অনিমেষ সিংহ - মায়াজম

Breaking

২৬ জানু, ২০২৪

অনিমেষ সিংহ

 

আমার স্বর্গাভিলাষ

তোমার মতো হৃদয় আমার নেই।
তোমার মতো ঝুলবারান্দা, ক্যাকটাস এবং কাঁচের গ্লাস আমার নেই-
কী বিশ্রী এই সাঁঝ!
তোমার মতো, এমন গলিপথ বেয়ে, এমন আলোর হ্রদ
আমার, আসে না-।
এমনকি প্রেমের গহীন অরণ্যে যখন হাতড়াই-
দুটো নরম হাত-
নম্র স্তনদ্বয়
তখন ফুটে ওঠে একটি পদ্মফুল-
শুকনো খটখটে পুকুরেও পদ্ম ফুটে ওঠে!
সে ফুল আমার নয়-
রাতের নিজস্ব বিছানায় তার জন্যে আফিস ফেরত স্বামী,
পারফিউম নিয়ে আসে -
এবং রাতভর তাদের অনবদ্য সঙ্গমে ভরে যায় চাঁদ!
খোলামেলা এমন চাঁদনী, নেই আমার!
তোমার ঠোঁট - এতো গোলাপি, এতো প্রাকৃতিক -
সাদামাটা মেঘেও বসন্তকাল আসে!
কী অদ্ভুৎ রাত!
তোমাকে রেখেছে স্বর্গে, নিঃসঙ্গ!
আমাকেও নিঃসঙ্গ রেখেছে নরকে!

.....….......…....…...…..............

২)
।জগতের অপরাধ।।

ঝমঝমিয়ে কৃষ্ণচূড়া হল আমার! লালচে এক রোগ।
উঠোন লাল- মর্মাহত যদিও শীতকাল!
শিশুরা গোলাপ বাগান হয়ে গেলো,
সারি সারি পাপড়ির লাশ!
আমাদের নার্সিসাস ফেসবুক আর,
-তারাদের অজস্র ডলার!
তুমি ক্যাবলা ভিজে বোম্ব!
গানা চালিয়ে, ঘুমিয়ে পড়েছ সুখে।
রান্নাঘর লাফিয়ে যাচ্ছে ইউটিউবে।
বড়ো মিশ্র এ জগৎ!
মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ নিয়ে দেয়াল,
চাকরি সূত্রে ভেঙে ফেলছি পথ,
পথ হচ্ছে চাহিদা মতন পুনরায়।
ঘুড়ি উড়ছে আকাশে, স্বাধীনতা লেখা,
সুতো জড়িয়ে আছে আমার নশ্বর দেহে।
মদ ধরলে এখন, তুলে নিচ্ছি আগেভাগে রেশনের চাল।
কাল কার্ফু জারী হতে পারে!
কাল হবেই, এমন ইজরায়েল যখন!
এমন গাজা ও শিশুরা রাষ্ট্রটি বোঝে না যখন!
বেজন্মা কুকুরটা নন্দিত লেজ বাঁকা করে নির্বাচনে চলে গেল তারপর-
তুমি দেখলে, আমি দেখলাম -
এবং কালীপটকা জ্বালিয়ে চেষ্টা করলাম,
আঁধারটাকে আলোকিত করার;
আমরা চেষ্টা করি এভাবে,
মানুষের অতি সাধারণ বৃত্তে জোনাকির আলো দিয়ে
মুছে দিতে জগতের অপরাধ...

...............….....…...........................
৩)
।মৃত্যুমুখী পারাবত।

এই যুদ্ধক্ষেত্র নিয়ে ভাবি। ভাবলেই দাড়ি বাড়ে এবং শ্রুভ্রতাও। রাত চেপে বসে চোখের তলায়। জয় শাহের চোখ দেখি- কী মাটিমাখা সরল গোলাকার! শিশুদের কান্না আসে, লাশ আসে। খবরে ও বাজারে তারপর গুঠকার বিজ্ঞাপন হেসে কুটিকুটি হয়। টিভিটাকে, মাঝারি কাউকে দিয়ে উঠে আসি। কফি খাই কিংবা, পান করি। পুরাতন গান ভেসে আসে জগদ্ধাত্রী থেকে, ভাসান অথবা অ্যানুয়াল ফাংশন থেকে। জানালাগুলো বন্ধ করি। দরজাটা আগেই কালো হয়ে আছে। আমি এখন নীরব। বোঁদের মতো শব্দগুলো নাভি থেকে বেরিয়ে নামে খাতায়। ইয়াসের আরাফাত মনে পড়ে-, চোখগুলো মোদী বা মমতার মতো নয় -
কিছুটা ইউফ্রেটিস
কিছুটা টাইগ্রিস -
আমার সুবর্ণরেখা আসে লেখার ভিতর। মিছিল নামে মোর্চার। প্যালেস্টাইন থেকে ইন্ডিয়া-
সবকটাকে নামাই, কবিতায়।
তারপর অজয় দেবগান আর শাহরুখ খান গুটকা খেতে বলেন -
রোহিত শর্মা বলেন জুয়া খেলতে,
জাতীয় সরকার বলে, সবকা সাথ সবকা বিকাশ।
বিকাশকে ফোন করি।
মন ভালো নেই- মদ খাব আয়।
মদ খেতে খেতে কান্না ভরিয়ে দেয়- শিশুদের লাশ, গাজা-
তারপর, বরফের টুকরো রাখি আরব সাগরে-
গিলে খাই ইহুদীর খ্রিস্টান!
গীর্জায় ঘন্টা পড়ে, সাঁঝের শাঁখ আর দূরের আজান-
স্যাকুলার লিখি ভুল বানানে-
কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ফিরি-
শিশুদের লাশ, নারীদের বডি, পুরুষদের দেহ পড়ে থাকে পাড়ায় পাড়ায়-
দরজা খুলে ভিতরে যাই,
নিজের ভিতরে-।
রান্নাঘর থেকে কষা মাংসের সুবাস আসে;
মাংস খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আমি-
যুদ্ধবিরোধী কবিতার, যোনির ভিতর-

1 টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র