দ্য পিলগ্রিমেজ(দ্বিতীয় পর্ব)
রাত্রিকে শুধু রাত্রি
বলাই ভালো
অন্ধকারের বিরোধ
মোছানো কালো
রাত্রিকে তবু রাত্রি
বলেই থাকি
অন্তহীনের শেষটুকু
দেখা বাকি...
“अपना हाल होती जो विसाल-इ-यार होता
कभी जान सदके होती कभी दिल निसार होता
इए मज़ा था दिल्लगी का के बराबर आग लगती
न तुम्हें करार होता न हमें करार होती
तेरे वादे पर सितमगर अभी और सब्र करते
अगर अपनी ज़िंदगी का हमें ऐतबार होती..”
(অপনা হাল হোতী জো
ভিশাল-এ ইয়ার হোতা
কভী জান সদকে হোতী কভী
দিল নিসার হোতা
ইয়ে মজা থা দিল্লগী কা
কে বরাবর আগ লগতী
ন তুমহে করার হোতা ন
হমে করার হোতী
তেরে বাদে পর সিতমগর
অভী ঔর সব্র করতে
অগর অপনী জিন্দগী কা
হমে এতবার হোতী)
“......And when my work shall be done in this world,
O King of kings, alone and speechless
shall I stand before thee face to face.”
O King of kings, alone and speechless
shall I stand before thee face to face.”
এক একটা রাত আসে, যখন
প্রলয় অভিযানও তুচ্ছ হয়ে যায়- দুমেরু জুড়েই ওঠে ঝড়- ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য আপামর অনুভব-
ইন্দ্রিয়র উর্ধে উঠে নটরাজের তালে তালে নেচে ওঠে। এক একটা রাত আসে, যখন কেন্দ্রাভিগ
শক্তির দুর্নিবার আকর্ষণ জীবনের প্রতিবর্ত প্রক্রিয়াকে সতেজ করে। এক একটা রাত আসে,
যখন স্বপ্নের ভিতরের স্বপ্নগুলোই সত্যি হয়ে সামনে দেখা দেয়।
পনেরো বছর আগের সেই
রাত- প্রতিটি অনুপলের হিসাব লিখে আকাশের বুকে উড়িয়ে দেবার সেই রাত- এক নিশ্বাসে
একটা গোটা জীবন বেঁচে নেবার সেই রাত- সমুদ্রকেও লজ্জা দেওয়া তরঙ্গোত্তীর্ণ সেই
রাত- দেবতাদের মর্ত্যে অবরোহণের সেই রাত-
প্রকৃতির পুরুষ ও পুরুষের সম্পুর্ণতার সেই রাত। পনেরো বছর আগের সেই রাত। নিস্তব্ধ
ঝড়ের সেই রাত- রক্তপাতহীন যুদ্ধের সেই রাত-সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ের সেই রাত। পনেরো
বছর আগের সেই রাত।
একে অপরকে ফালাফালা
করার মধ্যেও যে সুখ লুকানো থাকে- যুদ্ধে যুদ্ধে আত্মহারা হওয়ার মাঝেও যে সুখ
লুকানো থাকে- আবিষ্কারের সুখ- দাবানলের সুখ- ছড়িয়ে ফেলার সুখ- হারিয়ে যাওয়ার সুখ-
জীবনের সুখ- শরীরকে অশরীরী করে তোলার সুখ- কক্ষচ্যুত সূর্যের যে সুখ- নিস্ক্রমনের
সুখ- প্রাপ্তি সুখ- সব সুখ একাকার হয়ে গেছিল সেদিন।
“My heart aches, and a drowsy numbness pains
My sense, as though of hemlock I had drunk,
Or emptied some dull opiate to the drains...”
My sense, as though of hemlock I had drunk,
Or emptied some dull opiate to the drains...”
সুতোহীন শরীরে শুয়ে অনির্বচনীয় কন্ঠে
নাইটিঙ্গেলের গান একমনে গেয়ে চলেছে সে। আমি হতবাক বিস্ময়ে- মহাবিশ্বে সাঁতার
কাটছি- বাকি রাতটুকু কেউ কোনো কথা বলি নি আর।
শরীরের এলার্মে ডাক এল
চারটে নাগাদ- নীল রাত পোষাকটা পরে কাঠের বাক্সটা হাতে রওনা দিলাম সমুদ্রের
উদ্দেশ্যে...
(৯)
কিলোমিটার দেড়েক মোড়াম
বিছানো রাস্তা-সমুদ্র সৈকতের কাছকাছি যে আগল রয়েছে- উপযুক্ত প্রহরার সঙ্গে সকাল
৫.৩০-এর আগে উন্মুক্ত হয় না।
এই পায়ে চলার পথ ধরেই
ভোর রাতে তারাদের দিকনির্দেশ বেয়ে এগোতে এগোতে অনিতা বলেছিল, “রহ নেহী সকি- ছোড় দিয়ে। ক্যায়সে
রহতি? হর দিন ওহি ঘিসি পিটি- জিন্দেগী আপনী জানে পহচানে রাস্তে সে আতি অউর যাতি
হ্যায়- কভি ভি কুছ ভি বদলতি নেহী হ্যায়- ম্যায় জিন্দেগীকে লিয়ে পেয়াসী- হর দিন
মেরে লিয়ে এক নই দিন- হর রাত মেরী নই ক্লাস রুম- জিন্দেগী শিখাতি হ্যায়, গুরু
হ্যায় মেরী- কিসি ভি হালত পে উসকে সাথ compromise কর নেহী সকতা। ইসলিয়ে ওয়াপস স্রফ- দুসরি বার।
জুড়না মেরে নসীব মে হ্যায় হি নেহী”।
জিজ্ঞাসা করতে পারি নি, “কিঁউ? Why?” প্রশ্ন করা বারণ ছিল যে। হাতটা আপনা আপনি তার
মাথায় উঠে গেছিল। হঠাত ঘুরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কেয়া মিলা তুমহে শাদী করকে? খুস হো? তো ফির
কিঁউ আতে হো বার বার বুলানে সে? Do not lie to me! Tell me!”
