অরিন্দম গোস্বামী - মায়াজম

Breaking

২৪ জুন, ২০২৩

অরিন্দম গোস্বামী

                              আশ্চর্য ভ্রমণ ...




দু-রাত একদিন একটানা ট্রেনের এসি কামরার মধ্যে কাটিয়ে সৌমেন বললো - অনেক হয়েছে, আর না।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম। বললাম - সেকি রে, নেমে যাবি নাকি?
ওকে খুব একটা বিশ্বাস নেই। তবে ট্রেনটা এখন ছেড়ে দিয়েছে, এটাই যা রক্ষা। ও ততক্ষণে এগিয়ে গেছে তিনটে জানলা পেরিয়ে। আমার কথা শুনতে পেয়েছে কিনা, কে জানে। অগত্যা, আমিও বাঙ্ক থেকে নিচে নেমে এসে চটি খুঁজতে শুরু করলাম। যখন পেলাম, তখন ও ছোট দরজা খুলে বেরিয়ে গেছে। ওকে আর দেখা যাচ্ছে না।
এই চটিটার একটাই অসুবিধা, পেছনের বেল্টটা না আটকালে ভালো করে হাঁটতে পারা যায় না। এখন এই অবস্থায় আর বেল্ট লাগাবো কিভাবে - তাই পা ঘষটে ঘষটে যখন ঐ ছোট দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম - দেখলাম দুপাশের দুটো বড়ো দরজাই হাট করে খোলা। দুপাশের একটা টয়লেট খোলা, অন্যটা ভেতর থেকে বন্ধ। আর সামনের ভেস্টিবিউলের মধ্যে দিয়ে ওপাশের কামরার যতটুকু দেখা যায়, তাতে মনে হচ্ছে যেন দুই কামরার মধ্যে লাফালাফির জোর প্রতিযোগিতা চলছে। সৌমেন কোথাও নেই।
ধুত্তেরি - আমার নিজের মুখ থেকেই শব্দটা বেরিয়ে যায়। অবশ্য জোরে চেঁচিয়ে বললেও এখানে শোনার কেউ নেই। শুধু চাকার তীব্র যান্ত্রিক শব্দ। পেছনের ছোট দরজাটা ঠেলে কখন যে মধুজা বেরিয়ে এসেছে খেয়াল করিনি। হঠাৎ পেছন থেকে - ওকে দেখতে পেলেন না, তাই না - শুনে চমকে পেছনে ফিরলাম। আমি ওকে বললাম - আমি সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখছি। তুমি জায়গায় গিয়ে বসো।
হঠাৎ গাড়িটা গতি না কমিয়েই একদিকে হেলে ছুটতে শুরু করলো। আমি টাল সামলাতে একদিকের দেয়ালে হাত রাখলাম। বুঝতে পারলাম ঐদিকে হয়তো লাইন বাঁক নিয়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওদিকের খোলা দরজার পাল্লাটা বন্ধ হয়ে গেল দড়াম করে।




