সম্পাদকীয়
খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে
খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে
সময়কে শূন্য ধরে আর খানিকটা এগোও। এই তো বেশ হয়েছে,তুমি মহাশূন্য নামক বিগ জিরোর মহাহোলে পৌঁছে যেতে পেরেছো। এই তো তুমি পারছ। চাল-ডালের হিসাব, লকডাউন ও মাস মাইনের কস্ট কাটিং মুলতুবি রেখে এই তো তুমি অলৌকিক শব্দযানে চড়ে পৌঁছে যেতে পারছ সামুদ্রিক পাখিদের সঙ্গম বলয়ে , এই তো তুমি পৌঁছে যেতে পারছ যুবতী চুমকি বৌদি নাকি ঝিলক সেনের দুরন্ত নাভিগর্জনে বা ভিজে কাপড়ে উথলানো গিরিচূড়ায়। বাঁধানো খাতায় অনুভূতি টুকে নিলেই আস্ত কবিতা জন্ম নেবে তোমার পুরুষকুন্ডের দাহ্যকলা নিয়ে। গৃহিণীর গ্যাসের ব্যামো বা অফিসের বড়বাবুর হুঙ্কার ,পরোয়া নেহী কুছ । ধীরে ধীরে খুলে যাবে পৃথিবীর গহীন রঙের পরত।প্রেমিকা মেয়েটির ব্লাউজের ভিতর রঙের কারখানা আছে ভেবে ঠোঁট রাখতেই পারো দ্রাক্ষাকুঞ্জে।আসলে তুমি সেই ক্লাউন ,ব্যালেন্সের খেলা শিখতে শিখতে বউয়ের ভাতঘুমের মধ্যে প্রজাপতির স্বপ্ন বুনে দিলেই কেল্লাফতে অথবা অফিসের বড় বাবুর রাজসিক হুঙ্কারের মধ্যে তুমি ক্ষুদ্র থেকে অতি ক্ষুদ্র হয়ে পায়ে পায়ে ম্যাও ডাক রপ্ত করতে পারলেই আগুনের তিনবল নিয়ে খেলতে শেখা সেই মহান প্রাণীটি তুমিই।
প্রেমের খেলা কে খেলিতে পারে!
ভালবাসতে জানলে সামনের মূর্তি তেল রঙ মাখা কুমোরটুলির প্রতিমা না হলেও চলে ! তখন প্রতিটি নারী মুখেই ফুটে ওঠে অলৌকিক দেবীর সাক্ষর । নারীর চোখে নগণ্য জংলীও প্রকৃত পুরুষ হয়ে ওঠেন।আর তখন প্রত্যাশিত পুরুষ বুকে রূপালী নক্ষত্র বিছিয়ে দিতে দিতে বলেন কাঙ্ক্ষিত দেব কুমার !ভালবাসতে শেখ ,ভালবাসায় থাকলে চিড়িয়াঘরে প্রিয়ার নগ্ন রূপে ওড়না জড়িয়ে দেওয়া যায় , সিঁথিতে ভরিয়ে দেওয়া যায় মাটিরঙের রূপটানে। মাটির সঙ্গে পায়ের সম্পর্ক থাকলে প্রতিটি পুরুষ চোখে নারী হয়ে ওঠে পরিণত চাষের ভূমি। তখন যা -কিছু ফসল ফলিয়ে নেওয়া যায় ...ভালবাসতে পারলে,চোখের মণিতে একাধিক স্বর্গ-দ্বার খোলে,ভালবাসায় সমর্পণ শেখ,ভালবাসাকে ঈশ্বরের পাশে রাখ দেখবে অমরাবতী নেমে এসেছে ভাঙা টিনের চালে ঘন বর্ষায়
দুরন্ত ঘূর্ণি এই লেগেছে পাক
