রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায় - মায়াজম

Breaking

১৫ মার্চ, ২০১৫

রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়



ব্ল্যুস 


 তোমার মুখের পাশে যে নীল আলো ছড়ায়, তাতে তোমাকে এক দিগন্ত প্রতিভাত হতে দেখি। তোমার সমান্তরাল পরীরা ওড়ে। তারা গান গায়। তাদের ডানায় সেই সব গানের রেণু লেগে থাকে। তুমি পাতালে নেমে যাও। গোলোক-সুড়ঙ্গে। একটা ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে অনেকটা নিচে। পরীরাও নামে। তাদের গান আমার ট্রান্সিস্টরে অস্পষ্ট হয়ে আসে। পড়ার টেবিলে তখন যত নেশা। এফোঁড়-ওফোঁড়। কানন দেবী বাজে। বেজে যায়। স্ট্রিপ থেকে তোমার স্তনের কষ-আঠা দুধের বড়ির মত পানপাত্রে লাফিয়ে নামে। আমি ক্রমেই তাদের অধঃক্ষিপ্ত হতে দেখি। পরীরাও নামে। তাদের এই পতনের সম্মুখীন ডানাজোড়া ভাঁজ হয়ে থাকে। তুমি টাওয়ার এন, ব্লু লাইনে এসে দেখ কাল সারারাত বরফ পড়েছে। আমাদের আত্মার গলনাঙ্ক নেমে গেছে দৈবী মাত্রায়। এই শস্যজাত মদের থেকে অমৃত ছেঁকে নিতে আমি তখন রান্নাঘরে ঢুকি। একটা বাষ্প সজোরে বাজে। দামামার মত ফেটে যায় রান্নাঘর। বুঝি যুদ্ধ শুরু হল। তুমি যে শেষ পেরেকটা রেখে গিয়েছিলে, তার মধ্যে ব্রহ্মজ্ঞান সমর্পণ করি। খাটটাকে ছোট করে আনি। টেবিল রঙশূন্য হয়। ক্রমে শাদা কালো থেকে বিন্দু বিন্দু বৎ সরে যায়। আমার কবিতারা শেষ পর্যন্ত আমাকে ত্যাগ করে। করে চলে যায়। চলে যেতে যেতে একটা দুটো ডানা মেলে। আমি রামধনু দেখি। সেই কবেকার বৃষ্টি শেষে ভিজে আছ তুমি। রঙের গন্ধে মেলে আছ। অতঃপর পরীরা এসে আমার ঘরে দাঁড়ায়। অতঃপর পেরেকটা শেষ বিদ্ধতা পায়। আবার স্ক্রিনে একটু একটু করে আলো ফেরে। দেখা যায় একটা সাবওয়ে থেকে উঠে আসছ তুমি। চশমায় ঘন হয়ে, হাতে তোমার, ধরা একটা লেখা। আরো একটা নীল আলো তোমাকে অনুসরণ করে এসে দাঁড়ায়।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র