হাসলাম- প্রথমে মৃদু- তারপর উতচকিত স্বরে-
কতোদিন এ ভাবে হাসি নি- হাসিটা বন্ধ হলো হঠাত, কিন্তু মুখের কোণে ঝুলতে থাকল, চোখ
তখন সামনের একটা নুড়িকে পরম যত্নে লেহন করছে।
“জওয়াব দো? তো ফির কিঁউ- দশ সাল
পহলে মুঝে ঠুকরাহে থে? Why didn’t you take the chance at that time?”
শান্ত স্বরে উত্তর দিলাম, “Do you
think that, then again also we would have the same passion for each other? You
would have run away then again also? What would I have done then? উসসে তো ইয়েহী বেহতর হ্যায় কে lifeকে সাথ পেয়ারা সা compromise
কর লিয়া
ম্যায় নে। অউর খুশ হুঁ ম্যায়। দুসরো কে লিয়ে জিতা হুঁ- আপনে লিয়ে কুছ ভি নেহী,
সিবায়ে তুম”।
“Its been
ten years since, ফির ভি বুঝদিল
হি রহ গয়ে তুম...”
সামনের দিকে তাকিয়ে আবৃত্তি করে উঠলো,
“I float in time with open mind –
A quest; a chance of riddled thought:
Infinity squared – then seek to find
An answer; pained and overwrought…
A quest; a chance of riddled thought:
Infinity squared – then seek to find
An answer; pained and overwrought…
Why me,
tell me? If I say কে no I’m not interested then again also you
won’t force. আপনে আপ কো
ভি কেয়া সচ বোল নেহী সকতে?”
চুপ করে থাকলাম, বোবার শত্রু নেই। কিন্তু অনিতা
থামলো না, “You know,
I tried to settle down. I tried to be normal like any other human being, আখের I’m also a simple girl. I do
also have certain desires; I also want to lead a life like any other normal mid
thirty girls. Why can’t I? Nobody knows… I just can’t settle down- this is the
second time it happened.” চোখ দিয়ে অজস্র ধারা নিশ্বাস বেয়ে জমে থাকা
লাভার স্রোত।
পিঠে আলতো করে হাত রাখলাম, ছিটকে গেল,
“Don’t touch
me- You know you make me weak on my knees- ইয়ে সারে তুমহারে জানে পহচানে moves হ্যায়......”
কিছু বললাম না সামনের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে
লাগলাম! হালকা ভাবে! মনটা একটা তেঁতো ভাবে ভরে গেছে- কেন পারি নি আমি? সব ছেড়ে
ছুড়ে বেরিয়ে পড়তে। কি হলো তাতে? বাঁধা পড়ে গেলাম যে...আমাকে ঘিরে সবাই খুশী হলো
কিন্তু আমি? আমিটা কোথায় গেল? কে খুঁজবে জানা নেই। কিন্তু এখন আর কোনো ভাবেই হয়
না! দশ বছর আগে কিছু করার থাকলেও থাকতো কিন্তু এখন ঋজু বড় হচ্ছে...
হঠাত পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরল অনিতা, অতর্কিতে,
“Please
take me with you, I can’t take it any more- I always wanted you, you and you
only. Rajeev and dushyant and others… they were never you. Don’t leave me
please, please.”
আর্তি আর চোখের জল মিলে মিশে মায়াবী মুখচ্ছবি
তৈরী করছে। হাতটা ধরে সামনে নিয়ে এলাম। বললাম, “তুম তো আম লেড়কি নেহী হো? You are
traveler in the road of life. You never stop, চলনাহী তুমহারি করম হ্যায় অনিতা। ম্যায় তো খালি
pit stop হুঁ তুমহারি জীন্দেগী মে। থক জাতি
হো তো ঠহর যাতি হো- দো পল কে লিয়ে। But রুকনা তুমহারী মজবুরী হ্যায়, আদত নেহি। Don’t worry
I will always be there for you. It’s not that I don’t need you- Yeah of course I do. But at the
same time both of us go in parallel Direction- sometimes in an unknown Station
we may meet, but that’s not forever. We keep on moving in our path like train
lines.”
চুপ করে শুনলো সে, তারপরে বলল, “পতা হ্যায়? দূর যাহা নজর নেহী আতে
দো লাইন ওঁয়াহা যাকে মিল যাতে হ্যায়। কভী গউর সে দেখনা। চলতে রহঙ্গে জরুর। মেরে
হুজুর-এ-আলা কা হুকুম হ্যায়! খালি কভি আগার মিল যায়ে তো তনিক শোচনা মেরে বারে মে”।
“I do that
all the time, you know?”
হাত ধরাধরি করে এগিয়ে গিয়েছিলাম ভোরের সূর্যকে
স্বাগত জানাতে। বোল্ডারগুলোর উপর দিয়ে সমুদ্র সকাশে একমনে ভৈরবী সুরে সূর্য আকাশের পোষাক পালটে দিতে
থাকল- আমরা দুই নরনারী হৃদয়কে পাশাপাশি রেখে প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে ছিলাম সেই বদলে
যাওয়া প্রেক্ষাপটের।
(১০)
আজ আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ, যেন আমারই মতো টুকরো
টুকরো কত ছবি জুড়ে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। ছবিগুলো আমি বিনা সুতোয় গাঁথার
আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছি- পনেরো বছর আগের সেই ৩৬টা ঘন্টা আমার জীবনে কিছু পরিবর্তন
ঘটালো না কিন্তু অনিতার ভীতরে পরিবর্তন এলো- আমি পরে রইলাম সেই তিমিরেই অনিতা
নিজেকে পরের ধাপের দিকে টেনে তুলে নিয়ে গেল। এক ধাপ এক ধাপ করে উঠেই গেছে- আমি তার
হিসাব রাখি নি কোনো। যখন বুঝতে পারলাম তখন কি দেরী হয়ে গেল?
