ইতিহাসে উপেক্ষিত
..........................................................................................................................................................
সব গল্পেরই নায়ক থাকে। কিন্তু যে সব পার্শ্বচরিত্ররা নায়ককে নায়ক করে তোলে , সেই সব চরিত্ররা ইতিহাসে থেকে যায় অনাদরে , অবহেলায়। কোনও উৎসাহী পাঠক কখনও কখনও তাঁদের কথা পড়তে জানতে উৎসাহী হয়ে ওঠে। অবহেলিত চরিত্র আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে পারে এই ভেবে সমান্তরাল ভাবে দুটি চরিত্রকে এখানে যতটা সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে-
খনা
..............................।
প্রাচীনকালে ভারতে খনা নামে এক বিদুষী ছিলেন। তখন অবশ্য তাঁকে তেমন কেউ মান্য করত না। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে যখন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্ম হল,কিছু কিছু বচন উক্ত বিদুষীরই রচনা বলে সাধারন মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করল। সাধারণ ত জনশ্রুতি জিনিষটা লোকমুখে পল্লবিত হতে বেশি সময় নেয় না। খনা এবং খনার বচন জিনিষ দুটোই বাঙালী জীবনে দীর্ঘকালব্যাপী পর্য্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতার সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠত হয়ে বর্তমানে প্রত্যক্ষ সত্যের আসন গ্রহন করেছে। খনার বচন ঠিক কত পুরনো তা বলা মোটেই সহজ না। তবে চর্যাপদের যুগের অর্থাৎ ৮ম – ১০ম শতব্দীর হওয়া কিছু বিচিত্র না। ডঃ দীনেশচন্দ্র সেন এইরূপ অনুমান করেছেন। এই মহিলার জীবনের সঙ্গে রাক্ষস সংস্র্রব ছিল ও উজ্জয়িনীর রাজা বিক্রমাদিত্যের ‘’নবরত্ন’’ সভার বরাহ মিহিরের সন্মন্ধ ছিল এমন কিংবদন্তি খনা সন্মন্ধে বহুল প্রচারিত। ব্যাপারটা একদিকে বাঙালীর কৃষি-বিজ্ঞানের মূলে ‘’রাক্ষস’’ নামের কোনও অনার্য্য জাতির দানের ঈঙ্গিত যেমন দিচ্ছে,তেমনি ‘’বচন’’গুলির রচনার সময়ের সঙ্গে রাজা বিক্রমদিত্যের সময়ের আভাষ দিচ্ছে। খনা ও খনার বচনগুলো সন্মন্ধে প্রচলিত কিংবদন্তিগুলো তেমন বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে কিন্তু বচনগুলো যে সত্যতা নির্দেশ করে সেগুলো কি একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায়? বোধহয় যায় না। মূলে যদি সত্যি কিছু ঘটনা না-ই থাকবে তবে কিংবদন্তিগুলো কিসের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়াবে? সুতরাং ইতিহাসের সময় যা-ই হোক না কেন,খনার যুগ যে কোনও গৌরবময় হিন্দু যুগকে নির্দেশ করছে ,বললে অন্যায্য হবে না। উজ্জয়িনীর রাজা