অ রি ণ দে ব - মায়াজম

Breaking

২৪ জুন, ২০২৩

অ রি ণ দে ব

                                                             



                                                    ভূমিকা

এ শরীর শিল্প।এ শরীর একান্নপীঠ মহিমা।এ শরীর শব্দের আকর।এ শরীর খরা বিপর্যয়ের পরেও মৃদুমন্দ জীবিত থাকা নদী।এই শরীর মহামান্য মাতালের সংসার।এই শরীর পোড়ানোর শখ তবু গেল না। এই শরীর মাংসখাকি শ্মশানের।এই শরীর জ্বললে ধোঁয়া।ধোঁয়ার মধ্যে কুয়াশা-মাখা গ্রাম।গ্রামের মধ্যে বৃদ্ধ তার মা।মায়ের চোখে ছানি।মায়ের চোখে বৈতরণীর-চর।চরে চরে পাণ্ডা,চরে পিতৃপুরুষের ঋণ।ঋণ-খোর এই জন্ম নিয়ে বিভ্রান্ত-ব্যাকুল।বল হে নশ্বর কেন এই শরীরের উত্থান।শরীরে বিঁধে আছে অদগ্ধ নাভি-অস্থি-র প্রাণ।জন্মের ভেতর এই মৃত্যু নিয়ে আমার ও তার সংসার। 


    ল ক্ষ্মী সো না 

এখন তোমার অপূর্ব হাসির সামনে চুপটি ব'সে আছি।দিগন্তের ডুবন্ত সূর্য ছুঁয়ে আছে কৃষ্ণমন্দির।মন্দিরের উঠোনে নিহত পলাশফুল ঘুমিয়ে আছে।মর্গে যেমন ঘুমিয়ে থাকে বেওয়ারিশ।দোলপূর্ণিমার পরেও পলাশফুলের ঘুমিয়ে থাকার অর্থ খুঁজছ আর হাসছ? রঙের অপচয় কীভাবে সহ্য করছে কৃষ্ণ,তুমি ভাবতে যেও না।তার'চে প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট অব্যবহৃত হলুদপাতারা কোথায় উড়ে যায়,কেনই বা যায়,ভাবতে পারো।শিল্পী হতে চেয়ে জোকার হয়ে যাওয়া মানুষেরা কেনই-বা  বেঁচে থাকে,বুঝতে চেষ্টা করতে পারো।তুমি এসব কিচ্ছু না-করে আগুন আর আগুনের হল্কার মধ্যে কে বেশি সুন্দর এই নিয়ে চর্চা করছ!তোমার ভেতরের পৃথিবী তোমার ভেতরের সূর্যকে কেন্দ্র ক'রে আর ঘুরছে না,খবর কী রাখো।শতাব্দী শেষ হয়ে যায় অথচ শিশু হত্যার বিমানের উড়ান থামে না,তুমি কী জানো।আগুনের মধ্যে ঢুকতে ঢুকতে ওইভাবে হাসে না সোনা।আমার সহ্যক্ষমতা সীমিত।তোমার আগুনে পুড়ছি আমি,দেখো।