চিরকুট আসতো মাঝে মাঝেই, পরের দিকে ই- মেল- স্মৃতির পাতা
থেকে সেগুলোকে হাতড়ে হাতড়ে বার করলাম-
“Tell your heart that the fear of suffering is worse than
the suffering itself,. And that no heart has ever suffered when it goes in
search of its dreams, because every second of the search is a second’s encounter
with the eternity...”
“Soul
searching is essential, always, you know?
मोको कहाँ ढूंढे रे बन्दे मैं तो तेरे पास में
न तीरथ में, न मूरत में न एकांत निवास में
न मंदिर में, न मस्जिद में न काबा कैलाश में
मैं तो तेरे पास में बन्दे मैं तो तेरे पास में…
(মোকো কাহাঁ ঢুন্ড রে বন্দে ম্যায় তো তেরে পাস
মেঁ
ন তীরথ মে, ন মুরত মে ন একান্ত নিবাস মে
ন মন্দির মে, ন মসজিদ মে ন কাবা কৈলাশ মে
ম্যায় ত তেরে পাস মে বন্দে ম্যায় তো তেরে পাস
মে)
I am trying
to fathom it। Have you ever
done it?”
“These days I am soaked in Tagore And guess what did I
get-
“…Let me for once feel that lost sweet touch
in the allness of the universe….”
in the allness of the universe….”
বুঝি নি কি করে পারছে- কোনো কিছু পড়া এক আর সেটা আত্মস্থ করা আরেক- মেয়েটাকি
সাহিত্য আর দর্শনকেই জীবন করে ফেলল নাকি?
“Celebrating
Independence Day at 13000 km above the sea level, is an experience indeed. It’s just that you are bound to board
the train to the clouds. You cannot breathe properly but whether it’s due to
lack of oxygen of excess of happiness can’t really explain.....”
এটা যখন এলো তখন ভাবলাম ভালো- পর্যটক? সেটা খারাপ না-
কিন্তু তাহলে আমি কি? এখন কি করছি? অনিতা কতদূর গিয়েছে তাহলে? সেখান থেকে আমাদের
দিকে দেখলে কি মনে করছে সে?
“Waiting is painful. Forgetting is painful.
But not knowing which to do is the worst kind of suffering. You know?”
হ্যাঁ আমি জানতাম- কিন্তু অনিতা কি জানতো যে
যেটা সে করছে সেটা ঠিক না ভুল? যখন যেমন খুশী তখন তেমন করার স্বাধীনতা পেয়েছে বলে
জীবনের কোনো উদ্দেশ্য থাকবে না? ঘুরে ঘুরে বেড়ালাম চিন্তাহীন হয়ে আর দিনের শেষে
হাতে পড়ে থাকল পেন্সিল- নাকি সেটুকুও থাকল না।
এদিকে যে অনিতা সবার অলক্ষে নিজেকে আরও আরও
বাড়িয়ে নিয়ে চলে গেছে এমন একটা জায়গায় যার ব্যপ্তিকে ধরার বা ছোঁয়ার ক্ষমতা নশ্বর
মানুষের থাকবে না। ছিলও না। আমার তো চলছিল জীবন বেশ- চাকুরীর উন্নতি, শখের
ফোটোগ্রাফি, সামাজিক ও সাংসারিক নিশ্চিন্ততা এই সব ঘটনা প্রবাহের মধ্যে মাঝে মাঝে
এক একবার ভিতরপানে ডাক আসত- উপর দিয়েই ঘুরে চলে যেতাম। আপাত দেশোদ্ধার হচ্ছিলও
বেশ। কিন্তু জলে নামতেই বানভাসি আসতে সময় লাগে নি বিশেষ...
দীর্ঘশ্বাস পড়ল- ছ মাসের চেষ্টায় এই কটা দিন
ম্যানেজ করতে পেরেছি জীবনে প্রথম বার শুধু মাত্র নিজের জন্য। নাহ, অনিতাকে খুঁজে
পেতেই হবে- এমন কোনো মাথার দিব্যি সে দেয় নি। আমিও কি কথা দিয়েছিলাম? কথা তো ছিল
না কোনো? প্রশ্নও নয়। তবুও আজ এই আকুতি- “কোথায়
মেশে, কি আছে শেষে...”
কোত্থাও কোন চিহ্ন নেই, ছবি নেই কোনো ফাইল
দস্তাবেজ কিছুই নেই- তবু যেন প্রতি মুহুর্তেই নতুন করে এসে সামনে দাঁড়াচ্ছে সে- নব
নব রূপে- প্রতি মুহুর্তে ছায়া শরীরের মতো মিলিয়েও যাচ্ছে- কেন? কি? কোথায়? কবে?
কার জন্য? প্রশ্নের উত্তরটা সেই মুহুর্তগুলোর মাঝেই মিশে আছে।
ভোর হয়ে এসেছে- বাঁদিকের আকাশটায় তারই ঠিকানা
লেখা- পা চালালাম তাড়াতাড়ি- সূর্যের তর্পনের সময় হয়ে গেল যে।
(১১)
গেটটা পেড়িয়ে বোল্ডারের উপর দিয়ে সমুদ্রের
ভিতরে ঢুকে গেলাম! যেন রক কনসার্ট হবে- কিন্তু রাম্পে যারা তারা স্তব্ধ নির্বাক
হয়ে শুনবে শুধু এবং দর্শক আসন থেকেই সুনির্মল জলোচ্ছাসের দুর্বার তালে তালে
সুর্যের প্রভাত সঙ্গীত। কুঁড়ি ফোটা সকালের স্নিগ্ধ সূর্যের দিকে তাকালে মনের সমস্ত
গ্লানি দূর হয়ে যায় নিমেষে “ওই যে দেখ
দিনের আলো ফোটে... পূবের আকাশ রাঙা করে সোনার সূরয ওঠে......আর তো কালো নাই, মনের
কালি মুছে গিয়ে আবার মোরা ভালো- মোরা ভালো, এত আলো...”
