জপমালা ঘোষরায় - মায়াজম

Breaking

১১ আগ, ২০১৭

জপমালা ঘোষরায়

                                                        দ্বিতীয় নির্মাণ


নির্মাণ ---১
এ পাড়ায় হিন্দুর চেয়ে মুসলমান বেশী। রজত দা ওরফে শেখ রজাব আলির পরমযত্নে বানিয়ে দেওয়া তুলসীবেদীতে মা রোজ প্রদীপ জ্বালে, মায়ের পুজোর জোগানদার দিনমজুর খাইরুল। একশো দিনের কাজে যাওয়ার আগে ফুল দুব্বো মায়ের হাতে দিয়ে বলে গেল শনিতলায় বসে থাকে হিঁদুর ছেলেরা, বেলতলায় গেলে কুপিয়ে দেবে বলেছে। আর হিঁদুর বাড়ি আমি ফুল দিলে একশো রোজের কাজ দেবে না কন্ট্রাকটার বাবুমিঞা, দুই বিবি আর বালবাচ্চারা না খেয়ে মরবে। বাঁ পা হারানো অক্ষম হতভম্ব মা ওয়াকারে ভর দিয়ে নিশ্চুপ। তাঁর চেয়েও অপাহেজ সিস্টেমের পাশে দাঁড়িয়ে কপালে হাত ঠেকিয়ে বললেন "মুুক ও বধির কথা বলে, পঙ্গু গিরিলঙ্ঘন করে যায় যাঁর কৃপায় সেই পরমানন্দ মাধবকে প্রণাম"।
নির্মাণ --২
জানতাম ভাঙা হচ্ছে যখন আল্টিমেটলি সবই ভেঙে গুঁড়িয়ে যাবে। নাড়ী কেটে যখন নির্গত হচ্ছে দ্বিতীয় অস্তিত্ব, যন্ত্রণাকে মেনেই নিতে হবে। তথাপি আজ যখন শ্বেতটগর আর তুলসীবেদীর লাশ উপড়ে পাশেই পড়ে থাকলো, লাশ নিতেও এল না কর্পোরেশনের গাড়ি, আমার সারা গা ভরে গেল রক্তের ছিটেয়। কোদাল গাঁইতি চালালেন যিনি, বদরু মিঞা বা বদ্দিনাথ যেই হন আমি নির্মাণশিল্পীর কোন দোষ দেখি না। প্রত্যেক উচ্ছিন্ন ভিটের পাশে এবং সংগঠিত ভোটের পাশে থেমে থাকে যে সকল হাহা আমি তাদের মধ্যে কোন ধর্মাচার দেখিনা। আজও দ্বিতীয় নির্মাণের আগে একই স্থিতি ও অস্থিতি, একই প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তি নিয়ে সাকার ও নিরাকার দুই অস্তিত্ব, আল্লাহ্‌ এবং হৃষিকেশকে ঠিক একই সুরে কঁদতে দেখলাম ।

নির্মাণ --- ৩
মাইথন ড্যাম, দ্বিতীয় নির্মাণে, মাই অথবা স্তন, এক্সক্লুসিভ সবুজাভ পাহাড়খাঁজে জলাধারে দফনে দিয়েছে ড্যাম ড্যামেজ, ড্যামজল্ লেডি ব্যহতগমনা, ক্রিস্টাল সোডিয়াম জমে উঠছে চরায়, অথচ জল তার স্বধর্মেই বয়ে যাবে এটাই চরম এবং পরম।
বুটিক ফিঙ্গার, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ইংক মিস্টেক ফুরানো কলম এবং অফুরান কলমকারিসহ সংজ্ঞা হারানো বোহেমিয়ান মিছিমিছিগুলো হাঙরমুখ বেয়ে প্রকল্পিত জল হয়ে নেমে নেমে ফেনিয়ে যাবে অবাধ্য উছল, ছলাৎ ক্লিভেজ, লচকা কমরিয়া, ইয়ে অদায়েঁ, বাঁকপন, মারডালা গজল.... নদীর নদীত্ব পরিসরে না কি বহমানতায়? আমি স্রেফ বিলোতে বিলোতেই বিলীন হয়ে যাচ্ছি বালিঢিপি রৌপ্য মুদ্রার ছম্মকছল্লু বিন্যাসে.....

নির্মাণ ---৪
মেধার চুল চেঁছে বের করা উকুন টিপে মারছে লুকিয়ে,মেডিকার দিচ্ছে আত্মশ্লাঘায় আমি এদের জন্য একচামচ মধুও বরদাস্ত করিনা আবার মেধাবীও মানি না। অথচ চাক ভাঙা থলথলে মধুতে বায়োকেমিক্যাল মিশিয়ে বিষিয়ে এই ছুঁচ আর কার্তুজ আমাকে জীবনের বীর্য দিচ্ছে। আকরিক আমি, বীর্যেই তন্বিষ্ট থাকি। যারা প্রমাণ লোপাট খেলায় মৃত্যু নামক গারবেজব্যাগে পুরে ফেলে দিতে চাইছে নাড়িকাটা রক্ত লালানি জীবনের প্রসব এবং প্রস্রবণ, তুমুল মেঘভোর আমাকে তাদের ক্ষমা করতে শেখায়। এই সব ঘিন্ আর বিন্ ঘুমের ভিতর ফ্লাশঅন করে দিয়ে অ্যালজোলাম রাত্রির পর পাখি আর গাছেদের ফ্রিহ্যান্ডে জেগে উঠি।


নির্মাণ ---৫
এটাই হয়ে আসছে, এই রুলটানা খাতার অক্ষর বিন্যাস, ইউজ & থ্রো, অথচ মিটার মিটার লেখা হচ্ছে... কলহ আর আপোষের মাঝখানেই উত্তপ্ত ফ্রাইংপ্যান ডিম ভেজে ফেলছে অভ্যাসে, রুটি সমূহ ফুলছে দায়বদ্ধ উষ্ণে.... মেক আপ মুছে ফেলা তুলোয় ডিপ ক্লিনজিং, জানলার ব্যাপ্তি ঘেরা কাঁচে ক্লিক করে দেখলাম ডিম ভাঙা চাঁদ কুসুম ছড়িয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে আঁশটে এক দ্বিতীয় নির্মাণের দিকে.... যোনি গড়িয়ে গড়িয়ে নামছে কৃষ্ণস্রাব অন্ধকার....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র