মধুরিমা - সোনালী মিত্র

মায়াজম
0

মধুরিমা দত্তরায় / সোনালী মিত্র


বিজ্ঞান পড়ান,পদার্থবিদ্যা

সকাল ৬ টায় শুরু,সন্ধ্যা ৮ টায় শেষ

প্রিয় বিজ্ঞানী আইনস্টাইন,প্রিয় বিষয় পদার্থের শক্তি

ছেলেরাই সংখ্যায় বেশি,মেয়েরা কম টিউশনে 

মোটেও ডাকসাইটে সুন্দরীর দলে পড়ে না 

বয়স সাইত্রিশ,কৃষ্ণশ্যামের বর্ণ শরীরী মেধায়   

ছেলেরা ব্ল্যাকবোর্ডেই তাকিয়ে থাকে,অন্য কোথাও না  

চুলে অল্পবিস্তর পাক ধরেছে,রং করে না 

এককালে ভাবতেন রিসার্চ করবেন,বর্তমানে টিউশানি সম্বল 

#

হাসে কম,কাঁদে আরো কম 

চোখে চশমা,হাতে বালা  নেই,কানে দুল নেই 

নখ ছোট করে ছাঁটা, আংটি নেই,

শাড়ি পরেন,ব্লাউস যেকোনো রঙের,ঘড়ি আছে ডান-হাতে 

বাবা আছেন  কি নেই জানি না,মা আছেন, মালা জপেন 

#

বর্তমান রাতে কোন স্বপ্ন নেই,বৃষ্টির উচ্ছ্বাস নেই 

বালিশের সঙ্গেই শুধু গোপন আঁতাত 

অবশ্য ভূতভবিষ্যৎ রাতে 

মন-শরীরকে নিয়ে বেঁচে থাকার হাতিয়ার পরমাণু বোমার চেয়েও দুর্দান্ত

শক্তিশালি শক্তি আবিষ্কার করতে গিয়ে - ব্যর্থ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে

শিয়রে এসে হাজির হয় দীপক

স্কুল জীবনে যে প্রথম শিখিয়ে ছিল 

পরমানুর চেয়েও শক্তিশালি পরমাণু আছে ছেলেদের মেয়েদের শরীরে

[4:36 pm, 29/12/2022] Sonali Ref. Arundhati: অনুশাসন / সোনালী মিত্র 


গোঁগানিটা শুনতে পেলেই বুঝতে পারি,

বাবা এবার ছিটকিনি তুলে বাথরুমে বোনকে শাস্তি দিচ্ছেন।

তখন মা রান্নাঘরে পেঁয়াজ কাটায় অনাবশ্যক ব্যস্ত হয়ে পড়েন ।

অনাহুত এক ভয়ে জোরে জোরে আমি মানচিত্রে,

দেশের নাম মুখস্থ করতে থাকি।।যতটা সম্ভব জোড়ে।


অদ্ভুত ভাবে আমি ও শাস্তির মধ্যে এক বটগাছ তফাৎ থাকতো।


শাস্তি পাওয়ার পরে,

বোনের রক্তচাপ কমে যেতো,রক্তগতির মধ্যে ভুগতো

রোগা শরীরে।হাঁটতে পারতো না ঠিক মতো। ভয়ঙ্কর এক জ্বরে রাতেরবেলা বোন কিসব বিকার বকতো।


দুবছর হল বাবা মারা গেছেন। 

বোনটা পাড়ার বখাটে ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে বেঁচেছে।

নাকি মরেছে কে জানে!

সামান্য ভ্রান্তিতে আমিও শাস্তি দিই বাথরুমে ছিটকিনি তুলে। 

মায়ের গোঁগানির শব্দ ধবধবে  সাদাফ্লোরে চাপ

চাপ দাগ হয়ে জমে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)