স্বপ্নিল
পালংকের দুই সেগুন সিংহ অমিতবিক্রমে পরস্পরের দিকে ধেয়ে আসছে। তাদের উদ্যত থাবা। উদ্ধত হাঁ। তাদের পায়ে ক' মুঠো সেগুন ঘাস দমবন্ধ থরহরি। দুধ সাদা মখমলের চাদর। গোলাপের কুচি কুচি ক্ষত। দুধ সাদা বালিশে এলোকেশীন পরিক্রমা। প্রদীপ চোখে পুরু করে কাজল। মৈনাকে হীরের নাকছাবি,। ঠোঁট পানরাংগা, লাল বা সোনালি পাড় সাদা শাড়ি। আদুড় গলায় ডোকরা হাঁসুলি। পালংকের পাশে দীপদানিতে তৃষ্ণার্ত আগুন। ধূপাধারে সুগন্ধা রজনী।
সে এল। কাঁধ অব্দি কোঁকড়া কোঁকড়া চুল। ডুবদীঘি চোখ। হিমবন্ত নাক। দৃপ্ত চিবুক। উত্তরীয় গা থেকে খসিয়ে প্রশস্ত স্থাপত্য উজাড় করে দিল এলোকেশীর উপর। আঁচল সরিয়ে নিল বইয়ের পাতা ওলটানোর মতো। তারপর ঠোঁট দিয়ে পড়তে লাগল অনাবৃত নিঝুম উপত্যকা। উপত্যকা বেয়ে ওপরে উঠে বিলাসিনীর হ্রদ- অধরে ডুবিয়ে দিল তার ক্লান্ত পথিক ঠোঁট। জিভে জিভে ঢেউখেলা আর খেলানোর রসামৃত চক্রান্ত ক্রমে ক্রমে ঘনিয়ে উঠে জেগে উঠল দুই হাংগর। সে এলোকেশীর চিবুক কামড়ে ধরল। আশ্লেষে চোখ বুজে এল কন্যের। দু ঢেউ বুকে তখন নিঃশ্বাসের বিস্ফোরণ। সে দাঁত দিয়ে লিখতে লাগল চিঠি। চিবুক ছেড়ে গলা বেয়ে লিখতে লিখতে নামতে লাগল সে। নামতেই থাকল। সেমিকোলন রাখবে বলে যখন সে নাভিতে জিভ ছোঁয়াল আর চিঠিশরীর থরথর করে কেঁপে উঠল, তখনই একটা দমকা হাওয়া এক ফুঁয়ে প্রদীপের ঠোঁটে চুমু চেপে ধরল। নিকষ। নিবিড়। পৃথিবীর আদিম নীল যন্ত্রণার ক্কাথ।
কেন যে এমন একটা পানু হয়না। কখনো কখনো পালংক থাকে তো গলায় হাঁসুলি থাকে না। প্রদীপ থাকে তো হাওয়া থাকে না। তার গায়ে উত্তরীয় থাকে তো ডুবদীঘি চোখ থাকে না নির্লজ্জ লালসা থাকে নিলাজ প্রেম থাকে না।
কেন যে পানু দেখি? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন গল্প থাকে না। মেকানিক ফ্রিজ সারাতে এল, মালকিন বুক দেখাল, ব্যস, শুরু হয়ে গেল। ছেলের বন্ধু কুমড়োফুলি আন্টি'র কাছে কফি খেতে এসে রান্নাঘরে কাজ শুরু করে দিল। আর ডক্টর - নার্স, নার্স - পেশেন্ট, টিচার- স্টুডেন্ট। কি অসহ্য বোকা বোকা। বুদ্ধিসাধ্যিহীন। পরক্ষনেই ভাবি, সূক্ষ্ম কাব্যময় নান্দনিক ধ্রুপদী ঘরানা অথচ সেটা পানু- এমন পানু কি কেউ কোনদিন করবে? কেউ না করলে তামিমৌকেই করতে হবে। কারণ, পানু দেখা তার নেশা। মাঝেমধ্যে ভার্চুয়াল চিতপুরে চিত - উপুড় না দেখলে তার চলে না।
না। চা কফি সিগারেট মদ হোলির দিনে সিদ্ধি শিবরাত্রিতে গাঁজা, অন্যের পাছুতে কাঠি করা, শাশুড়ি ননদ জায়ের নিন্দে করা
সন্ধ্যে বেলা সোপ দেখার বুদবুদ - কোন নেশা নেই। তথাকথিত ভাল নেশা কিছু আছে। বই পড়া হিজিবিজি লেখা গান শোনা ও গাওয়া। কিন্তু চোখের চামড়া টেনে টেনে নামিয়ে দেওয়ার মতো, কানের লতি লাল করার, জিভ শুকিয়ে যাওয়া কিংবা বড় করে মা কালী করার মতো বদ নেশা একটাই আছে - পানু দেখা।