হালকা ঠান্ডা জলের ছিটে আর ইষদোষ্ণ ইস্ত্রির
মতো সূর্যের আলোর ছোঁয়ায় সুতির শার্টের মতো মনের কুঞ্চন গেল মুছে, অনুভব করলাম- সার্থক জীবনের সারবত্তা-
আবার করে। এখনই তো দু হাতে ফিরিয়ে দেবার সময় হয়েছে। পৃথিবী যখন কলুষিত, নিপীড়িত,
তখনই তো সময় আসে তাকে নির্মল করে তোলার, সুন্দর করে তোলার। অনিতাও বলতো তো পাওলো কোয়েলহো থেকে-
“We will only understand the miracle of life
fully when we allow the unexpected to happen. Every day, God gives us the one moment in which we have
the ability to change everything that makes us unhappy. Every day, we try to
pretend that we are so happy with the world….”
সূর্যের কুসুম কুসুম আভায় ভিজতে ভিজতে সমুদ্রের সফেদ ফেনার
উষ্ণতা বুকে নিয়ে দু পকেটে রাখা কিছু পুরোনো কাগজ ছিঁড়ে উড়িয়ে দিলাম, রুলটানা
কাগজে কিছু পাতা- আমার ভিতরের কলুষ সমুদ্রকে দিলাম, সমুদ্র নীলকন্ঠের মতো আহরণ
করলো তাদের
আশে পাশের লোক জন আমার হাব ভাব দেখে একটি হতচকিত বটে কিন্তু
আমার মুখের প্রশান্তি তাদের এই নিয়ে অভিযোগ করতে দিল না বোধহয়।
খালি একটা বুড়ো মতো লোক এগিয়ে এসে ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে বলল, “মত কিজিয়ে, মা হ্যায়
হামারা”। তার দিকে তাকিয়ে আলতো হাসলাম- “নেহী করেঙ্গে- মেরা ভি হ্যায়...” ফিরে চললাম সাগরের বুক
ছেড়ে লোকালয়ের আশ্রয়ে।
স্নান করে তৈরী হলাম, একটা কাজ বোধহয় বাকি রয়ে গেছে...
(১২)
খুব সাধারণ টি-শার্ট আর প্যান্ট পরে বেরোলাম-
একটা সাইকেল যোগাড় করে- এতদিন যা ঘুরেছি সবই তো শহরে শহরে অথবা ভ্রমণকাহিনীর প্রথম
পাতায়! কিন্তু গভীরে ঢুকলাম কোথায়- ভারতবর্ষকে জানতে গেলে তো সেখানেই যেতে হবে।
কিন্তু আমার দেশকে হঠাত জানতে গেলাম কেন? প্রশ্নটা এল উত্তরটাকে নিয়ে- বেড়িয়েছি তো
অনিতাকে খুঁজতেই কিন্তু সে তো শুধু সামান্যা নারী নেই- আসমুদ্র হিমাচল তার
উপস্থিতি- দেশের সঙ্গেই তো একাত্ম হয়ে গেছে তার অস্তিত্ব।
নাকি সেই প্রশান্ত মহাপুরুষের স্মৃতি বিজড়িত
শহরে এসে তাঁর হাওয়া লেগে গেল?
“বল সমগ্র ভারতবাসী আমার ভাই...”
সেই ভাতৃত্বের খোঁজেই বেরোলাম পথে, প্যাডেলে
চাপ দিয়ে। সেই ছোটবেলায় চালাতাম শহরের পথে পথে, চোখে একরাশ স্বপ্ন আর বুক ভরা আনন্দ
নিয়ে। কিন্তু এখন তো বুক ভর্তি বিষ-বিষের ধোঁয়ায় চোখ মন সবই ধূসর হয়েছে।
অস্বস্তিটা তাড়াতাড়িই কেটে গেল- মাথায় একটা
কাপড়ের পাগড়ি বেঁধেছি- হালকা রোদের হাত থেকে সেটা বাঁচাচ্ছে বেশ- এগোতে এগোতে
সেখানে গেলাম যেখানে সমুদ্র পিছনে পরে থাকে- ভুখন্ডের বিস্তৃতি মনকে গ্রাস করে।
বেশ কিছুটা পরে যখন শহর মিশেছে সবুজে, বাঁ দিকে ক্ষেতের শুরুতে নেমে গেলাম
গড়গড়িয়ে।
কয়েকটা আলপথ ক্ষেতের এদিক ওদিক দিয়ে শিরা
উপশিরার মতো গিয়ে মিশে গেছে যেখানে সেখানে যেন একটা বসার জায়গা মতো আছে- যার উপর
কয়েকটা আধবুড়ো লোক বসে আছে- ভাষা কতটা বুঝবে জানা নেই- কিন্তু হাত জোড় করে নমস্কার
করে মৃদু হেসে চায়ের মুদ্রা দেখাতেই দুয়েকজন বুঝতে পেরে দিক নির্দেশ করে দিল ডান
হাত তুলে, “আরুন্থুনগায়া, নেরা পোয়ি
ইত্যাদি ইত্যাদি...” বুঝতে পারলাম চায়ের দোকান ডান হাতেই কিছু দূরে-নিত্যানন্দে
প্যাডেলে চাপ দিলাম।
শহরের কাছেই প্রদীপের তলার অন্ধকারের মতো এই
গ্রামটায় আলো বিশেষ এসে পৌঁছয় নি। তাই সাইকেলে চড়া সম্পূর্ন অন্য রকম দেখতে ময়লা
ধূলো মাখা জামাকাপড়ে পাগড়ি পড়া অদ্ভুতদর্শন আধবুড়ো লোকটিকে দেখে অনেকেই অবাক চোখে
দেখতে লাগল। মনে পড়ে গেল মাঝে সাঝে ছোটবেলায় খেয়াল বসে- বহুরূপী সেজে পাড়া বেরোতাম
