কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্য

মায়াজম
0
সাগা অব ট্রাপিজ





কনফিউসড সোল
রোবটিক সোল
সোললেস সোল---
ত্রিশঙ্কু জীবন দোল খায় হাত ফসকে পালিয়ে যায় কাঁচ জীবন ।ঘুমের ডেরা থেকে টকটক গন্ধ গুলো উড়োজাহাজ হয়ে শূন্যে সাঁতার কাটছে—কারা যেন আলুর সালাড ছুড়ে মারছে সেমিনার হলে—এ্যাসেম্বলি হলে-বরফের জামা পরা রাস্তা গুলো ডাডাইজমের সূত্র ভাবতে ভাবতে ট্রাপিজে দোল খায়—লাঠি হাতে নক্ষত্ররা অন্ধকার আকাশে ইনসুলিন নেয়—পাগলা গারদের উন্মাদরা দেয়াল ভেঙ্গে রাস্তায় নীল জামার পতাকা বানায়—পেন্ডুলাম সময় যুদ্ধক্লান্ত সময় টালমাটাল ব্যালেন্স এর খেলায় ।হাড় মানুষেরা মৃদুঘণ্টাধ্বনির শব্দে হাড় বাজাতে বাজাতে এরেনার বাইরে সারিবদ্ধ ভাবে এগিয়ে চলেছে পূজাগৃহের দিকে—উপজাতি পাখিদের মতো জাগলার একুশ টা বল নিয়ে লোফালুফি করছে এরেনা ফেটে পড়ছে উল্লাসে—মারহাব্বা । মারহাব্বা । কেয়াবাৎ শব্দের ছররা বুলেটশব্দে,রাত সঙ্গীতের শব্দে নির্ঝরিণী—
শিশিরের শব্দপাতে হিমবাহ নেচে চলেছে—মিনিস্কার্ট মোমালি পা গোড়ালির ঘুঙুরে লাল নীল সভ্যতার আলো ।
আইস গ্লোব,মরুঊষর গ্লোব—চামচ ভরা তেল সকাল থেকে সন্ধ্যা শুধু দড়ির উপর হেঁটে চলা
সাবধান—একফোঁটা তেল যেন চলকে না পড়ে –বৈরাগীর একতারা বাউল ঘুঙুর আর জুরাসিক গীটার বেজে চলেছে, ক্লক ওয়াইজ আর আ্যান্টি ক্লক ওয়াইজ মোটরবাইক চালাচ্ছে মিস ববিতা অনীক কুমার মিঃ প্রেসিডেন্ট আর হের হিটলার—একটা সংঘাতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে চিরদিনের জন্য এই দিনরাতের মারণ খেলা!
খালি পায়ে হাওয়ারা ঘুরছে নেটের উপর রং মাখা জোকার লুফে নিচ্ছে ট্রাপিজ ছুট মিস মারিয়ার গোলাপ হাত—রঙিন বেলুন আর গাঢ় মেক আপের নীচে একরতি কাঁচ কাঁচ অশ্রু একজোড়া ভোরের চমক –বসন্তের মুসুরি ক্ষেতের নিসর্গে স্তিমিত প্রেম ।
সুপার মার্কেটের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ওয়াল্ট হুইটম্যান আর সুকান্ত ভট্টাচার্য নিহত পৃথিবীর গল্প করতে করতে অন্ধকারে পেরিয়ে যান অতলান্ত,সাহারা মিশর লিবিয়া আর ভারত সার্কাসের পেটফোলাতাঁবু—তাঁবুর ভেতর চলছে খেলার হল্লাবোল—হোল ইনট্যালেক্টস ইডিয়টিক কনভারসেসনস হাসপাতাল জেলখানা বিশ্ববিদ্যালয় আর সংসদ ভবনের গম্বুজ জোকারের প্রগলভতায় বেদম জোরে হেসে উঠছে—
ক্লসেট ডোর আমার প্রতীক্ষায় হাঁ মুখ---নীল সঙ্গীত মোমবাতির মতো গলে পড়ছে—আর ফুরিয়ে যাচ্ছে-
