মেয়েদের কবিতা
মেয়েরা যখন কবিতা লিখতে বসে
ছেলেরা ভুলতে থাকে সংসারের সীমানা...
তাদের চোখের সামনে শুধুই ভেসে ভেসে ওঠে নদীরং যোনি, গোধূলির মতো ঠোঁটের নকশা।
মেয়েদের নরম ঘাসে ঢাকা স্তনবৃন্তে জেগে থাকে শতাব্দী প্রাচীন গিরিশিরার পথে ছুটে যাওয়া চেঙ্গিস খানের অশ্ব খুড়ের নীল নীল দাগ...
কবিতার কথা শুনে পুরুষেরা, হঠাৎ করেই বয়ে আসা লিলুয়া বাতাসের সঙ্গে উল্টো লড়াই করতে থাকে যুদ্ধবাজ সেনার মতো।
হুংকার ছেড়ে মেয়েদের লেখা কবিতার পংক্তিদের ছুঁড়ে দিতে চায় ভীষণ গভীর নিম্নচাপের সমুদ্রে...
তবুও আমার প্রতিটি সকালে দুপুরে ও রাত্রে মনে হয়,
মেয়েরা যখন কবিতা লিখতে বসে,
তখনও তাদের দেহ থেকে গলে গলে পড়তে থাকে
পৃথিবীর যাবতীয় স্নেহপদার্থ ও মায়াময় বৃষ্টিরা।
মশলা মাখা আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে জেগে ওঠে
হলুদ ধানের ক্ষেত, পটলপাতার ঝিরঝিরে দুলুনি
এলাচবনের গন্ধ-বিভোর ভোর, হলুদ ঝিঙে ফুল
তারা ভালোবাসতে বাসতে জং ধরা হাতে তুলে নেয়
নীলকণ্ঠ পাখির পালকের রঙ, আর ভাতের গন্ধ...
এভাবেই কবিতার খাতা হাতে বারবার ফিরে আসা ঘরের পাশটিতে বয়ে যাওয়া সন্তানদের প্রিয় বারান্দায়...
পাশের ঘরটিতে রাতে অ্যানাটমি চলে তার শরীর জুড়ে।
মেয়েরা ভাবে এ'বছর কাশফুল ফুটলে ডানাদুটো পরে একদিন ঠিক চলে যেতে পারবে ব্রহ্মাণ্ড পেরিয়ে অন্য কোথাও...
আসলে এইসবই মেয়েদের কবিতার কথা।
নাকের নথে দিনের আলো যখন ঠিকরে পড়ে,
কোনও প্রাচীন গেঁয়ো মেয়ে তখন উঠোনে আলপনা দিতে দিতে
গাছে গাছে পাখিদের সংসার দেখতে থাকে ...
শুকনো পাতা কুড়িয়ে এনে রাঁধতে বসে
দেয়ালে সেলাই করে রাখা বাক্য পড়ে,
দীর্ঘশ্বাসে আটকে থাকা লাইনের অক্ষরেরা
তখনও জ্বলজ্বল করছে,
সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে...
তার রক্তে যেন ছুটছে একদল বুনো ঘোড়ার দল
তাড়াতাড়ি মাছের ঝোলে লঙ্কাদাহন করে।
আবারও লিখতে চায় কবিতায় শরীরে বেড়ে যাওয়া অ্যানিমিয়ার কথা,
ঠোঁটের কোণে জমে থাকা রক্তের ইতিহাস...
আস্তে আস্তে ঘর গুছোতে গুছোতে জেগে উঠতে থাকে জীর্ণ একটি কবিতার খাতা ও ধুলোবালির প্রহরেরা...
প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড ফুলে ওঠা বৃদ্ধ পুরুষের বিছানায় বসে মেয়েরা অবশেষে লিখতে পেরে যায় সমূহ দাবানলের কথা।
এবং এক জ্যামিতি বাক্স ভরা জমে থাকা কবিতা...
সুচিন্তিত মতামত দিন