তানিয়া চক্রবর্তী - মায়াজম

Breaking

৩১ মার্চ, ২০১৭

তানিয়া চক্রবর্তী

                        গর্ভপুষ্প থেকে...




তিনি মাটি ভেদ করে
পৃথিবী ও পুরুষকে অভিমান দিলেন
তিনি নিজের লাঞ্ছনায়
দেশজ মানকে উদবর্তন শেখালেন
তিনি সন্তান পিঠে নিয়ে
যুদ্ধকে অঙ্গীকার বোঝালেন
তিনি নিজেকে ভুলে
বাৎসল্যের অশ্রু মুছলেন
তিনি বুঝিয়ে দিলেন স্তন্যপায়ী ধারক বলে
যন্ত্রণা তাকে দশমাসে দুর্বল করে---
#
এসো,ক্রিয়া থেকে ক্রিয়া অবধি
বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ অবধি
কাজল থেকে লিপস্টিক অবধি
জন্ম থেকে গর্ভ অবধি নারী
---ধারক, ধারক, ধারক
তাকে শ্লীল হতে বলো না কখনো!
শ্লীল একটি উপমা, যা দিয়ে ভাষা
ভাষাকেই অপবাদ শেখায়---
গর্ভপুষ্প থেকে খসে যাচ্ছে কলঙ্কের স্তর
সেই স্তরে জন্মরেণুর মতো ডিম্ব
তাকে ঘিরে ঘিরে অজস্র প্রচেষ্টা
অথচ নিষেক কেবল “একে”
পুচ্ছ ধ্বংস হল, আবার জন্ম হল
#
যারা কোঠার নারীকে বেশ্যা বলে
তারা গুপ্তঘরের অপরাধ
তারা নির্মম হোমহীন কাপালিক
তারা তন্ত্রকে ধবংস করে আত্মহনন করে রোজ,
জন্মের পর্বই পবিত্র তালিম
তাকে অজস্র ভিড় করে ঘিরে ধরে শুক্রসেনা
অথচ একক অন্বেষণে রাজকীয় ডিম্বনারী
এককে ক্ষমতা আনো, এককে দিশা
তবেই জন্ম হবে এ ঘোর অমানিশায়
কি পোশাকে সে গঠনগত ঠিক!
যারা ঠিক করে, তারা ঘোর অর্বাচীন!
দেহজ কলায় সৃষ্ট হাত ও পা,জন্মযোনি, দুগ্ধনালী
এ দেহজকলায় জন্মে উভলিঙ্গ গড়ন
---শিশু , শিশু, শিশু
কী শৈশব মাহাত্ম্যে নারীজন্ম
পৃথিবীর জন্মপর্বে ভারসাম্য বাঁচায়!
কী দুরন্ত লাবণ্যে নারীজন্ম
পৃথিবীর ধর্ষককে ক্ষমা করে বারবার!
কী দুরন্ত সহ্যে নারীজন্ম
জন্মকে লালন করে!
#
তাই এ কম্পাস ও চৌম্বক ত্বকের
দিকে দিকে মন্দ-ভালোর লগ্নি
পূর্ণিমার আলো আর অমাবস্যার কালো
স্থূল থেকে ক্ষীণে রক্তবিছানা বাঁচে
এ অজস্র শব্দাচারে নারী থেকে খসে অলঙ্কার
কাঠামো জুড়ে তরবারি ঝুলে থাকে ললন্তিকায়
আঃ নারীজন্ম সার্বিক রক্তদাতার মতো!
অভিন্ন, একক, দৃপ্ত, ছদ্মবেশ ভঙ্গকারী ও স্বচ্ছ
আঃ এ স্বচ্ছ জন্ম
পৃথিবীর পর্দানাশক ও মহান---

২টি মন্তব্য:

  1. শ্লীল একটি উপমা, যা দিয়ে ভাষা ভাষাকেই অপবাদ শেখায়

    গভীর অণুভব।

    উত্তরমুছুন
  2. কবিতার ঘনত্ব কম হলেও বিষয় ও ভাবানুভূতির ঔজ্জ্বল্যে ভাল লাগল। এ ধরনের কবিতা বাচিক শিল্পীদের কণ্ঠে জেগে ওঠে, দ্যুতি ছড়ায়।

    উত্তরমুছুন

Featured post

সোনালী মিত্র