প্রগতি বৈরাগী একতারা

মায়াজম
0

 



(১)বেহেড

পাপগুলি ভেসে উঠছে ঘাটে-আঘাটায়
জল ঝরে, অপরাধী লালা

ছিপছিপে গিঁট বেঁধে রেখেছি আঙুলে
ডাক দিলে, নড়ে ওঠে, প্রিয়তম পাখী আর পুরুষের নামে
কোমরবন্ধে বায়, মাথার জখমে নাচে,
চেটে খায় গূঢ় হস্তরেখা

স্বভাবে দুর্বল, বেহেড ক্ষরণজাত মৃদু হল্কাপাত

দুইফালি জিভের শরীরে প্রবৃত্তি টাঙিয়ে রেখে নিদান খুজেছি

(২) অর্ধজাগর

প্রকাশের নেশা ক্রমে মৃদু হয়ে আসে
অন্তরে বৃক্ষটি ফুটেছে

এই যে গাণ্ডীব লিখি, খাপমুক্ত এই তরবারি
ধনুর্বানের মুখে অনায়াস গুঁজে দিচ্ছি অসহ প্রহার
এ সমস্ত অপচয়ে গভীরে ফুরিয়ে যাই
রিপুরসে মাখামাখি ক্ষুধা ও প্রাণের কল
ফাঁকা লাগে, ফাঁকা লাগে দেহের ঝরোখা

রুদ্ধদ্বারে গুনগুন কূটকথা ওড়ে

কেরোসিন সন্ধ্যাকালে ফটফট পুড়ে যাচ্ছে লোভের রচনা
দরোজা নিভিয়ে রাখি
ভাবটুকু শুয়ে আছে বৃক্ষের শিকড়ে


(৩) জাদুঘর

"ফিরাও বালিকামুখ" এই বলে
যে হাওয়াটি মিশে গেল সুষুম্নালতায়
আমি তার শীতল জড়িয়ে সমুদ্র ভ্রমণে যাব...
তরঙ্গের বুকে পিঠে আনোখা প্রদাহ
বসে আছে নিয়তির পাখি
পাখির পায়ের কাছে আবছায়া পুরানা বয়স
দুগ্ধঘ্রাণ, নিমস্তন, তলতলে রজের বিস্ময়
খুঁটে খায়, গেঁথে রাখে পিঠের পালকে
পাখিটিকে ঘিরে নাচে বহুবর্ণ সময়ের ভাঁড়
জিহ্বার কারিগরি অসহজ গানে
কাকযোণি রমণীরা দোলে,
শাঁখামুটি মালাখানি তুলোট গলায়

রসাতলে পা ডুবিয়ে তুলে আনি,
ফুলজামা, স্নেহমুখী ওলানের টান
আমি ক্রমে ডুবে গেলে ভ্রমের আছরে
অপাপের বালিকাটি জাগে...

(৪) আতপ

ঘরের আগলে ঘর, তার মাঝে ঘুমের বয়াম
ছয়টি চাদর টেনে শুয়েছেন নয়নাভিরাম
প্রগলভ পানপাত্র, মহাভোজে অনন্তের থালি
উর্ধ্বশিরে বয়ে যাচ্ছে পরিপাটি কুহক প্রণালী
ঢেকে দেয়, ঢেকে দিচ্ছে সহজাত বোধের খনন
এক আঁজলা জল তবু সুধাবিন্দু দিব্য সনাতন
পড়েছে ঘুমের মুখে, জেগে উঠছে ভবসিন্ধুপাড়া

কাঠামো বন্দর যেন, মুর্শিদ নদীর ইশারা

.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)