সম্পাদকীয় - সোনালী মিত্র - মায়াজম

Breaking

২৬ জানু, ২০২৪

সম্পাদকীয় - সোনালী মিত্র

 

সম্পাদকীয়

বারের শীত বয়স্ক মানুষের কাশির মতো।বিদায় নেবে নেবে করেও নিচ্ছে না। এবারের শীতে মানুষ মানুষের মতো জড়সড়। মানুষ নাকি এক আশ্চর্য জীব।মানুষের ভেতরে নাকি আরও একটা মানুষ আছে।প্রথম মানুষটা যখন দুধ খায় ভেতরের মানুষটা টানে সিগারেট।৪৫ ডিগ্রীর গরমে প্রথম মানুষটি হাঁসফাঁস করে যখন,ভেতরের মানুষটি ঘুরে আসে সাইবেরিয়া।কাজেকর্মের দিনে দেখা হয় না ভেতরের মানুষের সঙ্গে,তবু থাকে।একাকী রাতে,ভেন্ট্রিলোকুইস্ট ডাকে তার মায়াবী মানুষটাকে।যে কথা বলতে পারেনি কখনও সেই কথা তখন বলে। শীত বিপর্যয়ের সন্ধ্যায় ভেন্ট্রিলোকুইজমের অন্তরঙ্গ প্রয়াসে,মানুষ নিজের সঙ্গে কথা বলে ঝালিয়ে নেয়নি কি ? ভেতরের মানুষটা কেমন আছে? নিভে যাওয়া সন্ধ্যার পরে আসে অন্ধকারের রাজা।রাজা একচক্ষু। অন্ধকারের রাজা সেইসব নিঃস্ব মানুষদের টেনে নিতে চায় নিজের দিকে। শব্দহীন নির্জনতা ছাড়া কেউ বন্ধু নয় তার।মানুষকে নিয়ে মানুষের গর্বের শেষ নেই, অথচ মানুষেরা সম্মলিত একটা গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের ক্রিয়াকলাপ ওই মানুষদের নিয়ে।তাদের সৃষ্টি এবং অনাসৃষ্টি ওইটুকু সীমার মধ্যে সংরক্ষিত।এর বাইরে কী আছে আর কী নেই,সেই ভাবনা পাগলদের।এই কারণেই পাগলদের অনেকে মানুষ ভাবে না। আর পাগলেরাও নিজেদেরকে মানুষ না-ভাবতেই বেশি পছন্দ করে।


একটা মাথা,দুটো চোখ,একটা নাক, দুটো কান,দুটো হাত,দুটো পা ইত্যাদি ইত্যাদি আরও কিছু অঙ্গের অধিকার পেয়েছে জন্ম সৌভাগ্যে।এতকিছু একসঙ্গে পেয়ে হকচকিয়ে গিয়েছে।এতগুলি অঙ্গের ব্যবহার কীভাবে করবে ভাবতে ভাবতে একদিন দিন ফুরিয়েও গিয়েছে।ফুরোতে ফুরোতে ভেবেছে,কেনই-বা এসেছিলাম,আর কেনই-বা ফিরে যাচ্ছি,তাই তো জানা হল না।এই অবাক বিস্ময়ের জন্যই নাকি মৃত্যুর সময় মানুষের চোখ বন্ধ হয় না।


মায়াজম তো এইসব মানুষদেরই জন্য।যারা নিজেদের সঙ্গে কথা বলতে জানে,তারা কখনও নিঃসঙ্গ হয় না। নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলাটা হল শিল্প।মানুষের প্রয়োজনে শিল্প,শিল্পের প্রয়োজনে মানুষ নয়।মায়াজমে এবারে যারা লেখা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের সব্বাইকে ধন্যবাদ।ধন্যবাদ জানাই মায়াজমের সমস্ত পাঠককে।এবারের মায়াজম'এ প্রচ্ছদটি দিয়েছেন শ্রদ্ধেয়া ফাল্গুনী ঘোষ মহাশয়া। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
-সোনালী মিত্র

1 টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র