তখন এভাবে তাকাতে দেখেছি লোককে- তবে সেটা অবজ্ঞার দৃষ্টি ছিল আর এটা কৌতুহল।
কতগুলো বাচ্চা আমার সাথে জুটে গেল- আমি সাইকেল থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে ওদের সঙ্গেই
চলতে শুরু করলাম হাসির উত্তরে হাসি দিয়ে। চায়ের দোকানে আপ্পায়ন করে বসিয়ে বেশ দুধ
দুধ কিন্তু কালো কালো একটা কিছু দিল- চুমুক দিলাম- অন্য সময় হলে অস্তিত্ত্ব ঘুলিয়ে
উঠতো কিন্তু এখন তো সে নিজেই একগাদা প্রশ্নের সম্মুখীন- তাই হাসি মুখের আনন্দে
হাসিমুখেই চুমুক দিয়ে চললাম।
গোল গোল বড় বড় থালায় ধোঁয়া ওঠা ছোট্ট ছোট্ট
ইডলি ছিল কিছু চাটনি দিয়ে তাই মুখে দিলাম! খারাপ নয়! বাচ্চাগুলোকে ডেকে দোকানিকে
বললাম, তার ‘ইন্ডিরি পিন্ডিরি’ শুনে বুঝলাম খুব আপত্তি।
কিন্তু আমার হাসিমুখের আর বাচ্চাগুলোর আনন্দোচ্ছল উপস্থিতির জয় হলো শেষ পর্যন্ত।
তারাও খেল কবজি অব্ধি চাটনি মাখিয়ে! তারপর হাতটাত ধুয়ে টুয়ে নিয়ে গেল- একটা
চালাঘরেরে সামনে। এটা স্কুল, কিন্তু ছাত্র ছাত্রীরা বিশেষ আসে না। সর্ব শিক্ষা
অভিযানের গতিপথে এই স্কুলটা হয়ত পড়েছিলো কখনো- তাই ব্ল্যাক বোর্ড আর চেয়ার টেবিলের
অস্তিত্ত্ব টের পাওয়া যায়।
একজনই শিক্ষক, একটু ইংরাজী জানে বোঝা গেল। আধ
ভাঙা তামিল মিশ্রিত ইংরাজিতে যা বলল তাতে বুঝলাম- আশা এখনো রাখে! বছর খানেক আগে এক
ম্যাডাম এসেছিল। সে নাকি বলেছিল সাহায্য নিয়ে আসবে- কিছু দিন পরে ফিরে আসে অনেক
খাতা পেন্সিল বই পত্তর নিয়ে, কিন্তু তারপর আর কোনো খবর পায় নি। বুঝলাম ঠিক
জায়গাতেই এসেছি। কোনো কথা দিলাম না কিন্তু সঙ্কল্প তৈরী হতে সময় লাগলো না বিশেষ।
পথখানা যে ধীরে ধীরে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে- আবছায়াটা সরতে শুরু করেছে। বেশ অনেক্ষণ
ধরে অন্ধকারে তাকিয়ে থাকলে সবই যেমন চোখ সওয়া হয়ে যায় তেমনই।
ফিরে আসার আগে “রুচিয়াকা ইরুক্কুরাধু চাভায়াগায়া(খাবার খুব
সুস্বাদু ছিল)(যদিও আমি তামিল জানি না তবুও মানেটা জেনে নিয়েছিলাম)।” বলে রওনা দিলাম আমার
যজ্ঞস্থলের দিকে। সন্ধ্যা হতে তখন ১ ঘন্টা বাকি- বারো তেরো কিমি পথ পৌঁছবার রসদ
সংগ্রহ করা হয়ে গেল তো। যাত্রা শুরু অনেক আগেই হয়েছে- এখন পথটা তৈরী করা শুরু
করলাম আপন মনে। মনের মধ্যে তখনো দুটো চোখ- মায়াভরা চাউনি দিয়ে সর্বক্ষণ আমার দিকে
তাকিয়ে আছে- আমার মনও তো তৃষিত তার জন্য।
(১৩)
বয়স বলে একটা বস্তু আছে আমাদের শরীরের আনাচে
কানাচে- চেরা গাছের গুঁড়ির দাগের মতো জড়িয়ে থাকে। সেটা একটু জানান দিচ্ছিল বটে,
কিন্তু সে তো কষ্ট করতেই হয় কেষ্ট পেতে গেলে- আর এ তো স্বয়ং বিশ্বরূপের কথা-
অস্তিত্বের প্রশ্ন। অনিতা নিজের শরীরটাকে টান টান রেখে গেছিল বরাবর- মাঠে ঘাটে
পাহাড়ে সমুদ্রে অবাধ গতি ছিল। কিন্তু আমার তো সে গল্প নয়-প্লাষ্টিক সভ্যতার
কৃত্রিম হাওয়া বাতাস শরীরে ঘুন ধরিয়েছে- বহু কষ্টে বাইরের চাকচিক্য ট্রেডমিল,
এবক্রাঞ্চ ইত্যাদির মাধ্যমে বজায় রেখছি বটে কিত্নু ভিতরটা তো ঠন ঠন করছে। তবে
এতদিন পরে শরীরের কোণে কোণে কিছু মাল মশলা সঞ্চিত হচ্ছে- তার তো একটা মাসুল আছেই।
ঘুম এলো শরীর জুড়ে- মন জেগে রইলো নিরন্তর।
মনের মাঝের চোখ দুটি বলে উঠল, “পেয়েছ কিছু?”
শরীর উত্তর দিল না, মন বলল, “অতই সোজা? যা চেয়েছি পেয়ে গেলে
তো হয়েই যেত। কিন্তু এই তো সবে শুরু-আরো কতো যে পথ যেতে হবে তার ইয়ত্তা আছে?”
চোখ বলল-“পাবেই কি?”
মন বলল, “সে নিয়ে ভাবি নি তো-পথের শেষে কি আছে ভাবতে
গিয়ে চলার পথকে দেখব না, শুনব না, অনুভব করব না? তুমি কতোদূর পেয়েছ?”
