পলাশ কুমার পাল - মায়াজম

Breaking

৩০ সেপ, ২০১৬

পলাশ কুমার পাল



                              এই দেখ




এই দেখো। দেখো, বেশ ভালো আছি! চোখে জল নেই আর। বুকেতে পুষেছি খুশি। চোখে জল নেই। দু'হাতের আঙুলে অশ্রু মুছেছি। আঙুলে আঙুল ঘষে অশ্রু-ঘ্রাণ ভুলেছি!
এই দেখো। নিত্য মুখবইয়ে লেখনী হাঁটে না। মুখটাও লুকিয়েছি! কথা থেকে দূরে নীরবে তোমারেই এঁকেছি। নীলরঙের স্কেচে কাব্যময়তা; হৃদয়ের ফুল সাজিয়েছি। তুমি কনে, আমি বর -নিরুদ্দেশে ভেলা ভাসিয়েছি!
এই দেখো। দেখো, আমি নেই আর! 'নেই নেই' থেকে বহুদূরে। 'আছো আছো' তুমি সদা স্পন্দন... অভিমান গেছি ভুলে!
এই দেখো। অভিমান নেই আর। এখন তোমাতেই অধিবাস। তুমি খুশি থাকো যেথা, সেথাই মোর বসবাস! 'ঘর নেই' বলব না আর। 'সাথী নেই' বলব না! 'তুমি আছো বড় কাছে, বড় কাছে তুমি অচেনা!'
এই দেখো। রাত নেই আর! এই দেখো কতশত আলো- মিটমিট করে জ্বলে, আকাশে চুমকি সাজালো।
এই দেখো। রাত নেই আর! দিনেতে খুশি ছড়ানো। সেদিনের দেখা, সেদিনের হাসি আজো হাসে বুকের নন্দনে; নন্দন আর নাই বা এলো! সেদিনের কথালাপ ঐ পাখা মেলে ওড়ে, কাব্যময়তায় সিক্ত। বাদল ছায় যদি ছেয়ে যাক নীলে; বৃষ্টিতে ধুয়ে যাক সব রিক্ত!
এই দেখো। আজও বিকাল হাসে; আজও খোলামাঠে আড্ডাতে কতজন। আমি একটু দূরে জানলাতে অস্ত দেখি; খুঁজি তোমারে স্বজন... কিছু পাতা ঝরে যায়, সব পাখি ঘরে ফেরে- মৃদু হাওয়াতে যেন তোমাকেই ছুঁই; বিষাদে যখন খুশিরা ঝরে। খুশি হয় ভুঁই!
এই দেখো। বেশ ভালো আছি! ভালো আছে মোর একলা বসবাস। অশ্রু সব মুছেছি। সন্ধ্যার প্রদীপে ঘর আলো। ধূপের গন্ধে সম্পৃক্ত শ্বাস।
এই দেখো। চোখে জল নেই। আঙুলে আঙুল ঘষে সব মুছেছি। ঘুমহীন রাত্রি স্পন্দিত হয়ে যায়... স্বপ্নেতে বাগান রচেছি! তুমি-আমি হাঁটি সেই পথে আজও; ঘুমহীন নূপুরে যেথা বাদ্য বাজে। বুকেতে বালিশ চাপি না আর; কান্না সাজে না আর কনে সাজে!
এই দেখো। কত ভালো আছি! কত নিদ্রাতে ভেসে যাই দূর থেকে বহুদূরে... একতারা বাজে আজ, বাজে একলা বাঁশি নীড়ের ভিতরে... বুকেতে কিল মারি না আর। অশ্রু দেখি না আঙুলে ছুঁয়ে। আয়নাকে যে কান্না ভেজাত সে শ্রাবণ গেছে হারিয়ে!
এই দেখো। আজ কত জোনাক জ্বলে; রজনীগন্ধাতে রাতের খোঁপা বাঁধা। ধড়পড় করে আর জেগে ওঠা নেই; বৃষ্টিতে মিইয়ে গেছে সব বাঁধা! তুমি-আমি দূরেতে নই; বড় কাছাকাছি মরমেরই ভাষা! হাতে হাত রেখে কল্পনা সাজাই; পার্কেতে ছাড়াই বাদামের খোসা...
এই দেখো। আজও দুই মোবাইল। রিং বেজে যায় আদি-অন্ত... নিরুত্তরে অণুগল্প লেখা হয়; অভিমান যে বড় শান্ত! অভিমান নয় গো সত্যি; বার্তাতে লেখা প্রেমেরই নানা ভাষা। নীরবেতে সব ফসিলস্ হয়; টিক্ টিক্ করে ঘড়ি, অনন্ত আশা!
এই দেখো। আশা আজও সত্যি নেই! আশা শুধু তোমারই পলা ও শাঁখা। মাটি খুঁড়ে যাই নিজ ভূমিতে, শিকড়ে বুনতে চাওয়া উপকথা...
এই দেখো। আজও সাইকেল দুই প্যাডেলে কর্মজীবন। পথে শুধু তুমি তুমিময় প্রতিধ্বনি... চোখে জল আনা ভুলে গেছি সত্যি! বাতাসে নিত্য তোমারই উলুধ্বনি...
এই দেখো। ঘুমবড়ি খাই না গো আর। অনন্ত ঘুম ডাকে 'আয় আয় আয়...' আমি শুধু ঘুমোবার আগে তোমার ঠোঁটে, সে ডাকনাম শুনতে চাই! জানি না ডাকবে কিনা! না ডাকলেও নেই কোনো ক্ষতি! এ হৃদয়ে দুঃখ অভিধানহীন। তোমার খুশিতে নিবন্ধ রচি!
এই দেখো! আজ মিথ্যা নয় কিছুই! সত্যের ছলে মিথ্যা কই? অবান্তর এই প্রশ্নটা। ছাতনাতলাতে খুশিই তো খই! হয়তো একটু ভুল হয় কাজে মোর, হয়তো কখনো আঁখি ছলছল! জেনো, সে তো আনন্দ-অশ্রু; তোমার খুশিতেই টলমল..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র