বন্ধুসুন্দর পাল - মায়াজম

Breaking

২০ জুন, ২০২০

বন্ধুসুন্দর পাল

নিহত ঘড়ি



সংযম নিহত ঘড়ি
দম দিয়ে দু'মিনিট বয়স ফাস্ট করে রেখেছি যে দেয়াল জানে না সেই ‌কথা
উন্মত্ত উষ্ণতা পিশে সুড়সুড়ি দিয়েছি সময়ের গোপনাঙ্গে
আমার খিদের থেকে তুমি তো বয়সে বড়ো নর্তকী, এবং
প্রত্নতত্ত্ব স্তন নিয়ে ঘেঁটে দেখেছি, কাঠিন্য, বিষাদের থেকে ছোট
নিজেকে সামাল দিতে তাই এখন তোমার সঙ্গে ফুলের দোকানে হেসে হেসে কথা বলি...
কেননা সময়, শরীরের থেকে ছোট !
____________________________________



বেহালা বাজানো লোকটা চলে গেছে
উল্লাসে মেতে আছে সময় । কত সম্পর্কের ভিড়ে কাঁপা কাঁপা গলা নিয়ে বৃষ্টি একা ঝগড়া করে যাচ্ছে শুকনো ডালপালার সঙ্গে । যেন কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে চাইছে, কিন্তু পারছে না । ছোঁয়াচে মনের ভয় মানুষের চিরকালের । শিরদাঁড়া বরাবর ল্যাম্পপোস্টের আলো এসে চিৎকার করে নাড়া দিলে তবুও আকাশকে ভরসা করা যায় না ।
বাড়ির পাশের মুদির দোকানে চাঁদ উঠেছে বলে খবর হয়েছে । পাড়া শুদ্ধ লোক হুমড়ি খেয়ে ভাগাভাগি করে নিয়ে যাচ্ছে । আমি একা দাঁড়িয়ে দেখছি , বেহালা বাজানো লোকটা কোনো খিদে নেই জানিয়ে শুধু দুমুঠো বেহালা বাজিয়ে চলে গেছে ।
বিক্ষোভে যার হাসি পায়, সেও বিশ্বাস করবে বলে খামচে ধরে নিজের জরায়ু । শুয়োরের বাচ্চা বলে হাততালি দিয়ে অপমান করে চলে গেছে বাতাস, তবু তাকে ছুঁয়ে দেখার সাহস করিনি । আসলে ভাতের শরীর থেকে নুনের অপমান কখনো তাকে টলিয়ে দিতে পারে না ।
মুগ্ধতা মানিয়েও নিতে হয়, বুঝছি । জোর করে সরে যাচ্ছি দুমুখো রেললাইন বরাবর, যেখানে হকাররা খালি থালা বাটি বাজিয়ে বিয়ে দিচ্ছে বৃদ্ধার । ঝলমল করে উঠছে সময় আর সময়ের শত্রু । আমি শুধু চোখে চোখ রেখে বৃষ্টির কথা ভাবছি ‌।
দীর্ঘদিন ধরে সরে যেতে চাইছি শব্দের থেকে । তবু কীসের টানে কেউ দুর্বল করে দিতে চাইছে । ভাড়া বাড়ির খসখসে দেওয়াল ছিনিয়ে নিতে চাইছে সব অক্ষমতা । কথা বলা ভুলে আছি অনেক দিন হলো । কেউ জোরো করে না । কেউ দেখে না ছুঁয়ে কটা নার্ভ অচল হয়ে গেছে । শুধু বাড়ির বিড়াল টা কিছুতেই শোনে না, খাবার শেষে বাসন মাজার সময় দু'পা জড়িয়ে ধরে । সেও আমাকে নিরিহ শব্দের মতো বিশ্বাস করেনি, আমিও সন্তুষ্ট করতে পারিনি । শুধু রাত হলে মনে হয় ঐ বেহালা বাজানো লোকটা বাড়ির পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে বেহালা বাজিয়ে ...
______________________________________


ভীষণ জ্বরে ...
আমাকে বলো না তুমি মৃত নগরীর কথা
আমাকে বলো না তুমি মৃত শরীরের ভাষা
এই যে টের পাচ্ছি নিজের মাংসগন্ধ, উদ্বৃত্ত সঙ্গীত, অপারগ কবিতা, সবটুকু হো হো করে তোমাকে আজ দিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে
নরম মনের সঙ্গে সোডা মিশিয়ে চেখে নিতে ইচ্ছে করছে আমাদের সব অস্থিরতা, পৃথিবীর কপালে হাত রেখে জেগে থাকতে ইচ্ছে করছে বেহায়া রতনের মতো
আমাদের কি কখনো ছিলো না দমবন্ধ অবস্থা ?
আমাদের কি কখনো ছিলো না ক্ষমা না করে দেওয়া ?
নিজেকে খুনের দায়ে যতবার তোমার সামনে ধরা দিতে গেছি, ততবার তোমার দাঁতখোলা হাসি দেখেছি ।
তোমার অ্যান্টিবডি শরীরে অশ্লীল সভ্যতা এসে যৌনএ্যাটাক করে গ্যাছে, তাতেও তোমার অনুনয় দাহ্য হয়নি
হুকুম তামিল করো, বাসি ভাতফুলের সংসার
তোমাকে নুনের পাশে পাবো, মাথা কেটে হার
এভাবেই চলো চলে যাই নিরিহ ঝালমশলার মতো একসাথে মেখে, মানুষের কান্না আর উদ্দাম আনন্দের হট্টগোলে । যদি সুখে সিদ্ধ হয়ে যাই পৃথিবীর সমস্ত প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে প্রসংশা পরিবেশন করে যাবো
চলো, আর এক বার হাত রাখি উদ্ভ্রান্ত শরীরে
দেখি, তুমি-আমি জেগে আছি কিনা এ ভীষণ জ্বরে...
_____________________________________



আড়ালে রেখেছি যাকে
আড়ালে রেখেছি যাকে, সে তো আমি নই
জীবন মেনেছি যাকে, সে তো ভাঙা মই
এভাবেই,
বিশ্বাস করবে না বলে এগোতে পারিনি
কিচ্ছুটি লেখার আগে, না, মৃত্যু লিখিনি
ফিরবে বলে,
অভ্যাসে উপুড় হয়ে অশৌচ মেখেছি
সাবানে স্নেহের বশে মিথ্যের শুনানি
যা দেখেছি,
সব তোমাকেই বলে দিতে পারি আজ
নিষিদ্ধ কাঠের গায়ে আগুন, তোয়াজ
যদি এসো,
নিভৃতে, যতনে রেখো আমিষ অক্ষর
জখমের গন্ধ নিতে তোমাকে সেবিকা
বানাবো না আর ...
_____________________________________



বাতিল পকেট
বাতিল পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিলাম
বিক্ষুব্ধ দাড়ির মতো শিথিল, অবচেতন
আপনি ভাবছেন;
শরীরীপনা আপনাকে নকল করছে
এভাবে হতাশা জমলে বিছানার পাশে আঙ্গুর রাখা থাকে
বিহ্বলতা, আপনি কি নিরবিচ্ছিন্ন প্রাণী ?
শরীরকে পাত্তা দিতে দিতে রান্নাঘরে দুধ উৎলে ওঠে
খুন্তিকে সমবেদনা জানাতে গেলাম
দেখি, কড়াইয়ের মধ্যে কতগুলো খুনি শরীরের আধুনিক দিক নিয়ে আলোচনা করছে
_______________________________________

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র