সে বলল, “পাব বলে তো চলি নি, চলতে চলতে পেয়েছি কিছু,
হিসাব রাখি নি তার”।
মন বলল, “ আমিও তো কবে হিসাবের খাতা কুলুঙ্গীতে ভরে
চাবি ফেলেছি নিরুদ্দেশের নদীতে- শুধু চলছি এবার। পিছনে কিছু নেই সামনেই সব আছে”। চোখ বলল- “আমি সেই নদীতেই গা ভাসিয়েছি
জোয়ারের টানে-উদ্দেশ্য তো ছিল না কিছুই-দ্বিধা যা কিছু ছিল তা তো কবেই জলে ভেসে
চলে গেছে অতলের আহবানে”।
“ফেরার পথটুকু চিনে রেখেছ কি?” মন জিজ্ঞাসা করে।
চোখ হাসে তার দু চোখ ভরে- “ফেরার পথটা চিনে নেবার জন্য তো
তুমি আছ মন, তাই তো তুমি আসছ সেই পথ বেয়ে- আমি আর পিছনে তাকাই নি কখনো। আমি জানি
তুমি আমায় চিনে নেবে ঠিক, নিজেকেও। এখন ঘুমাও-নিশ্চিন্তে- পথশ্রম মুছে যাবে। কাল
আবার সেই দাগহীন পথে চলা”।
মন বলল, “তোমার চোখের মাঝেই আমার বিশ্রাম তোমার চোখ
জুড়েই আমার পথচলা শুরু হবে কাল”।
ধীরে ধিরে মন দু চোখের মাঝে মিলিয়ে গেল। শরীর
তো সেই কখনই নিশ্চিন্তির পথে রওনা দিয়েছে।
পর দিন সকালে উঠে, বসে রইলাম খাটের উপর বেশ
কিছুক্ষণ গত চার পাঁচ বছর ধরে যে ভাবটা ধীরে ধীরে ডানা মেলছিল, সে আজ নিদাঘের দিকে
রওনা দিয়েছে।
(১৪)
চিঠিগুলো এলো মেলো ছড়িয়ে আছে খাটের এদিক
ওদিক- শেষের দিকের গুলো একটু অন্য রকম ছিল যেন। অনিতা কি সেই খোঁজা সম্পূর্ণ
করেছিল? অন্তত ওর কথায় তো সেই রকমই মনে হতে শুরু করেছিল। রূপান্তরটা ক্ষুদ্র
মানুষের পক্ষে অসম্ভব ছিল কিন্তু ক্ষুদ্রতার মাপকাঠিতে অধ্যাবসায় ও সদিচ্ছা যোগ
করলে তো পরের ধাপে ওঠা যায়। পরের, পরের, তারও পরের ধাপ।
“Self
happiness is the key. At the end of the day if you stand in front of the mirror
and ask a question, ‘Are you happy?’ If the answer is yes, you will get it from the inside. And if it
is no, the quest goes on. So I always listened to my inner self. I think I am
closing in, these days.”
কৌতুহল জাগিয়েছিল- মনটা তো মরে গেছিল, না কি?
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সবই যায়, সময়, কাল থাবা মারে প্রতিটি কোণে, মনেও। কিন্তু অদম্য
প্রকৃতিকে challenge
জানিয়ে
আবার মন জাগানিয়া গান গাওয়া সহজ তো নয়। পারলো কি করে?
“The
worldly endeavor never winds up with the glaze and ornamentation of the
surface. Dig dip; go to the crater to find the true meaning of life.
I have
seen it all, at least what I could but the journey never ends. To know yourself
you need to know the world- to no your country you need to step over from the
highway- go to the place where there wont be any man made route- no trace of
the way.
Pick up a
dead and hard branch in your hand, shove it clean it and then with your own
footsteps start exploring the unknown. Go there, where no human has dared to go
and pave the way for the future. That will be your destiny.
If you
succeed, then only you will be able to control your destiny. Next step is
always somewhere near you. But you need to find it hard with conviction…”
দীর্ঘ চিঠিগুলো আসতো আমার অবসর সময়ের পাথেয় নিয়ে।
কিন্তু জাল ছিঁড়ে বেরোবার চাবিকাঠিটা তো অনভ্যাসে ভুলে গেছি- তাই অপেক্ষা, অপেক্ষা
আর অপেক্ষা। অপেক্ষা করতে গিয়ে হাত থেকে বিশেষ মুহুর্ত বার বার গলে বেড়িয়ে গেছে
হাতের ফুটোগুলোকে ঢাকতে পারি নি বিশেষ।
কৃত্রিম মোড়কে হাত ঢেকেছি, কিন্তু তাতে
বাস্তবকে অনুভব করতে পারি নি। অবশেষে বুঝলাম- “যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে রইব কতকাল...”
কিন্তু এই বোঝার সময়টুকু যদি একটু আগে আসতো-
আফশোষ করার জায়গাটুকু থাকত না। যাকগে, যা চলে গেছে তার পথেই যখন বেড়িয়েছি তখন মন
আর পায়ে বেড়ি বেঁধে রাখি কেন?
ঊঠে পড়লাম- মিনিট ২০ লাগলো প্রস্তুত হতে।
বেড়োলাম- নিজেকে চিনতে এখনো কিছুটা বাকি
যে।।
(১৫)
প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর সেই শেষ পাথরটায়
ফেরীঘাট থেকে লঞ্চ যায়। রুকস্যাকটা পিঠে নিয়ে চড়ে বসলাম তার একটাতেই মুখে এখন
খোঁচা খোঁচা চার দিনের না কামানো দাড়ি, তাতে নুনের আধিক্য বেশী। এ কদিন ডিওডোরেন্ট ছাড়া প্রসাধনী
বিশেষ ব্যবহার করি নি, তার প্রভাব ত্বকের উপর পড়েছে। পরশু দিন একটা ফতুয়া মতো
জোগাড় করেছিলাম গেরুয়া রঙের, সেটার সঙ্গে বহু যুদ্ধের সঙ্গী জিনসটা- পায়ের চপ্পলটা
ধূসর হয়েছে কিন্তু মন যে আবার সবুজ হচ্ছে। রুকস্যাকে এখন শুধু বাক্সটা আর কটা
বিস্কুটের প্যাকেট।
কালকের পাগড়িটা বড়ই জবরজং হয়েছিল- প্রকৃতির
মধ্যে মিশতে গেলে- নিজের আলাদা অস্তিত্ব রাখতে নেই। তাই আজ একটা কাপড়ের টুপি জোগাড়
করে ছিলাম- যে ছায়াটা আমার গত পঞ্চাশ বছর ধরে সঙ্গ দিয়েছে সে আজ অচেনা হয়ে গেছে।
লঞ্চে চাপলাম-সমুদ্রের বুক চিরে এগোতে
থাকলাম- সূর্যের রশ্মি পড়ে সোনার জলের ছোঁয়া নিয়ে আমার তরী এগিয়ে চলল গন্তব্যের
দিকে। এই কি সেই মহানায়কের পথ? যে পথে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন ভারতের ভূত ভবিষ্যত ও
বর্তমানের ছবি- খুঁজে পেয়েছিলেন নিজেকে? সেই পরমপুরুষ আমাদের যুগ যুগ ধরে পথ
দেখিয়ে আসছেন। কিন্তু এটা কি আমার পথ? অনিতার পথ তাহলে কি ছিল?