০২

জলজ্যান্ত সেই তুমি কিনা চুরি হয়ে গেলে!বসন্ত পূর্ণিমার চাঁদ যেখানে চিতার মতো জ্বলছে,সেখানে কিনা খুঁজে পাওয়া গেল শেষে।চাঁদের নিচে শুয়ে কী ভাবছিলে?নিমাই পণ্ডিত এমনই এক রাতে বিষ্ণুপ্রিয়াকে ছেড়ে দেশান্তর হয়েছিলেন কিনা?চরাচর জুড়ে অনর্থবহ জ্যোৎস্না।দু'পা এগোলে শ্মশান।পরিত্যক্ত মন্দির,কোনও এক উপদেবীর।আর দু'পা সামনে গঙ্গা।এঁটেল মাটির চর।চরে জ'মে আছে অর্ধদগ্ধ হাড়ি-মালসা ও বিছানাপত্র।তুমি হয়তো জানো,এই রাতে কতকিছুই-না ঘটবে।জ্বলন্ত চিতা থেকে উঠে আসবে সতী।শরীরে তার ঝলসানোর চিহ্নমাত্র নেই।বিবস্ত্র গঙ্গাস্নান সেরে ঢুকে যাবে উপদেবীর মন্দিরে।এক পাগল দূরের মন্দিরে অকারণ মন্দিরের ঘণ্টা বাজিয়ে চ'লে যাবে।ঘণ্টার শব্দ তুমি শুনতে পাচ্ছ,ভাববে।অথচ হাড়মাস খাওয়া দু'একটা কুকুরের ডাক ছাড়া কিচ্ছুটি নেই,নিস্তব্ধ।সেই তোমাকে এখানে খুঁজে পাবো ভাবিনি,সোনা।ওঠ।উঠে আসো।রাত শেষ প্রায় প্রায়।জ্বলন্ত চিতাও নিভু নিভু।তুমি জানো,চিতা নেভে না কখনও।এসো, উঠে এসো, সোনা।

০৩ 

এরকম জীবন নিয়ে বেশি ভাবতে যেও না,সোনা।বাতাস ভেতরে ঢোকাও আর ছাড়ো,ব্যাস।ফুরোতে থাকা সূর্য আর শুকোতে থাকা নদীর আগে বিদায় নেবে,তুমি।শেষ স্টেশন পেরিয়ে জঙ্গলঘেরা কুয়াশামাখা গ্রামকে এই পৌষের সন্ধ্যায় দেখো।তোমার চেয়ে জনবিচ্ছিন্ন।মাঝরাতকে হিম দিয়ে অবরোধ করে রাখা এই শীত তোমার চেয়ে একাকী,ভাবো,ভাবো সোনা।'হারতে হারতে শেখা যায় না' - ব'লে পালিয়ে যাবে?জিততে জিততে যারা জিতে গেছে,তাদের শীতবস্ত্রের কাছে পরাস্ত হয়েছে ঋতু,শীতঋতু।পাতা নিঃস্ব ক'রে পর্ণমোচী মহাত্মা'র মতো অর্ধনগ্ন দাঁড়িয়ে আছে তোমার সামনে,সোনা।পরাজিত পাতারা পর্ণমোচীর নিচে লুটিয়ে আছে,উড়ছে হাওয়ায়।তোমার অতীত হলুদ পাতাদের মতো।ছিল অথচ নেই।তোমার বর্তমান পর্ণমোচী আর পৌষের ঘনসন্ধ্যা।তুমি ফুরিয়ে যাবে কিন্তু চিতা নিভবে না,তা তো তুমি জানো।দালাল স্ট্রীটের উত্থান হবে তবু ভিখিরি কমবে না,বোঝো না সোনা!সন্ধ্যার বাইপাসে আত্মহত্যাপ্রবণ পরীদের আনাগোনা বাড়ার আগে,গুমটি চায়ের দোকানে যাও।সন্ধ্যার চা ভাঁড়ে ঠাণ্ডা হবার আগে,সুড়ুত টানো,শব্দ করে।সিগারেট ধরাও।তোমার ব্যর্থতার মুখে ধোঁয়া ছাড়ো,রিং বানিয়ে।শববাহী গাড়ি উপেক্ষা করে হাঁটতে থাকো সন্ধ্যার গায়ে,সোনা।