ভালবাসার গল্প বলতে বলতে গেলে কেন যে স্বপ্নের ভিতর ঝুপ করে মেজদা নেমে আসেন,কে জানে! মেজদার সেই বালকদৃষ্টি , অবাক হয়ে আনন্দমেলার মাঠে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলেছিলো ,আনন্দকে কখনই হারিয়ে যেতে দিতে নেই মৌলিক কান্নার কাছে। সেই মেজদাই যাবতীয় গচ্ছিত মৌলিক কান্না বুকে নিয়ে আনন্দের মধ্যে হারিয়ে গেলো এক ঝিমানো দুপুর বেলা। ফিরে এস দাদা, ডাকের মধ্যে দিয়ে যতবার বলতে চেয়েছি দোদুল্যমান ট্রাপিজিয়াম তোমার জন্য নয় , ততবারই আমার রাগাক্রান্ত বাবা বলেছেন ,সে ফিরে আসুক একবার , হাত পা ভেঙ্গেই দেবো। বাবাকে আর সে যাত্রায় কষ্ট করে হাত পা ভাঙতে হয়নি। দাদা ফিরেছিলো পৃথিবীর সমগ্র পাগলামি তার ঝুলিতে নিয়ে।আমার ১৪বছরের মেজদাদার সাথে আমিও সেবার দেখেছিলুম , সার্কাস তাঁবুর আলোয় ঝলমল পোশাকের মোমমেয়েরা কেমন যেন স্বর্গের কাছাকাছি মেঘের মধ্যে ভেসে শরীরটাকে ছুঁড়ে দেন পৃথিবীর শেষ মাধ্যাকর্ষণে । যতটা ধারণ করে চোখ ততটা ধারণ করে মন! এক চোখ বিস্ময় নিয়ে মোহঘোরের মধ্যে আমরা ফিরেছিলাম যেযার ঘরে। মোহ বুঝি ভঙ্গ হবার জন্যই! আমার মোহ ধুয়েমুছে তকতকে রোদ্দুর হয়ে শুকতে দিলাম আমসত্ত্বের সাথে ।কিন্তু দাদার! সে যে মোহবিলাসী সমুদ্দুর। এক অলৌকিক দুপুরের মধ্যে দিয়ে দাদা সার্কাস তাঁবুর সাথে হারিয়ে গেলো। খবর আসতে থাকলো দাদাকে নাকি বর্ধমানের মেলায় দেখা গেছে বাঘের হা মুখের মধ্যে নিজের মাথা গলিয়ে জীবন্ত বেড়িয়ে আসতে। কখনো বা খবর আসতো , আসানসোলের ঝকমকে আলোর উর্দ্ধে দাড়িয়ে ছুঁড়ে দিতে পৃথিবীর দিকে নিজের পুরনো পরিচয়হীন অস্তিত্ব.আরও আরও খবর আসতো সে আগুনের চিতায় দাঁড়িয়ে রপ্ত করেছে আগুন গিলে খাবার যাবতীয় কৌশল। বাবা কখনোই খোঁজার চেষ্টা করেনি তাকে। যা হারিয়ে যায় তাকে খুঁজে পাওয়া বড়ই সরল,কিন্তু যা হারিয়ে থাকতে চায়!মানুষের কি সাধ্য খুঁজে বের করে তাকে! পরের সাত বছর আর কোন খবর নেই। এক কাকজাগা ভোরে লক্ষ্মীবিলের ধারে খুঁজে পাওয়া গেলো মানসিক ভারসাম্যহীন এক না-মানুষ। ছেঁড়াখোঁড়া জামায় বাঁ পাঁজরের জড়ুল দেখে আমার দুঃখভোগী মা আবিষ্কার করেছিলেন এই আমাদের হারিয়ে যাওয়া ছন্নছাড়া গর্ভ।
খেলাঘর বাঁধতে চেয়েছি