শেষবার যখন এসেছিল তখন বলছিল, “ দের হো গয়ি লগ রহি হ্যায়।
কিতনা কুছ কর সকতি থি but… চলো দেখতে হ্যায় কেয়া কর সকতে হ্যায়! লগ তো
রহা হ্যায় কে রাস্তা খোঁজ নিকালে। বচ্চো সে বহুত লগাও লাগতা হ্যায়, পতা হ্যায়? পর... দেশ ভরমে বচ্চোকে লিয়ে কুছ ভি নেহী। Wherever
you go you will find kids are being neglected- they don’t have enough scope to
bloom, enough
fresh air to breathe. There is no answer to why they don’t have- I try my best
to facilitate as far as possible. But it’s too little too late.”
প্রতিটি নাম না জানা জায়গায়
গিয়ে কিছু না কিছু করার চেষ্টা করেছে অনিতা- road block পদে পদে পেয়েছে, থমকে গেছে
কিন্তু থামে নি কখনো- সামান্য বিরতি, আবার
ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
ভাবতাম করছেটা কি মেয়েটা- ছোঁবার চেষ্টা করি
নি যে কখনো মন থেকে। অথচ দেখতে পাচ্ছি আমার সারা জীবন জুড়ে পেনের ডগা দিয়ে আমার
আত্মাকে ছুঁয়ে গেছে মেয়েটা, আকারে; স্বাকারে; সর্বত ভাবে।
পৌঁছে গেলাম মহানায়কের প্রার্থনা স্থলে। একটু
এদিক ওদিক ঘুরে দেখা- সারা ভারতের স্থাপত্য শৈলীর মিশ্রণে গড়ে উঠেছে-সারা ভারতের
জল এসে মিশেছে এখানে। সারা ভারতের চিন্তাধারা।
তন্ময় হয়ে গেছিলাম বিশালত্ব দেখে- বাস্তবে
ফিরে এলাম শারিরীক ক্ষুধা ও তেষ্টায়-সূর্য তখন আস্তে আস্তে পশ্চিম পাড়ের দিকে পাড়ি
দেবার প্রস্তুতি শুরু করেছে- জাগতিক প্রশ্নগুলো আস্তে আস্তে মিটে গিয়ে আত্মিক ও
আধ্যাত্মিক অধরা প্রশ্নরা এদিক ওদিক মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।
কে আমি? আমি কে? কেনই বা? কোথা থেকে এসেছি?
কোথায় যাব? আমার অস্তিত্ব এবং অনস্তিত্ব পৃথিবীর গতি পথকে কোনো দিকে চালিত করবে
কি? নাকি মুষ্টিমেয় কয়েকজনের ভবিষ্যত পরিকল্পনার চাবি আমি সযত্নে লালন করে চলেছি?
মুষ্টিই কি শুরু এবং শেষ? নাকি সারা শরীর চালিত হয়ে মন থেকে? মনের কতটুকু জানি?
জানলেও সেইটুকু কতটা ব্যবহৃত? মনের লুপতপ্রায় সুপত অংশগুলো যদি তুলে আনতে পারি
তাহলে আমার ভবিষ্যত কতটা বদলাবে? ভবিষ্যত কি? সেটা নিয়ে ভাবাটা কি দরকার? কতটা
দরকার? নাকি বর্তমানকে যদি নিয়ন্ত্রন করতে পারি তাহলে ভবিষ্যত দেখা যায়? দেখা যায়
কি সত্যি?
অনিতাও শেষের দিকে হয়তো ভবিষ্যত দেখতে শুরু
করেছিল। শেষ চিঠিতে লিখেছিল তাই,
“I started late, as I could
not understand what I really want. Look at this. In the first sentence itself
there are three ‘I’s. If we forget to open our eyes and concentrate on these ‘I’s,
then the destruction starts. Throughout my life I have never felt the need to
open my inner eyes, except for the last few years…
Lots of efforts have been put
in to change the environment we live in and we don’t also. I did not want to do
it outside my country as we do live in a vast nation, each corner of which is
different from the other.
But my mind and body are not
working in tandem anymore. As I was never very caring about me. The mind though
is still young and fresh and can go further and dig dip. But body has started
to give signal that it is falling apart. This human body may not live to see
the changed world, but my mind will exist.
You already know that I have
given my mind to you and it’s a part of you now. Do me a favour, whenever you
get time to breathe, please do some soul searching. Try to find out who you
are? What is the relevance of your existence?
Do it at your own time and
never hurry. I am sure, with your patience and intelligence; you will be able
to see your inner self no sooner than later. Then decide your own path.
Completely forget what I have done and what you needed to do in that regard.
It’s your path, your destiny. Be noble to your own destiny and search for it.
That will bring peace to my soul, who is always watching you and feel your
presence near it.
Do remember, when ‘I’ become ‘We’
and ‘My’ become ‘Our’, then you are at the right path.
Good bye. Good bye my dearest, but just
for the time being. See you somewhere later. May not be too soon, but definitely will.
Yours only
Anita.”