০৪  

এইমাত্র স্মৃতির সঙ্গে দেখা করে ফিরলে বুঝি!তেভাগা মিছিলের মতো এই বৃষ্টির দুপুরে এর'চে বেশি আর কী করার ছিল,তোমার।বৃষ্টিভেজা আউশধানের ডগার মতো তোমার দু' চোখে শুধুই ঝরা-শ্রাবণের সান্ত্বনা।সংগ্রামী কৃষকের দিগন্তবিস্তৃত  ফসলবিদ্যার মাঠে হাঁটতে হাঁটতে খুঁজে পেয়েছিলে শৈশব?খুঁজে পেয়েছিল লুপ্ত খাল?খালের জলে ভাসমান শাপলাফুল?আর হারিয়ে যাওয়া ডাইরির পৃষ্ঠা থেকে তোমার গোয়েন্দা বেরিয়ে বলেছিল কি - আত্মহত্যা হ'ল পৃথিবীর প্রাচীনতম আত্মরক্ষা!নিম্নচাপের দুপুর এজন্যই তোমার বুকের মধ্যে গ'ড়ে তোলে প্রত্নসাধকের আখড়া,সোনা। স্মৃতির মৃতশহর খুঁড়ে আর একটা স্মৃতিমৃত্যুর অতীত ছাড়া কী আর খুঁজে পাবে।তোমার থেকেও বেশি ক্লান্ত তোমার স্মৃতি,বোঝো না।পাতালের মতো অন্ধকারে লুকিয়ে থেকে যে স্মৃতির  অস্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়,তাকে এবার ক্ষমা শেখাও সোনা।একদিকে বৃষ্টি,একদিকে আউশের ক্ষেত।একদিকে বন্যা।একদিকে ধান।যে ধান অমর।কোন দিকে ঝাঁপ দেবে,সোনা।বৃষ্টির নক্ষত্রলুপ্ত আকাশ অন্ধকার।জ্বালো।ভেতরের আলো জ্বালো।তারপর ঝাঁপ দাও যেদিকে দিতে চাও!

০৫  

আরও হারতে চাইছ?হারতেই পারো।পটাসিয়াম সায়ানাইড পর্যন্ত পৌঁছে,থামো।জল খাও,গাছের নিচে বসে।বুধ না বৃহস্পতিবার,বুঝতে চেষ্টা করো।পশ্চিমে মেঘ জমেছে,বৃষ্টি আসতে পারে,না-ও পারে,কল্পনা করো।দোয়েলপাখি কোন ওস্তাদের কাছে শিসের বাঁশি শিখেছে,আর ওদের রেওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় কাদের,খুঁজে বের করো।শীতের পাতাঝরা নগ্ন গাছের মতো,অবেলার মেয়েটি কোথায় যাচ্ছে,জিজ্ঞাসা করতে পারো।হারতেই তো চাইছ।মেয়েটির হাত ধ'রে বলো,দাঁড়াও।দু'চারজন ষণ্ডাগুণ্ডা বললে বলুক: হচ্ছেটা কী?পটাসিয়াম সায়ানাইডের কাছাকাছি পৌঁছে,ভয়কে নিশ্চয় জয় করে ফেলেছ!মেয়েটির সাথে কী কথা বলবে,জানতে চাইব না।বিকেল ছোট হয়ে ঝড়ের দিকে এগিয়ে চলুক সন্ধ্যা ।মেয়েটি তোমার বুকের পকেটে রাখা পটাসিয়াম সায়ানাইড ছুঁড়ে ফেলে দিক লহমায়।সন্ধ্যার গায়ে দূর থেকে যদি এসে বসে কিন্নরীর দল,বসুক।বিদ্যাসাগর মহাশয়কে পথ দেখিয়ে যদি নিয়ে আসুক জোনাকিরা,মেনে নাও।বৃষ্টি নামলে নামুক।শুরু হোক বিধবাদের বিবাহলগ্ন,সোনা।