বিক্রমদিত্য সংস্কৃত ও বাংলা সাহিত্যে প্রচুর খ্যাতি লাভ করলেও ইতিহাসে কিন্তু বিক্রমাদিত্য নামধারী একাধিক হিন্দু রাজা বিদ্যমান। কেউ কেউ বলেন মালবরাজ যশোধর্মদেবই খনার গল্পের বিক্রমাদিত্য। আবার অন্যমতে গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বিক্রমাদিত্য হতে পারেন। সত্যি ঘটনা যা-ই হোক না কেন এইসব ঐতিহাসিক গালগল্পে আজও আমরা সমান আকৃষ্ট হই। যাইহোক উক্ত বিখ্যাত ব্যক্তিটির ‘’নবরত্ন’’ সভার কথা ঐতিহাসিক মহল থেকে সাধারন মানুষ পর্যন্ত সুবিদিত। আর ঐ নবরত্নের সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন কালিদাস। সুবিখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহ – মিহিরও এই সভার অন্যতম সদস্য। জনশ্রুতি বলে , বরাহ এবং মিহির দুইজন আলাদা ব্যক্তিত্ব। বরাহ পিতা এবং মিহির পুত্র। এই মিহিরেরই স্ত্রী ছিলেন খনা। গল্প যাইহোক খনার অস্তিত্ব যে গুপ্তযুগকে নির্দেশ করছে এটা লক্ষ্যনীয়। ভারতীয় ইতিহাস বলছে ৪র্থ থেকে ৫ম খৃঃ পর্যন্ত গুপ্ত যুগেরর সীমানা। সুতরাং খনার বচন যদি এই সময়ই রচিত হয়ে থাকে তবে এটা স্বীকার করতেই হয় রচনাগুলো চর্যাপদের এবং হিন্দু বৌদ্ধ দোহারও অনেক পূর্ববর্ত্তী রচনা। কিন্তু যে ভাষায় বচনগুলো রচিত হয়েছিল, বর্ত্তমান খনার বচনের ভাষা থেকে তা একেবারেই পৃথক। ইতিহাস সাক্ষী খনা কিন্তু আমাদের বাঙালী ঘরের মেয়ে বউমা স্ত্রী। ডঃ দীনেশচন্দ্র সেন খনার বচনকে বাংলার কৃষককূলের কৃষিকাজ সন্মন্ধে প্রাচীনতম ছড়া বলে অনুমান করেছেন। অন্তত ৮০০ থেকে ১২০০ খৃঃ এর মধ্যে রচিত। এবং যুগে যুগে লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে আজকের খনার বচনে পরিচিত।
দেশে সুশাশন ও শান্তি থাকলেই কৃষিপ্রধান দেশে কৃষির উন্নতির সম্ভাবনা। প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে মৌর্য্যযুগ ও গুপ্তযুগ এই অর্থে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সুতরাং ধরেই নেওয়া যেতে পারে খনার বচন এই দুই যুগের যে কোনও একটিতে উদ্ভব হয়েছিল। পিতা বরাহ পুত্র মিহিরের জন্মের পর তাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছিলেন। গনণা করে তিনি জানতে পেরেছিলেন পুত্রটি অকালমৃত হবে। ছোট্ট শিশুটি জলে ভাসতে ভাসতে সুদূর লঙ্কাদ্বীপে পৌঁছয়। সেখানে সমুদ্রতীর বাসী রাক্ষস সংস্রব আর্যেতর মানুষেরা শিশুটির প্রাণ রক্ষা করে। খনা এই লঙ্কাদ্বীপের রাক্ষসকন্যা এবং বড় হওয়ার পর মিহিরের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। বাংলাদেশ,দক্ষিণপূ্র্ব এশিয়ার বহু দেশের সঙ্গে,খৃষ্ট জন্মের বহু শত বৎসর পূর্বে Austric জাতির উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল। এ প্রমান ইতিহাসে আছে। প্রাচীন Chaldean দের মত এই রাক্ষস নামীয় Austric রাও জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী ছিল কিনা তা আমাদের ঠিক জানা নেই। তবে গল্পগাছা যেমনই হোক না কেন , খনার বচন চিরদিনই বাঙালীর কল্পলোকে বিরাজ করবে। খনার পিতার নাম ছিল অটনাচার্য্য। ‘’ আমি অটনাচার্য্যের বেটি , গণতে গাঁথতে কারে বা আঁটি?’’ এই প্রবচন থেকে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে লঙ্কাদ্বীপে খনার পিতাও খ্যাতনামা জ্যোতিষী ছিলেন। চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত সাব-ডিভিশনে দেউলি নামে যে গ্রাম আছে সেখানে মিহির ও খনার আবাসস্থল ছিল বলে জনশ্রুতি। ডঃ দীনেশচন্দ্র সেনের মতে বিবাহের পর খনা ও মিহির লঙ্কাদ্বীপ পরিত্যাগ করে এই দেউলি গ্রামে চন্দ্রকেতু রাজার আশ্রয়ে বহু বৎসর বসবাস করেছিলেন । কারন বর্ত্তমানে এই রাজার নামে এই গড়ের একটি ভগ্নাবশেষ দন্ডায়মান।
খনার বচন সাধারণত কৃষিতত্ব বিষয়ে উপদেশপূর্ণ কতগুলি ছড়া। প্রথমদিকে এগুলো মুখে মুখে আবৃত্তি হয়ে ক্রমে লিখিত আকারে পরিণত হয়েছে এবং বিভিন্ন যুগে সেই লিখিত ভাষারও পরিবর্তন হয়েছে। বচনগুলোকে মোট চার ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। - (১) কৃষিকার্য্যে প্রথা ও সংস্কার (২) আবহাওয়া জ্ঞান (৩) কৃষিকার্যে ফলিত জ্যোতিষজ্ঞান (৪) শষ্যের যত্ন সন্মন্ধে উপদেশ
১)আষাঢ়ের পঞ্চদিনে রোপয়ে যে ধান / সুখে থাকে কৃষিবল বাড়য়ে সন্মান
২)ফাল্গুনের আট চৈত্রের আট / সেই তিল দায়ে কাট
৩)পূর্ণিমা অমাবস্যায় যে ধরে হাল / তার দুঃখ চিরকাল
৪)ভাদ্রমাসে রুয়ে কলা / সবংশে মোলো রাবণ শালা
প্রাচীন ভারতীয় সমাজে ধনী দরিদ্র দৈনিক জীবন যাপন কৃষিকার্য্য ইত্যাদি সব কিছুতেই জ্যোতিষ বিদ্যার সুফল কুফল অক্ষরে অক্ষরে মান্য করে চলত।
নিচে আরও কটা উদাহরণ দেওয়া হল –
১)পৌষে গরমি বৈশাখে জাড়া / প্রথম আষাঢ়ে ভরবে গাড়া
২) কি করো শ্বশুর লেখা জোখা/ মেঘেই বুঝবে জলের রেখা / কোদালে কুড়ুলে মেঘের গা.../ মধ্যে মধ্যে দিচ্ছে বা...
৩) চৈত্রে কুয়া ভাদ্রে বান / নরের মুন্ড গড়া গড়ি যান
৪)করকট ছরকট সিংহ সুকা কন্যা কানে কান / বিনা বায়ে বর্ষে তুলা কোথা রাখবি ধান
৬) মানুষ মরে যাতে / গাছলা সারে তাতে
৭) শুন বাপু চাষার বেটা / বাঁশের ঝাড়ে দিও চিটা
৮) লাউ গাছে মাছের জল
৯)ধেনো মাটিতে বাড়ে ঝাল
১০) আমে ধান । তেঁতুলে বান
১১) অঘ্রানে পৌটি / পৌষে ছেউটি / মাঘে নাড়া / ফাল্গুনে কাড়া
১৩)বামুন বাদল বান/ দক্ষিণা পেলেই যান
রামাই পণ্ডিত