কাগজটা এখন আমার হাতের মুঠোয়- নাকি মুঠো গলে
উড়ে গেছে আগেই- হাতের মাঝে অনুভবটা তো নেই। একটা অব্যক্ত অনুভুতি সারা শরীর জুড়ে। প্রতিটি
রক্তবিন্দু অনিতাকে স্পর্শ করতে পারছে। মস্তিস্কের কোষগুলো হৃদয়ের অলিন্দরা প্রতি
মুহূর্তে ছুঁয়ে আছে তাকে। এতো সাধারণ নশ্বর প্রেম নয়, এ যে অন্য কিছু, অবিনশ্বর
কোনো ভাবনা বিদ্যুচ্ছটার মতো দিক বিদিক দিয়ে আমাকে আষ্টে পৃষ্টে বেঁধে ফেলেই
ততক্ষণাত ছুঁড়ে দিচ্ছে মহাশূন্যে, মহাকাল মাঝে, মহাবিশ্ব ছাড়িয়ে।
কতক্ষণ?
কতক্ষণ ছিলাম এভাবে? দু সেকেন্ড? পাঁচ? তিন মিনিট? সাত ঘন্টা? নাকি এক জীবন
পুরো? চোখ তুলে তাকালাম ডান দিকে- অস্তাচলে গেলেন রবি- শেষ লঞ্চ ছাড়বে মিনিট পনেরো
পরে। কাল আমার ফ্লাইট- আমার খুঁটে খাওয়া কর্তব্যপরায়ন জীবনের উদ্দেশ্যে পাঁচটা মিনিট চুরি করে নিয়ে
সোজা এগিয়ে গেলাম প্রাচীরের ধারে- বিশাল মহাসাগরের দিকে মহানায়ক এখানেই দাঁড়িয়ে
অনুভব করেছিলেনঃ
শৃণ্বন্তু
বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রাঃ --
আয়ে ধামানি দিব্যানি তস্থু
বেদাহম এতং পুরুষং মহান্তং
আদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাত
তমেব বিদিত্বাতিমৃত্যুমেতি
নান্যপন্থা বিদ্যতে অয়নায়।
আয়ে ধামানি দিব্যানি তস্থু
বেদাহম এতং পুরুষং মহান্তং
আদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাত
তমেব বিদিত্বাতিমৃত্যুমেতি
নান্যপন্থা বিদ্যতে অয়নায়।
সেই আদিত্যবর্ণ দিব্যকান্তিকে আমিও অনুভব
করতে শুরু করলাম- এযে আমার ভিতরের আমি- এই আমিই তো আমাকে সারা বিশ্বের মাঝে
প্রতিষ্ঠা করেছে। কত কাজ বাকি পড়ে আছে- অর্ধেক জীবনও ক্ষুদ্র সে তুলনায়। অনুভব
করতে পারলাম, অনিতাকে খুঁজতে গিয়ে, তার অনুভবকে খুঁজতে গিয়ে আমি তো আমাকেই খুঁজতে
শুরু করলাম। একটু একটু করে যেন চিনতে পারছি- সারা জীবনের প্রশ্নগুলো, যে গুলো
এতদিন ছায়ার মতো আমার চোখের সামনে চলাফেরা করতো- ছুঁতে পারতাম না। সেগুলো লাল কালো
সাদা নীল সবুজ রঙ নিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এক একটাকে নিয়ে ইচ্ছা মতো তার উত্তর
খোঁজার এই তো শুরু। আমার জীবন, আমার ক্ষুদ্র মানব জীবন এই তো তার পথ চলা শুরু
করছে- প্রথম পদক্ষেপের জন্য পা তুলেছে...
প্রাচীরটাকে দু হাতে ধরে হাঁটু গেড়ে মাটিতে
বসে ছিলাম- চোখে বোধহয় কিছু পড়ে ছিল। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। কাঁধে একটা জাগতিক
হাতের স্পর্শে ঘুম ভাংলো।
চোখ তুলে দেখলাম- অমৃতবর্ণ এক পুরুষ সুগভীর
চখে মায়া ভরা চাহনী নিয়ে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে- সেই স্মিত হাসি, কেশহীন মাথার
পিছনে যে দিব্য আভা- শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন “ওয়াপস জানা হ্যায় না?”
যেতে তো হবেই ভারতবর্ষের মূল ভূখন্ডেই তো
আমার কাজের শুরু। হাতটা ধরে উঠলাম- শক্তি ছিল না। সেই দিব্যকান্তি পরিব্রাজক আমার
দুটো কাঁধ ধরে বললেন, “চলে?’
ফিরে চললাম। কাল ফ্লাইট আমার সেই খুঁটে খাওয়া
কর্তব্যপরায়ণ জীবনের উদ্দেশ্যে, কিন্তু এবার আমি একা যাচ্ছি না। আমার সঙ্গে আমার
ভিতরের আমিটাকে নিয়ে যাচ্ছি। যে এখন সদা জাগ্রত- ব্যস্ততার মধ্যেও সময় করে নেবে
নিজের জন্য আমাদের জন্য আমাদের সকলের জন্য।
বাক্সটাকে খুলে চিঠিগুলো উপুড় করে দিয়ে জলে
ভাসিয়ে দিলাম- আমার মনকে মহাসাগরে বিলীন করে ফিরে চললাম।
অনুভব করলাম, অনিতা হাসছে। আমার আনন্দে
আনন্দিত হয়ে। সেই চোখ জোড়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “মিলা কুছ?” মন বলল, “সব কুছ, নিজেকে হারিয়ে তোমাকে খুঁজতে গিয়ে
সঙ্গে আমাকেও খুঁজে পেলাম যে”। মন, মনের মাঝের চোখ, দুজনেই হেসে উঠল, নিঃশব্দে।
বাইরের চোখ তুলে সূর্যাস্তের শেষ বিন্দুটিকে সযত্নে মনে রেখে দিতে দিতে অনিতার
দিকে তাকিয়ে গেয়ে উঠলাম
“জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে
বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে...”
(দাগ দাল্ভি, পাউলো কোয়েলহো এবং উপনিষদের
কয়েকটি কোটেশন ব্যবহৃত। তবে বেশ কিছু স্বরচিত!)
সুচিন্তিত মতামত দিন