়ে থাকে।
য)
এবার, যেখানে আছো, সেটাকে একটা কিউবিকল ধরে নাও। আকাশ আর আলোর বাইরে খনিজ বাঙ্কারে এক জমা জলের কুয়ো। ব্যঙ্গমা ব্যঙ্গমী, দুই প্রোটাগনিস্ট। এক ডিম থেকে অন্য ডিমে পা রাখতে রাখতে, ব্যালেন্স করতে করতে বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, আর পন্ডস মির‍্যাকল ঘটানোর চেষ্টায় উইকিপিডিয়া পড়ে জেনে নিচ্ছে, আমাজনের নীল ভেষজের নাম, বিজ্ঞাপিত। বাকিটা কেমিক্যাল। তবু বাংলা বারবার চেষ্টা করেছিল, সফল খেলা দ্যাখানোর। চিলেকোঠা থেকে পালক ও তালপাতার সেপাইয়ের বেমক্কা চাল, লাল মেঝে আর দেওয়ালের মাঝের সমুদ্রতট... ডায়েরি বই রেকর্ড আলমারি দেরাজ আয়না ছবিঘর ক্যাপসুলে নিয়ে অজ্ঞাতবাসে যাবার.... যাতে ইচ্ছে হলেই ঢাকনা খুলে উড়িয়ে দেওয়া যায় দৃশ্যগুলো....ওপরের ট্রাপিজে, আবার আপদকালীন পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে নেওয়া। ঘননীল লাটাই থেকে ডানা মেলে সুতোও উড়েছিল বহুদূর,অলীক ঘুড়ি হতে। গভীর ষড়যন্ত্র চলছিল, লাটাই ছেড়ে, তাঁবু ছেড়ে দেবার একেবারে যখন, ঠিক তখনই শয়তান বললেন, "এইবার নীচে নামো। সকলের ভালোর জন্য।"
ব)
নো অ্যাডমিশনের অদৃশ্য বোর্ড লাগানো লাল ঝালরের পর্দা ঘেরা বিস্ময়দরজা থেকে রিং অবদি যে রাস্তাটা আছে, পেঁজা তুলোর মত বা যে রাস্তাটা আসলে আদৌ নেই... অথবা খানিক আবছা হয়ে আছে, দুদিকে ভাঙা সিল্যুয়েট ও উৎসুক দর্শক নিয়ে.... ওই প্রায় নেই, হয়ত আছে'র মধ্যে নিজেকে ছেড়ে রেখেছ আর ওয়াচারের চেয়ার থেকে দেখছ খুঁটিয়ে। আমার ফোকাল পয়েন্ট তোমার আর তোমার ফোকাস তার থেকে আলাদা হওয়ায় সুবিধে, স্থির সময়ের তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে তিনজনে তিনটে আলাদা গল্প দেখতে পাচ্ছি । যখন রাস্তাটা ভাঙছে অথচ চলছে। আর বিষ অজস্র, ভয়সম্ভব করে তুলছে প্রাক্তন টেলিফোন। দরজা, বাঙ্কার পেরিয়ে ঝিমোনো হলুদ আলোয় দেখা পাওয়া যুধিষ্ঠির, জ্বরো বাঘ ও কাকাতুয়া সমেত। শয়তান বললেন, " ঘোরকলি। তোমার রাস্তা ভুল। সত্য অপরাধে বিষাক্ত মেটালিক মেঘ। ঝুঁকে দ্যাখো, এইখানে বৃষ্টির রঙ সেপিয়া। গন্ধে লোহার আঁশলামি। " কিন্তু মুঠোভরতি তারা নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছিল অন্যজন, বরপ্রদানের জন্য। শুধু ফ্রান্সের গঙ্গা আর ভারতের গঙ্গার পলি, পলিপ্যাকের না দেখা হওয়া পড়ে যাওয়া জোকারকথার মতো ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় ছড়ি পড়ল না। দেখা হল না। বেদম না দেখার অন্ধকারে তবু আলোর অল্পঘন সাদা মিশে।
র)