............................................................।।
রামাই পণ্ডিতের পরিচয় সন্মন্ধে উল্লেখযোগ্য এই মত যে ইনি গৌড়ের পাল রাজা দ্বিতীয় ধর্মপালের সমসাময়িক ছিলেন। মতটি যদি সত্যি হয় তবে ধরে নেওয়া যেতে পারে রামাই পণ্ডিত ১০ম থেকে ১১শ শতাব্দীতে বর্ত্তমান ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় ধর্মপাল নামে কোনো রাজা গৌড়ের রাজা ছিলেন কিনা সন্দেহ আছে। তবে এই সময় দন্ডভূক্তিতে বা বর্ধমানে একজন ধর্মপাল রাজত্ব করতেন । তিনি সাময়িকভাবে গৌড় দখল করেছিলেন কিনা জানা নেই। রামাই পন্ডিত শূণ্য পুরাণ রচনা করেছিলেন। যদিও রচনা ও রচনাকারী সন্মন্ধে অনেক তর্ক বিতর্ক আছে। যাইহোক রামাই পণ্ডিতের জীবন কথাটি এই রকম - তিনি বাইতি জাতীয় ছিলেন। রাঢ় দেশের অন্তর্গত দ্বারকা নামক স্থানে তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল এবং খৃঃ দশম শতাব্দীর শেষভাগে দ্বারুকেশ্বর নদীর তীরে চম্পাইঘাট নামক এক স্থানে জন্ম গ্রহন করেন। রামাই পন্ডিতের জন্ম বৎসর সঠিক জানা নেই । তাঁর পিতার নাম ছিল বিশ্বনাথ । আশি বছর বয়সে ধর্মপূজা প্রচলনের অভিপ্রায়ে রামাই পন্ডিত কেশবতী নামে এক রমনীকে বিবাহ করেন। পুত্র জন্মালে তার নাম করন হয় ধর্মদাস। রামাই পন্ডিত বঙ্গীয় ধর্মপূজার প্রধান পুরোহিত। প্রায় সমস্ত ধর্ম-মঙ্গল কাব্যেই গ্রন্থকারগণ অতি শ্রদ্ধার সঙ্গে রামাই পন্ডিতের নামোল্লেখ করেছেন। কিন্তু রামাই পন্ডিতের ‘’পদ্ধতি’’ এখনও মুদ্রিত হয় নি। তিনি যে ধর্মপূজার প্রচলন করেন তা মহাযান মতাবলম্বী বৌদ্ধধর্মের বিকৃত রূপ। ঐতিহাসিকগণের মতে বুদ্ধ- ধর্ম- সঙ্ঘ এই ত্রিরত্নই মিলেমিশে একাকার হয়ে ক্রমে ধর্মঠাকুর রূপে পরিণত হয়েছেন। রামাই পন্ডিতের রচনার কতগুলি অংশ অতি প্রাচীন বাংলায় রচিত , সেগুলো খুবই দুর্বোধ্য । তাঁর ‘’ধর্ম পুজা- পদ্ধতি ‘’ বা শূণ্য পূরাণ নামক পূঁথি নিয়ে নগেন্দ্রনাথ বসু , দীনেশচন্দ্র সেন, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী প্রচুর গবেষণা করেছেন। শূণ্য পূরাণের মন্ত্রাদি সন্মন্ধে ডঃ দীনেশচন্দ্র লিখেছেন - ‘’ ইহাতে ধর্মরাজের পূজার মন্ত্রাদি ও ব্যবস্থা লিখিত আছে। ‘’ পূঁথির মোট পত্রসংখ্যা ৬০। শূণ্য পূ্রাণের ‘’শূণ্য’’ কথাটি বৌদ্ধ শূণ্যবাদ এবং শৈবতান্ত্রিক ‘’বিন্দুবাদ’’ উভয়কেই বোঝায়। শূণ্যকে বিন্দু দেখলেই বৌদ্ধ গন্ধ আবিষ্কারের কোনও অর্থ নেই । বিশেষতঃ প্রাচীন বাংলায় শূণ্যবাদী হীনযান বৌদ্ধদের কোনও পরিচয় নেই। যা আছে তা দেবতার পরিবর্তে বোধিসত্ব বিশ্বাসী মহাযান বৌদ্ধদের পরিচয়। উদাহরণ --
নহি রেক নহি রূপ নহি ছিল বন্ন চিন ।
রবি শশী নহি ছিল নহি রাতি দিন ।।