স্বাভাবিক ভাবেই পরিচিত পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, সময়ের জতুগৃহে পুড়ে যাচ্ছে, বেওয়ারিশ নিষাদ সন্তানের লাস ।রিফ্যুজিরা নত মস্তকে সারিবদ্ধ ভাবে হেঁটে চলেছে শিকড়ের সন্ধানে—সর্পিল ট্রেন লাইনধরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে হ্যালিপ্যাডে,নৌবহরে,মেঘের মরদেহ, ভাইসরয়ের ভগ্ন প্রাসাদে ব্রথেলে, গোয়ালপাড়ার বন্দী নিবাসে –রাষ্ট্র নায়ক এবং দার্শনিক করোনা সূত্র নিয়ে হিমসিম –অবশেষে জোকারের ন্যায় দুটো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অনর্গল-----
পালোয়ান বুকে হাতী ধরে, বাঘের মুখে মুখ ঢুকিয়ে গরম ভাতের স্বপ্ন দেখে রিং মাষ্টার, পোয়াতী বউ অনশনে ক্ষয় হয়ে যায় –সবুজ ধানক্ষেতে পড়ে থাকে হরিণের মৃত শরীর---
এক পৃথিবী সময় এখন ভিজে যাচ্ছে—
এক পৃথিবী সময় এখন পুড়ে যাচ্ছে—
এক পৃথিবী সময় এখন পচে যাচ্ছে—
মাই কান্ট্রি ,মাই লাভ—তোমাকে দিলাম আমার বেহেস্ত,তোমাকে দিলাম আমার জাহান্নম
তোমাকে দিলাম আমার হলুদ সূর্যমুখী—রক্তগোলাপ হৃদপিন্ড
তোমাকে দিলাম আমার ডাকপিওনের মেঘলা চিঠি
তোমাকে দিলাম আমার জীর্ণ বাস,ছেঁড়া কাঁথা
তোমাকে দিলাম আমার ভিক্ষার আমানি
তোমাকে দিলাম আমার স্বা -ধী -ন -তা
তোমাকে দিলাম আমার এই বাসাংসি জীর্ণানি নশ্বর শরীর আর অবিনশ্বর আত্মা
তোমাকে দিলাম আমার কামসূত্র, উপনিষদ
তোমাকে দিলাম
আমার বৈশ্বানর চিতা
প্রগাঢ় রাত্রির শিলাখন্ডের উপর দাঁড়িয়ে দেখছি আলোর তাঁবুর নীচে কৃষ্ণ অন্ধকার,মারণ ভাইরাস মানুষের অহংকারের যাবতীয় লাইন অব কন্ট্রোল তছনছ করে বাদুড়ের কালো পাখায় ঢেকে দিচ্ছে রামধনু আকাশ—দিনরাতের ট্রাপিজের খেলায় নেশামত্ত পৃথিবী—রংহীন তাঁবুর বাইরে খেলাশেষে পড়ে থাকে ইউজড কোনডোম, সিগারেট প্যাক,শ্যাম্পেন,ভদকার খালি বোতল-ব্যাবহৃত কার্তুজ—কাঁচ ভাঙ্গা রাস্তা ,নর্তকীর মেকআপহীন ফ্যাকাশে মুখ,খাঁচায় পোরা নিরুপায় বাঘের হতাশ কান্না---
রাতের আক্রান্ত আকাশ জুড়ে পুড়ছে পৃথিবীর কুশপুত্তলিকা—ট্রাপিজ মাষ্টারের সিল্ক রুমাল,ঈশ্বরের সমতা তত্ত্ব,বারবণিতার লাজবস্ত্র আর অ্যারোবিকস বেবিদের আঁটোসাঁটো বিকিনি—
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষেরা হেঁটে আসছে সংখ্যা লঘু প্রেম আর মানবিক গাছগুলোর দিকে—
আমার শূন্য খাতা অপেক্ষায় রয়েছে—রং মাখা মুখোশ,অরণ্য যাপিত খেলা,পালক আর ঘুড়ির গ্রীসিয় কাহিনির জন্য----

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)