০৬  

থামো।বৃষ্টির মধ্যে অতদূর যেতে নেই।বজ্রপাতে মৃত্যু হলে কেউ কাঁদার নেই,ভাবছো?দীননাথ লেনের রুগ্নগলি পেরিয়ে যেতে পারলেই মুক্তি,মনে করো?অখিলবন্ধু ঘোষ নেই তোমার ভেতরে ,সত্যি।হোমি জাহাঙ্গীর ভাবার অ্যাটমিক এনার্জি নেই,তাও মেনে নিলাম।তা-ব'লে বৃষ্টিঝঞ্ঝার ভেতর দিয়ে কোথায় যেতে চাইছ?শহর,শহর পেরিয়ে আরও একটা শহর,শহরের পরে এত্তগুলো লেবেলক্রসিং,লেবেলক্রসিং-কে ভেংচি কাটতে কাটতে ছুটে চলা রেলইঞ্জিনকে উপেক্ষা ক'রে,কোন স্বর্গে পৌঁছোতে চাইছ?বৃষ্টির মধ্যে ডুবন্ত সূর্য ছাড়া কে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে?কে তোমার কাদা-পা মুছিয়ে দেবে আঁচলে,কোনোদিন বুঝতে চেয়েছ? অথচ,বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি আর বজ্রপাত তোমার কাছে বড় হ'য়ে গেল?কথা না-শুনে,না-বুঝে তুমি চ'লে যেতেই পারো,জোলোগলি পেছনে ফেলে।যাও।চিরকাল থাকার জন্য কেউ আসেনি।যাও,কিন্তু যতক্ষণ থাকা উচিত,থাকো।তোমার যেকোনও ব্যর্থতাই ,তোমার ম্লান হাসির কাছে হেরে যায়।যাও,বিশ্বাস না-হয় মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করো।তোমার এক একটা পতনে ক্ষয়ে যায় মায়ের এক-এক বছরের আনন্দ।আরও একটু হেঁটে যাও,বৃষ্টি মেখে।তারপর দাঁড়াও।নগ্ন হও।নগ্ন হও।মগ্ন হও।পারলে বজ্রের চেয়ে জোরে কাঁদো।যদি,ভুলআকাশের পাখি দেখতে পাও,বল ঠিকানা দাও,ঘরের।তারপর তোমার আমাকে জড়িয়ে ধরো।বলো,পাগল পাগল।

০৭ 

নক্ষত্রমণ্ডলে পা-ঝুলিয়ে ব'সে কী এত ভাবো?তোমার পায়ের নিচে মহাশূন্য।তারও নিচে পৃথিবী।ঝুলন্ত পা-দুটোকে এইসময় শিরদাঁড়ার চেয়েও খাড়া দেখায়।কুঁজীবুড়ি কবেই চুরি ক'রে নিয়ে গিয়েছে তোমার শিরদাঁড়া।চোরকে ধরার সাহস বা দুঃসাহস কোনওকালেই ছিল না তোমার।সেই থেকে তুমি শিরদাঁড়াহীন।শিরদাঁড়াকে উপেক্ষা করছ কী এভাবে ঝুলে ঝুলে?এখন যখন নক্ষত্রের মধ্যে থেকে পা ঝুলিয়ে বসে থাকো আর পৃথিবী আকাশকুসুম গল্পের দিকে এগিয়ে চলে,তখন তোমার কি সন্ধ্যাকাল মনে পড়ে?গোধূলিলগ্নের বিবাহবাসরের পাত্রীকে দেখতে পাও?গায়ে-হলুদ স্নানের পরে সে-কেমন নারী নারী হয়ে ওঠে,গন্ধ পাও?কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেবে না জানি। জীবননামক এই খড়গ,পৃথিবীনামক এই বর্ম আমার জন্য রেখে,এই জন্যই কি তোমার এতদূরে যাওয়া? নিজেকে দেখতে দেখতে ক্লান্ত হ'য়ে এই পলায়ন বেছে নিতেই পারো তুমি,সোনা।এখানে ক'কদম এগোলে বেশ্যাখানা,আর ক'কদম এগোলে শ্মশান। বেশ্যাখানা আর শ্মশান,কোনওটাকেই তুমি গ্রহণ করতে না-পেরে নক্ষত্রের মধ্যে ঝুলে আছো!অথচ তুমি জানো,মৃত্যুর মুহূর্তে জ্বলে ওঠা একটা  তারাখসাও হতে পারবে না।ঝুলে থাকো।দোল খাও,সোনা।এখন শিরদাঁড়ার চেয়ে খাড়া তোমার পা...

