সুপর্ণা বোস - মায়াজম

Breaking

২০ জুন, ২০২০

সুপর্ণা বোস

কল্পকাল



মানুষ যেন নিজেই আস্ত একটা ঘরবাড়ি। একটু একটু করে কখন যেন পরস্পরের ভিতর ঢুকে পড়ে । বসবাস করে । খান পানে মত্ত হয় । কখনো মান করে মুখ গুঁজে থাকে।
মনের ছায়াপুকুরে টুপটাপ ঝরে পড়ে স্মৃতির জারুল ফুল । চোখের বারান্দায় মাধবীলতার ঝাড় । হাওয়া এসে দোলা দিয়ে যায় । কথার শিসমহলে ফুটে ওঠে সময়ের মুখ।
ভেজা বালির প্রাসাদ। শুকিয়ে গেলে ধুলিঝড়ে উড়ে চলে যাবে। সৌধের সাধ্য কি , নিজেকে বাঁচাবে ! কি এক নেশায় , হাওয়ায় ভর করে উড়ে যায় চোখের তারায়। আমি অন্ধ হলে , চোখের কানাচ থেকে তুমি মুছে যাবে। তুমি তো অন্ধ নও । চোখের বাগানে কত আলো ।
রাতের পর দিন আসে।স্মৃতির ভেতর কবর সারিসারি। ফেলে আসা গল্পের ভেতর হাঁটলে অচেনা লাগে ভারি। ছায়া ঘনালে অতি দ্রুত।পৃথিবী ক্রমশ মাতৃগর্ভের মতই প্রশমিত।



পাখি
সিদ্ধার্থের মত , কেন তুমি বলতে পারো না__
“যে বাঁচায় , পাখি তারই হয় ”
ক্ষতের ওপর যে রাখে শুশ্রুষার হাত__
পাখি তারই হয়।
জেনে রাখ__
মনেমনে , পাখি তারই হয়।



হৈমন্তীর মায়াকোণ

নিয়মক্রমে সারাবাড়ি যার নিয়ন্ত্রণে ঘটনাক্রমে সেই গিন্নীর নিজস্ব ফুরসতের আশ্রয় বলতে বাড়ির একটি ঘরের , একটি কোণ মাত্র। কি আছে এই কোণটিতে? আছে নিজের সাথে নিজের মত করে কিছুটা সময় কাটানোর আয়োজন ।
কোণ । কিন্তু আঁধার নয় । চমৎকার আলো হাওয়া পৌঁছোয় । ক্ষুদ্র একটি বইয়ের তাক । তারপাশে তেমনই ক্ষুদ্র একটি নিচু টেবিল। নিতান্তই মাটিতে , একটি সুতোয় বোনা রঙিন আসন পেতে বসে হৈমন্তী । রঙ তার বড় ভাল লাগে ।
ছোট্ট ভেলভেটেমোড়া ডাইরির পাতায় ঝরে পড়ে ঝুরো কথকতা । এ যেন তার সুখের হাট। দুঃখের দেউল। এখানেই কতকাল ধরে সাজানো রয়েছে এক আশ্চর্য মানুষ ঝুলন। জীবন্ত । অথচ কারোর চোখের পলক পড়ে না । মুখের হাসি নেভে না কখনো ।
কৃষ্ণচূড়ার লাল পাপড়ি নিরন্তর ঝরে পড়ে লাল সাইকেলের ওপর।
সজনে ফুলের থোকায় মৌমাছির গুঞ্জন থামে না কখনো ।
কুশি পেয়ারার মাথায় ছোট্ট সাদা ফুলটি হাসি হাসি ফুটে থাকে ।
কোথাও কোনো ক্ষয়ের চিহ্নমাত্র নেই । সময় যেন কুম্ভকে ধরে রেখেছে সবটুকু।কেবল সূর্য ডোবার সময় , বিকেলের মায়াবী আলোর ভেতর___
পুরনো প্লাটফর্ম ছেড়ে ধীরলয়ে চলে যায় একটা মস্তবড় ট্রেণ ।



1 টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র