রত্নদীপা দে ঘোষ - মায়াজম

Breaking

২০ জুন, ২০২০

রত্নদীপা দে ঘোষ

তুমি যদি শুধু তুমিই হতে




কিন্তু তুমি যে শুধু তুমি নও
সোনালী রূপকে গাঁথা এক আশ্চর্য উড়োজাহাজও বটে
তোমার বাতাসে সুশীতল কবিতার ডানা, হাওয়ায় ভাসছে উপন্যাসের ডাঙা।
শব্দবকুলের কূল পাই নে তোমার, শ্রীছন্দের কিনারা কি করে পাবো, বলো
তোমার বর্ণনাভঙ্গী অনেকটা কাদম্বরীর মতো তীব্র।
সম্পূর্ণ না হলেও কয়েকজন মুক্তগদ্যের বৌঠানও লুকোনো রয়েছে আলেখ্য জুড়ে।
পঙক্তিরা নিজেরাই নিজেদের লাবণ্য উন্মুক্ত করেছে। সেদিন বিকেলে হঠাৎ তোমাকে ছুঁয়ে
এক গোছা নয়নাভিরাম লোকগীতি, শুনতে পেলাম
কে যেন বলেছিল, তোমার উচ্চারিত স্পন্দনগুলি রীতিমতো সরল
পড়তে গিয়ে একটুও হোঁচট খেতে হয় না। তোমাকে লিখতে গিয়ে বুঝেছি,
অ আ ই এখনো অবধি শেখা হয়নি আমার
কয়েকটি হিমসিমকে অর্থহীন আঁকাবাঁকা করেছি শুধু
তোমার গানশৈলী প্রবল ঝর্ণাপ্রবণ, অতল প্রবন্ধের প্রস্রবন। লীলাপদ্মের ঢল স্পর্শ করে,
মধুরতম আখ্যান গড়ে তোলাই তোমার স্বভাব।
তোমার রঙে মেলাতে পারি না সুর, এ আমার মালঞ্চে অমিতকান্তি শুকতারার অভাব
তোমার লেখাগুলি প্রকৃতিতে খুব একটা নির্জন নয়।
বেশ কলরোলের। যেন অজস্র দণ্ডকলসের আকাশ। মেরুপাখিদের ভিড়।
তোমার ছোটগল্পগুলিও আকারে বৃহৎ সুদর্শনা
যতবার তোমাকে আঁকতে চেয়েছি, ফিরেছি তোমার হাতে লেখা রক্তে, ক্ষরণেে
তোমার দীর্ঘকবিতাটি আমাকে শিখিয়েছে প্রথম দোতরা।
কী কঠিন! ঠিক যেন তুমি।
কী সোজা! ঠিক যেন তুমি।
তুমি সেই সরলঅংকের একতারা যাকে বানান করতে আজো কেউ শেখেনি।
এর মধ্যে কবে যেন স্বপ্নে এলে, নির্ভীক ভুরু
ক্লান্তিহীন অবয়ব, পুরুষালি নিশার সঙ্গীত
এক অলৌকিক রাত্রিযান লিখে ফেললে কী অবলীলায়
ভেঙে গেল ভ্রমণ, সেই কমলিনীর পরিচয় জানা হল না
গত রোববার দুপুরে পড়ছিলাম তোমার অখণ্ড পৃথিবী
মনে হল, মনে মনে বুঝি তোমাকেই পাঠ করছি।
মনের তো কোন সীমা হয় না সীমানাও নেই।
কতো সহজেই তোমার স্বর্ণতরীর হাত ধরে পদ্মলোচনা
নৌকাবিহারে গেলাম মজে
তোমাতে নিবিড় ধ্রুবতারাটি যেদিন চিনতে পেরেছি আর
আরও তীব্র হয়েছে অরুণ বিষাদ, জড়িয়ে ধরেছে কণ্ঠস্বর
সেদিনই জেনেছি, অশ্রুকান্নাই প্রধান কলম, তোমার দৃষ্টিপাখি
বৃষ্টিদূর তোমার মেঘাতুর, দিব্যমলম
১০
যদি আমাকে নিয়ে কিছু লেখো কখনো
এক খণ্ড বাঁশির আলাপ অথবা এক পলক
সূর্যের রোদচাঁপাম যদি লেখো কখনো আমার জন্যে
অচেনা ময়ূরের পেখম, কী নাম দেবে সেই ঝুলনের?
১১
থাক, নাম দিও না কোনো
তুমি শতপথ বাউলের আলোঅরণ্য, আভা
আমার যজ্ঞসারথি হবে? তোমার বরাভয়গুলি বুকের
দু’পাশে টুকে রাখবো, তোমার আরশি আমার আয়নায়
চোখের বালির মতো সহজে মিশে যাবে
১২
তুমি দৃশ্যমান একমাত্র, বাকি কাউকে দেখতেই পাই না
প্রেম নও তুমি, এ কথা দিনের খোয়াইয়ের মতো স্পষ্ট
বিরহও তুমি নও, কারণ সর্বপ্রহর তোমারি স্তব্ধতায়
শ্যামজ বর্ষার ফোয়ারায় দিনমান ভাসছি, ডুবছি আমি


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র