শুভশ্রী সাহা - মায়াজম

Breaking

২০ জানু, ২০১৮

শুভশ্রী সাহা

     ওম

প্তপদী ফ্ল্যাট বাড়ির ফোরের এ তে বেল দিতে গিয়ে টুসি শরীর মোচড়াল এই এক ন্যাকাশ্বরী বউদি আছে বেলা আট টাতেও বর জড়িয়ে ঘুমোবে। বেহায়া মেয়েছেলে একটা ওর দেরী করে রোজ। থ্রির বি র বুড়ি সাতসকালে উঠে পড়ে আর ফোন করে ডাক করে মরবে-- মনে মনে রাম খিস্তি দিল এই রিংকি বউদিকে--- " বাব্বা খুলবে ত্য দজ্জা টা, ককন থেকে দেঁড়িয়ে আচি দোরের সামনে, আমার কি তুমি এক বাড়ি, আট বাড়ি কাজ কত্তি হয়, "হু"ম-- সেই পেটকাটি নাইটি পরি আচে --নিঘেত রাতের সাজ মনে মনে আবার গাল দিল, এই নাইটি টার উপর ওর খুব লোভ আছে
। 
তবে যাই বলুক দাদাবাবুর চোখের দৃষ্টি খারাপ। বারান্দায় বসে আছে আর টুসির ঝুঁকে পরে ঝ্যাট দেওয়া দেখছে। তার ভারী বুক, কোমর সরু রিংকির কি আছে! ওই তো তাল তাল মাংস আর ময়দা রঙা চেহারা, ওতে কি পুরুষ ঠান্ডা হয়! অটো স্ট্যান্ডের সুবলের কথা মনে পড়ে গেল---
এটা ওটা করে, দেয় ডিম আলু প্যাজ বিস্কুট চা পাতা দোকান থেকে গেঁড়িয়ে, ওর বউ ও খ্যান্ডারনী, মা কালী নেমে এসেছে যেন -- সুবলের কি দোষ দেবে আর! তার মানুষ টাও তো একদিন পাগল হত --এই শীত সকালে ছাড়তেই চাইত না, অর্ধেক দিন কামাই হয়ে যেত-- আর এখন সে বড় কোম্পানি ও নেই, কোন তাড়াও নেই, এটা ওটা সেটা করে, রঙ থেকে পায়খানা পরিষ্কার করা পর্যন্ত-- যখন যা পায়-- টুসির আর আলাদা করে কোন শীতের দিন নেই----
" কিরে, তাড়াতাড়ি বাথরুম ছাড় দাদা তো চান করবে" রিনকু বউদি গলার আওয়াজে সে হাত চালাল--- " দূর ছাই ওই লাল নাইটি না দেকলি পরে ওত কতা----" টুসি জামা কাপড় হাতে করে বেরোতেই দাদার সাথে গায়ে গা লাগল--টুসি সরে গেল চট করে-- দাদার চোখে লোভীর ছায়া স্পষ্ট বোঝা যায়--- টুসি কি ফ্যাকলা নাকি চাটবে-- খিস্তি দিল টুসি---

আর কাকেই বা বলবে, উপরের ওই ঢোকলা বুড়ো ঢ্যামনা কম নাকি! পাঁচের এ, শুটকি পানা বউ সারাদিন কি সব শশা ছোলা চিবিয়ে ছিলিম হচ্চেন আর বুড়ো মেয়ের বয়সী মেয়ে দেখে লাল ফেলবে-- মরণ --এদের বউদের কতো সুখী চালচিত্তির, যেন ওদের বর রা সব চোর ডাকাত বউ পাঠিয়েছে ধামসাতে--- ও তেমনি, গেল সপ্তাহে দু দিন সরুকাঠি বাপের বাড়ি গেছিল, বুড়োর দুটো গেঞ্জি কেচেই দুশো টাকা নিয়েছে, সরু কাঠি থাকলে কচু দিত, ও জানে আর মাইরি কি লোক জাঙ্গিয়া টা কাচতে দেবার সময় হাতে দিতে যাচ্ছিল--- দূর, ওর আর এ সব টানে না, ভালোমন্দ টাকা থেকলে হিসেব নিকেশ হবে, যার মাথায় ছাদ নেই, দু দুটো এঁড়ি গেঁড়ি কোলে কাঁখে নিয়ে চলতে হয় তার আবার সতীত্ব!!