০৮ 

কোনোভাবেই হারিয়ে যেতে পারো না সোনা।হারানো যায় আগুন অবধি।আগুনের পরে নক্ষত্রবীথির বন।চোখের সামনে ঝুলন্ত-গঙ্গা।সকালে এক চিরকুমারী দেবী স্নানে এসেছেন।ঝুলন্তগঙ্গায় বিবস্ত্র সাঁতার কাটছেন।তুমি হারিয়ে যেতে চাও না বলে,আগুন পেরিয়ে এসেছ।আগুনের জেদি হলকায় পুড়িয়ে এসেছ শরীর।এখন তবে কাচের মতো শুদ্ধ-স্বচ্ছ।তোমাকে নিয়ে গল্প করার কেউ ছিল না বলে,এতদিন নিখোঁজ ছিলে।এতকাল যেন এক হাড়িকাঠের অভিনয় করে এসেছ আর নির্লজ্জ হত্যার সাক্ষী থেকেছ।হত্যা চাওনি তবু সমস্ত হত্যার রক্ত তোমার শরীরকে ভিজিয়ে রেখেছে।আর কিছুই হারানোর নেই,লক্ষ্মীসোনা।বসন্তের এই নিভন্তসন্ধ্যা আর দ্বিতীয়বার পাবে না।আমার ভেতরের থেকে বেরিয়ে এসো।আজ শনিবার, পশুহাটের দালালরা,গাভী বিক্রি করে ফুলুরি খাচ্ছে।এস হাঁটি।আমাদের হারানোর কিছু নেই।এস বন্ধু,চশমা খুলে ফেলি...

০৯ 

নিজেকে জ্যান্ত ভস্ম করছ লক্ষ্মীসোনা।ছাই উড়ানো অপূর্ব হাসি তোমার চোখেমুখে।ভিড়ের মধ্যে বিড়বিড় ক'রে যা বলো,কেউ বোঝে না ভেবেছ?পৃথিবীতে আনন্দের শেষ নেই,সে তো মাঝরাত্রিরে চৌমাথার দেখা যায়।নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে শূন্যের দিকে সমস্ত সিগন্যাল খুলে দিয়ে যে মানুষটি হাসতে থাকে,তাকে দেখো।এরম আনন্দ তুমি নিজে উৎপাদন করেছ,নিজের জন্য।জঙ্গলের ধারে ভাঙামন্দিরটিকে তো দেখেছ। এককালে মন্দিরে জাগ্রতদেব ছিলেন।এখন ভগ্নপ্রায়।জাগ্রতদেব অন্য কোনও মন্দিরে অধিষ্ঠান নিয়েছেন।এখন কেবল উড়োপাতারা এসে মন্দিরে বসে,ঝিমোয়,ধীরে ধীরে মাটিতে মিলিয়ে যায়।তুমি নিজেকে ওই দেবতার মতো ভাবতে পারো।প্রয়োজনের অতিরিক্ত সমীহ দেবতারাও পান না,তুমি তো তুচ্ছ মানুষ।পোড়াভস্ম অবস্থানকে উপভোগ করো,লক্ষ্মীসোনা।গতকালের অথবা আগামীকালের তোমার সঙ্গে আজকের তোমার দেখা হবে,তা হয় না।দেখা না হওয়ারটার নাম পথ।পথে তুমি একা।একা পথিক।তোমার ভেতরে তোমার সরাইখানা।ব্যর্থতার মদে ঠাসা সরাইখানার রাত।যদি ভাবো কোনও অপ্সরা এসে নেচে যাবে রাতে,তা হয় না।বরং তাণ্ডব হতে পারে।সতীকাঁধে প্রলয়ে নেচেছিলেন যেমন মহাদেব,তেমন নাচতে পারো।জানি, মাঝরাত্রিরে চৌমাথার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে সেই নাচ নাচতে চাও তুমি। নাচো।বুকের ভেতরে এতবড় চৌরাস্তা রেখেছি,লক্ষ্মীসোনা,এসো নেমে পড়ি রাত্রিরের রাস্তায়।

1 টি মন্তব্য:

  1. অসাধারণ লেখা। নিজের মধ্যে নিজে হারিয়ে যাওয়ার খেলা খেলেছেন লেখক। বিস্ময়কর এই লেখার সামনে থমকে গেছে সময়।

    উত্তরমুছুন

Featured post

সোনালী মিত্র