বিয়ের আগে নিপাট সতীলক্ষ্মী ছিলুম। কিন্তু শাঁখা সিঁদুর পরার পরে দেখলুম মাঝেসাঝেই দুপুর হলে ঠাকুরপোরা ডাকে।
বিশেষতঃ ঋতুমতী হওয়ার অব্যবহিত আগে এবং পরে। এবং চলাকালীন। শরীরের মধ্যে আর একটা নারসিংহী শরীর মাথা ফুঁড়ে ওঠে। তখন কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ' র অবস্থায় আপনা আপনি উইন্ডো ইনকগনিটো হয়ে যায়, ডট কমে সেন্স আর এক্স ফুটে ওঠে, সার্চলাইট গাদা গাদা গোদা গোদা হদিশ দিয়ে যায়। প্রথমে 'যা পাই তাই খাই' ছিল। কিন্তু জেতে কবিদের নাক আলাদা,পেছনে ইন্দি না থাকুক, চালে গোবিন্দভোগ চাইই চাই। ঠগ বাছতে সাইট উজাড় করতে করতেই কতদিন নেট কানেকশন কেটে গেছে। চুল (মাথার) ছিঁড়তে বাকি রেখেছি। আবার কখনো মেঘ না চাইতেই সমুদ্রের ধারে নির্জন গুহায়, অরণ্যের জলসবুজ সমাচ্ছন্নতায় অযাচিত অকল্পনীয় কোন স্বর্গীয় সুরস্রোতে নিবিড়তম আর তমাকে তলিয়ে যেতে দেখে বিমূঢ় হয়ে গেছি। অবাক লেগেছে তাদের ' প্রেম' দেখে। হ্যাঁ,ষোলো আনা পর্ণাভার মাঝে প্রেম পীরিতির আকস্মিক ঝলক! কিন্তু লেডি চ্যাটার্লি' আর মেলর্সের মতো অন্ধকারে আরণ্যক বৃষ্টিস্নাত নিভৃতমগন যুগ্মক কোনওদিনও দেখিনি। হা- আ - য়।
সানি লিয়নকে যে কি অসহ্য লাগে। মিয়া খলিফা তার থেকে পদের, সবচেয়ে ভালো ক্রিসি লিন। কি জানি বাংলায় উচ্চারণটা কি হবে। ক্রিসি লিনের এক্সপ্রেশন- কেয়া কহু মেহমান কদরদান -তওবা তওবা! এর একাংশও যদি আইটেম সং আর যাত্রাপার্টিরা বাস্তবায়িত করতে পারত- একটা সত্যিকারের অকাজের অকাজ হোত। পেট দেখাব বুক দেখাব প্রায় দেখাব পৌনে দেখাব অথচ পুরো দেখাব না, কারণ আমরা siল্পী, siল্প কচ্চি, মাংস বেচ্চি না।
তা- নিকষা মাংসের কথা থাক। আশ্চর্যের কথা এটাই - নারী হয়েও আমার পানু নারীদের নামই মনে থাকে। একটা পুরুষেরও নাম বলতে পারব না। মনে রাখতেও চাই না। থুঃ। ধক নেই কারো।কারোরই ডুবদীঘি চোখ নেই। কেউ বাঁশি বাজাতে পারে না। পালকের মতো আলতো করে হামি খেতে পারে না। আবার পালংকের নকশাবাজি থেকে নেমে এসে সিংহের মত রাজকীয় ঝাঁপ দিয়ে ফালা ফালা করতেও পারে না। আবার তার'টা মিটে যাওয়ার পর যত্ন করে এলোকেশীর কানের লতি জিভ দিয়ে পুড়িয়ে দেয় না, দাবানলের ধোঁয়ায় ধূমাবতীর জ্বালাচোখে জল এলে সে মাথায় হাত বুলিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে না, ' ইরতেজা - এ - ইশক পে রোতা হ্যায় কেয়া, আগে আগে দেখ হোতা হ্যায় কেয়া',
আগে আগে আগ বাড়িয়ে যাওয়ার খেলায় চূড়ান্ত চাল চালার আগে শিখার ফিসফাস হেলনে কান পাতে সৃজনপ্রদীপ-' ইয়ে ইশক নহী আসান, ইতনা সমঝলে তু, ইয়ে আগ কা দরিয়া হ্যায়..' আগ কা দরিয়ায় সাঁতরাতে সাঁতরাতে প্রবল জ্বালাময়ী হুংকারের পর।
শান্ত সমাহিত ছাই।
মির্জাসাহাব,
মির্জা আসাদুল্লা খান গালিব,
গোস্তাকি মাফ করুণ হুজুর।
একটা পানুছবি করব।
আপনি শের হবেন?
তাতে?
সুচিন্তিত মতামত দিন