...তারপর একসময় এসে দাঁড়াতেই হয় দুই খুঁটির মাথায় বাঁধা দড়ির উপর জীবনে।কেউ যেন হাতে অদৃশ্য একটা বাঁশের লাঠি লটকে দিয়ে বলে 'নে ব্যাটা এই বেলা শিখে নে ব্যালেন্স খেরোখাতা ,চলা এবং থেমে যাওয়ার, লড়াই অথবা পরিত্রাণের।' ডুগডুগডুগডুগ মাদারির খেল,হনুমানের মতো শরীর চুলকে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে 'মজা' শব্দকে লিখে দিতে পারলেই সামনে দাঁড়ানো দর্শকের হাত তালির রেওয়াজ ছুটে যাবে মঞ্চ থেকে মঞ্চে।আশেপাশে সাজিয়ে গুজিয়ে রাখা প্রেম-খিদে-উত্তাপ কখন যে ক্লাউন সাজিয়ে দিয়ে লুটেপুটে খাবে সময়, জানার আগেই হ্যাশট্যাগ ছেপে যাবে পিঠে।গিরিজাপতি রোজ খেলা দেখায়। মরণকূপের মধ্যে দুচাকার বাহনটিও বুঝি আপনার হয় না।ভয়ংকর গতি ব্যবধানে সাঁইসাঁই ছোটা বাতাস প্রাণ ভরে নিতে নিতে সে দেখতে পায় খোকাখুকু নামতার খাতায় দিব্য ভবিষ্যৎ লিখতে শিখে যাচ্ছে।টুনটুনি এসে মুখ ডুবিয়ে ধান খেয়ে যাচ্ছে তার চালাঘরের একচিলতে উঠোনে।অফিসপাড়ার বাবুরা কম্পিউটার ঠুকতে ঠুকতে প্রমোশন পাওয়া ও না পাওয়া ঝুলায় ঝুলে একদিন দু পা তোলা জন্তুর মতো নাক বল ধরে বলেন,সার্কাস সার্কাস বুঝেছ! জীবন আসলে সার্কাস।
সার্কাস। জীবন যখন সার্কাস অথবা সার্কাসের জীবন। হ্যাঁ বন্ধুরা এবারের মায়াজম অনলাইনের থিম "সার্কাস"...
এই যে চারিদিকে ভুখাশুখা মানুষের এত হাহাকার ,মানুষ তার শেষ সঞ্চয়টুকু লাগিয়ে শিশুর মুখে তুলে দিচ্ছেন একবেলার আহার আর তারমধ্যে আমি বসেছি কাব্যি করতে।হা হা এও তো বেশ সার্কাস।নয় কি! আসলে ভয়। আসলে দায়িত্ববোধও বটে।এই যে এত মানুষ শ্রমের ফসল, ভালবাসার ফসল ফলিয়ে তুলে দিয়েছেন মায়াজমের ঘরে,সে সব লেখা প্রকাশ না করেই যদি এই ভয়ঙ্কর সময়ের থাবার হারিয়ে যায় মায়াজম!
এই যে চারিদিকে ভুখাশুখা মানুষের এত হাহাকার ,মানুষ তার শেষ সঞ্চয়টুকু লাগিয়ে শিশুর মুখে তুলে দিচ্ছেন একবেলার আহার আর তারমধ্যে আমি বসেছি কাব্যি করতে।হা হা এও তো বেশ সার্কাস।নয় কি! আসলে ভয়। আসলে দায়িত্ববোধও বটে।এই যে এত মানুষ শ্রমের ফসল, ভালবাসার ফসল ফলিয়ে তুলে দিয়েছেন মায়াজমের ঘরে,সে সব লেখা প্রকাশ না করেই যদি এই ভয়ঙ্কর সময়ের থাবার হারিয়ে যায় মায়াজম!
না মায়াজম হারিয়ে যেতে আসেনি।মায়াজম জয় করতে এসেছে, সব মহাকালের তীব্রতাকে পরাজিত করে শুধুমাত্র জয় করতে চেয়েছে ভালবাসা।
এবার একটু ভিন্ন স্বাদ নিয়ে হাজির হয়েছে মায়াজম।পড়ে দেখুন বন্ধুরা আশাকরি ভাল লাগবে।
Darun
উত্তরমুছুনNice very Nice
উত্তরমুছুন