জানতে তো সবটাই সাজানো। সেরকম মনেই হচ্ছিল অথচ মানুষ ঝরে পড়ছিল টুপটুপ করে, মুখে নিয়ে রুদ্রপলাশ।রঙিন বসন্তের টিউন সঙ্গীন মুহূর্তে। ক্ষয়ের মুখে রক্তনদি। পাথর, চাবুক, শব্দবাজি... মর্মে ঢোকেনি বহুদিন। তাই ঘড়ির কাঁটাগুলো বারবার ফেব্রুয়ারির দুপুর তিনটের ঘরে আটকে, থেকে থেকে টিকটিক করে চলেছে.... আবার এবং আবার। বালতি ভরতি জনগণমন রঙ গুলে.... কতবার ফেরা হল অথচ রুচি বদলালো না। খান্ডব জ্বলছে স্যাংচুয়ারি থেকে স্যাংচুয়ারির রিং ছারখার করে। ধোঁয়া ভেসে এলে মাস্ক পড়ে নিচ্ছ। একেবারেই খেয়াল করতে পারছ না, জুতোর তলায় ঠিক কতগুলো পিঁপড়ে কাঁটাতার স্পৃহা অপূর্ণ রেখে পিষে মরল! সেট'এ বানানো মন্দির থেকে মসজিদের দিকে যে শুনশান ফাঁকা রাস্তাটা গিয়েছে, ঝালর দেওয়া টুপি আর রোদ চশমায় সে, টেন্ট ছেড়ে সমুদ্রমুখী, ছুটি কাটাতে। বালি ও ঘড়ির মুখোমুখি দেখা হয় বারবার। বারবার চমক। যেন পারশ পাওয়া গেছে, এবার দিলখুশ শোয়ের টিকিট কেটে নিলেই হলো। যদিও সবটা ধাপে ধাপে নীচে নেমে যাওয়া স্টেপওয়েল। মন্বন্তরের শুখা। জল আলো হাওয়ার ভুল। অন্ধকারে দিকভ্রান্ত ঢিল।
ল)
বেদম খালি মেক আপ রুমে অপর্যাপ্ত অ্যাঙ্গেলের ছড়াছড়ি । ছাদ ফুঁড়ে অপার্থিব বৃষ্টি। চমকের বিদ্যুতে ভয় ভাঙার গান। জানলার মতো ফাঁক ফোকরগুলোয় মূহুর্তে মূহুর্তে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে আইভি লতা। সবকটা বেগুনী কাপড়ে মোড়া গরাদহীন শূন্যতার বাইরে লতাগুল্ম পেরিয়ে কমলা বেসবল রঙের সূর্য, আরো দূরে ত্রিভঙ্গ হতে পারে রামধনু । আতসকাচের ঘনত্বের গড়বড়ে, গোল বা আধাবৃত্ত হয়ে ওঠা হচ্ছে না কিছুতেই, নিটোল। কোঁকড়ানো আলো খুঁজে বেড়াচ্ছে ধুলো। এঘর ওঘর।অস্থির! এই ছিল ওরা। লুপ পেরোতেই কেউ নেই। কিছুক্ষণ আগে রঙ শব্দ গন্ধ টের পাওয়া যাচ্ছিল সকলের। এক এক নামের ইকো এক এক দেওয়াল থেকে অন্য অন্য দেওয়ালে ফিরে ফিরে .... এখন তোমার আমার পয়েন্ট থেকে ওরা পালাচ্ছে। দুর্বল পা জোট বাঁধছে । দরাজ গান। আর কী। এবার একঘেঁয়েমির গলা টিপে দাও বা শট ডেড। তারপর অ্যালকোহলে ধুয়ে নিলেই হল।
.....
ফেরা
ততক্ষণে ট্রেন এসে যাবে। স্টেশনও পূর্ণ সংখ্যার।পকেট থেকে রুমাল বের করবে। এক কোণে ভি'এর ভেতর পেটমোটা আই' আকারের রহস্যময় আমোদিত ফুল। প্রেমছাপ রোদ্দুরে দেবার আগের আধভেজা প্রিন্ট। সে গন্ধে, মহুয়ায় পাওয়া ভালুকের সাজে সব ভুলে হাঁপ ছাড়বে! কিছু দূরে পাপহীন ন্যুড হোয়াইট মার্বেল । শুনশান মেলা গ্রাউন্ডকে ঠিক পেটের মাঝে রেখে, মা ও ছেলে। তাদের ঠেকে যাওয়া ফ্যাটফ্যাটে সাদা কড়ে আঙুলের ডগায় ভেজা প্রিন্ট শুকোতে দিয়ে নিশ্চিন্ত, তুমি। টি আরপি বাড়তে পারে আর, শয়তান বা ভগবান কারোরই তাড়া নেই। ফিরতি ট্রেনের স্পীডের সাথে পাল্লা দিয়ে বড়র ভেতরে মাঝারির ভেতরে ছোটর ভেতরে ছোট হতে থাকা স্কোয়ারগুলোকে পেরিয়ে যেতে যেতে সহজ ঘাস, মাঠ নদি পাহাড় গিলে নিয়ে আর একটু ওপরে উড়তে উড়তে বলতে পারবে, " খুব বেঁচে গেছি।" আমার তোমার ও তার ওয়াইড মোডে তখন আলফা বিটা গামা কণাদের স্পীডে এক দুই ও তিন নম্বর অন্ধকার নেমে আসছে ব্লাডি মেরি, রাম ও কোকের গভীরতা নিয়ে

৬টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র