নহি ছিল জলথল নহি ছিল আকাশ ।
মেরু মন্দার ন ছিল ন ছিল কৈলাশ ।
...................................................।।
শ্রী ধর্ম চরণারবিন্দে করিয়া পণতি
শ্রীযুত রামাই কঅ শুনরে ভারতী।। - শূণ্যপূরাণ
ধর্মপূজা পদ্ধতির স্তব - আদি অন্ত নাই ভ্রমিয়ে গোঁসাঞি
করপদ নাস্তি কায়া
নাহিক আকার রূপগুণ আর
কে জানে তোমারি মায়া
জন্ম জরা মৃত্যু কেহ নাহি সত্য
যোগীগণ পরমাধ্যায়
শূণ্যমূর্ত্তি দেবশূণ্যি অমুক ধর্মায় নমঃ
শূণ্য পূরাণে বর্ণিত ধর্ম , আদ্যা, শঙ্খ ও শিব কোনওটিই বৌদ্ধধর্মের ঈঙ্গিত করে না। এখানে শিব হলেন কৃষি দেবতা । মহাযানী বৌদ্ধগণ বুদ্ধকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মান্য করলেও শিবকেও ভক্তি করতেন। উদাহরণ -- শিবের গান –
আহ্মার বচনে গোসাঞি তুহ্মি চষ চাষ ।
কখন অন্ন হঅ গোসাঞি কখন্ন উপবাস।।
ঘরে ধান্য থাকিলে পরভূ কত দূঃখ পাব।
কাপাস চষহ পরভূ পরিব কাপড়।
কতনা পরিব গোসাঞি কেওদা বাঘের ছড় ==ইত্যাদি।
ধর্মঠাকুর ও শিব এক হলে অথবা ধর্মঠাকুরের উপর শিব ঠাকুরের প্রভাব পড়লে শূণ্য পূরাণে তার উল্লেখ হয়েছে। এই ধরনের গান যে শ্রেণীর লোকদের মধ্যে প্রচলিত ছিল সম্ভবত তারা ছিল কৃষিজীবি। শূণ্য পূরাণ ও এর কবি রামাই পন্ডিত কে নিয়ে অনেক বাগ বিতন্ডার সৃষ্টি হয়েছে। বুদ্ধ নানা স্থানে লৌ্কিক দেবতার রূপ ধরে পূজিত হচ্ছেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুঁথি নকলকারীগণ পুঁথির মুল শ্লোককে পরিবর্তিত করে ফেলেছেন সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শ্লোকের ভাষা এক এক স্থানে এক এক রকম। কিছু কিছু অংশ পুঁথির সঙ্গে পরে সংযোজিত হয়েছে। শূণ্য পূরাণের অন্তর্গত ‘’ নিরঞ্জনের রুষ্মা ‘’ অংশটি অত্যন্ত বিস্ময় ও কৌ্তুহলদ্দীপক। অংশটি পরে সংযোজিত হয়েছে।
উদাহরণ - জাজপুর পুরবাদি সোলসয় ঘরবেদি
করনায় দুন
দখিণ্যা মাগিতে জায় জার ঘরে নাহি পায়
সাঁপ দিয়া পুরায় ভুবন
মালদহে লাগে কর দিলঅ কন্ন দুন
দখিণ্যা মাগিতে জায় জার ঘুরে নাহি পায়
সাঁপ দিয়া পুরায় এ ভুবন
রামাই পন্ডিতের শূণ্যপূরাণ বাংলার আদি যুগের নিদর্শন।
...................................................................................................................................।।
ঋণ স্বীকার ঃ ডঃ তমোনাশচন্দ্র দাশগুপ্ত – বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ( আদি যুগ- হিন্দু বৌদ্ধ যুগ)
ঃ ডঃ সুকুমার সেন - বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ( প্রথম পর্ব)
ঃ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী রচনাবলী
সুচিন্তিত মতামত দিন