অসিত যখন কারখানায় কাজ করত,তখন থেকেই সুবল ওর পেছনে ঘুরপাক খাচ্ছে কিন্তু ও কখোনো পাত্তা দিত না তার স্বামী সু রোজগেরে ছিল, ফি রবিবার মুরগীর মাংস, এটা শেটা,বাইরে দু একটা সিনেমা এগরোল চামিন ছিল তো তার ও ছিল রাতে বালাপোশের ওম ও-- গততিন তিন বছরে তলানিতে এসে ঠেকেছে, মানুষ টা নেশা ভাং করতে লেগেছে--ছেলেটার পেটে কি একটা ব্যাথা লেগেই আছে, দুই এর এ র ডাক্তার কাকু লিখে দিয়েছে ছবি তুলতে,সে আর পারছেই না টাকা জোগাড় করতে---

প্রায় শেষ হয়ে এলো, রিনকু চান করতে গেছে, ওর মশলা বাটা শেষ, ও সবজি ধুয়ে ফ্রিজে ঢোকাবে-- উপরের বুড়ি দুবার মোবাইল করেছে এরমধ্যেই, কি কুক্ষনে বুড়ির থেকে ফোন নিয়েছিল, আসলে বাচ্ছা কাচ্ছার মা কামাই হলে খবর না দিলেই দূর করে দেবে হয়ত এরা তাই বাধ্য হয়েই নিতে হয় গরীবের জ্বালা----- ফ্রিজ খুলতে যেতেই মেঝেতে কার ছায়া পড়লো---- ছুঁই ছুঁই শরীর----- " তোকে আমার দারুণ লাগে,পরশু দিন স্বপ্ন দেখেছি তুই ব্রা আর জাঙিয়া পরে দাঁড়িয়ে আছিস --আমি তোকে খুব আদর করছি---- তোর বউদিকে যেন বলিস না প্লিজ" দাদাবাবুর গায়ের গন্ধ কেমন নরম তুলোর মত ওম লাগা-- টুসি আনুমনা হয়ে গেলো --কি জানি এই বোধহয় বড়লোকেদের গায়ের গন্ধ, ওদের মত আশঁটে নয়---
" শোন না, বউদি বেরিয়ে আসবে এক্ষনি,-- তুই রবিবার সকালে আসিস ওবাপের বাড়ি যাবে, আমরা একদম একা থাকব--- তুই কি নিবি বল না, বল---আমি তোর দাদার মত"

হা হা হা-- বেশ মজার দাদা বিছানার দাদা-- টুসি মনে মনে বল্ল-- তারপর এক মুহূর্ত না ভেবেই বল্ল -- "হাজার টাকা দাও এক্কুনি, ছেলের ফটোক তোলব--- "সে জানে দাদা মাদা ঠিক দেবে--- পাঁচশ টাকার ফটোক তুলবে,আর পাঁচশো টাকায় ওম কিনবে সে একবার হলেও--- সকালে দেখা রিনকুর আশ্লেষ তাকে বড় টানছে----- গরীবের আবার ইজ্জত কি! ওরা থাক ভালো --- হাসি পেলো রিনকুর মুখ টা মনে পড়ে,টাকা পেলেই ওম কেনা যায়----শুধু শুধু লোকে তাদের মন্দ বলে!!!!



                                                                                     
                          

লেখক পরিচিতি-লেখালিখি স্কুল ম্যাগাজিন থেকে শুরু, গোখেলে পড়াকালীন প্রথম গল্প ছাপানো লিটিল ম্যাগাজিন বিশ শতকে-- তারপর টুক টাক বেশ কিছুদিন বিরতি--- আবার লেখায় হাত কিছুদিন আগে থেকে- কালের কালের কষ্টিপাথরে অমরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী সম্পাদিত--- ছাপা হয়েছে / হচ্ছে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়--

1 টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র