(২)
সৌমেন আমার ছোটবেলার বন্ধু। তারপর যেমন হয় - উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর থেকেই আমাদের ছাড়াছাড়ি। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করে ও চলে গেল বাইরে পড়াশোনা করতে। আর আমি যথারীতি আমাদের শহরের অনেক পুরোনো দিনের কলেজের খাতায় নাম লেখালাম।
মধুজা নাকি আমাদের ইউনিভার্সিটিতে আমাদের বিভাগেই পড়তো। কিন্তু আমি যে তাকে আগে কখনো দেখেছি, এমনটা একেবারেই আমার মনে পড়ে না। ওদের দুজনের সঙ্গেই একসাথে আবার আমার ওঠাবসা শুরু হয় ছাত্রাবস্থা থেকে অনেক দিন পরে। আমি তখন অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আমাদের শহর থেকে প্রায় আঠাশ কিলোমিটার দূরে একটা গ্রামের স্কুলে চাকরি পেয়ে বেঁচে গেছি। যৌথ পরিবারে থাকি। একটা বেশ বড়সড় বাইক কিনে সেটাই তখন আমার ধ্যানজ্ঞান। ছুটি পেলেই কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এমনকি কখনো একা একাই বেরিয়ে পড়ি। কিঙ্কি তখন বোধহয় বছর চারেক।
প্রথম প্রথম ওদের বাড়িতে যাওয়ার সময় আমি ছোট্ট কিঙ্কির জন্য চকোলেট কিনে নিয়ে যেতাম। কিন্তু কয়েকটা দিন পরেই আমাকে মধুজা ইতস্তত করে জানিয়েছিল - দাদা, আপনি ওর জন্যে চকোলেট কিনে আনবেন না, ও চকোলেট পছন্দ করে না।
এতে আমি খুব অবাক-ই হয়েছিলাম। কেননা, আমার তখনো পর্যন্ত বাচ্চাদের সম্পর্কে সীমিত পরিচিতির পরিসরে এমন কোনো বাচ্চা ছিল না, যে চকোলেট পছন্দ করে না। যাই হোক, তার পর আমি ওর জন্যে শীতকালে গরম রসোগোল্লা আর গরমের সময় আইসক্রিম কিনে আনতাম।
সৌমেনের বাড়িতে মাঝে মাঝেই আমাকে দেখা যেতো তখন। পরে, সৌমেন অফিসে ছুটি পেলে, আমিও ওদের সঙ্গে বেড়ানোর দলে জুটে যেতাম। সৌমেন বলেছিল - আমি তো সময় পাইনা, তুই যদি ড্রাইভিংটা শিখে নিতে পারিস, তাহলে একসাথে বাইরে ঘুরতে যেতে বেশ সুবিধা হয়। কথাটা আমার মনে আছে, কেননা সেবার প্রবল বন্যায় অনেক জায়গায় রেল যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল, আমরা এজেন্টের কাছে বেশি দাম দিয়ে টিকিট কাটিয়েও বুঝতে পারছিলাম না, সেটা ক্যানসেল করে দিতে হবে কিনা। তবে, সৌমেন যেটা জানতো না, সেটা হলো - তার বেশ কয়েক মাস আগেই আমি ড্রাইভিং স্কুলে ভর্তি হয়ে লার্নার সার্টিফিকেট পর্যন্ত পেয়ে গেছি।
পরের বছর থেকেই বেড়াতে গেলে গাড়ির ডানদিকের সামনের সিটটা নির্দিষ্ট হয়ে গেল। আর হ্যাঁ, সেই সঙ্গে বাঁদিকের সামনের সিটটাও - সেটা কিঙ্কির জন্যে। বাবার মতো, নাকি তার চেয়েও বেশি স্মৃতিশক্তি নিয়ে ও জন্মেছিল। প্রথমের দিকে আমিই রাস্তায় বড়ো বড়ো মোড়গুলোতে বলে বলে যেতাম বাঁহাতি বা ডানহাতি রাস্তাটা কোন দিকে যাচ্ছে - পরের দিকে সেই সুযোগ আর ও আমাকে দিতো না। বরং আগের বছর একই সময়ে এই রাস্তায় কোথায় দাঁড় করিয়ে কোন ধাবাতে কী কী খেয়েছিলাম - সবটাই ও নিখুঁত ভাবে বলতে পারতো।
আমি এটাকে খানিকটা আমার শেখানোর জন্য বলে মনে মনে দাবি করতাম। বহড়াগোড়া থেকে চাস মোড় কি হিলকার্ট রোড থেকে খুনিয়ার মোড় - সবটাই আমি ওকে উজাড় করে শিখিয়েছি। সামনের সিটে বসে কিঙ্কি আরও নানা দিকে যাওয়ার কথা বলতো। আমি ওকে বলতাম - পথের কি কোনো শেষ আছে? বেরিয়ে পড়তে পারলেই হলো। কিঙ্কি বলতো - আমি একেবারে নতুন কোনো পথে হাঁটবো। দরকার হলে তৈরি করে নেবো নিজের পথ।আমাদের স্কুলের ভূগোলের বর্ষীয়ান মাস্টারমশাই ভবতোষ স্যার সবাইকেই বলতেন - ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি শেখা কখনোই বই পড়ে হয় না। আমাকে দেখিয়ে বলতেন - ওর মতো ঘুরে বেড়াতে হবে - পথে প্রান্তরে।
এঞ্জিনিয়ারিং এর ফাইনাল পরীক্ষার আগেই যথারীতি ক্যাম্পাসিং করে কিঙ্কি যোগ দিয়েছিল, বড়োসড়ো একটা কোম্পানিতে। আর, তার কিছুদিন পরেই এসেছিল একটা মাত্র মেসেজ।
ছোটবেলায় গল্পের বইতে পড়েছি - আমি চললাম। আমাকে খুঁজো না, খুঁজলেও পাবে না - এইরকম কিছু লিখে গল্পের নায়ক বা নায়িকা নিখোঁজ হতো। কিঙ্কি নিশ্চয়ই এই ভাষায় নিজেকে প্রকাশ করেনি। কিন্তু ভাষাটা যে কী সেটা আমি জানি না। সবচেয়ে বড়ো কথা, মধুজাও জানে না। কিঙ্কি তার বাবাইকে বলেছিল - মেসেজটা একবার পড়েই ডিলিট করে দিতে। সৌমেন সেটাই করেছে।




(৩)
ভেস্টিবিউল পেরিয়ে পাশের কামরায় যেতেই অবশ্য সৌমেনের দেখা পেয়ে গেলাম। হাট করে খোলা দরজার মেঝেতে ইমপোর্টেড জিন্সের প্যান্ট পরে থেবড়ে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আপনমনে কী যেন বলে চলেছিল সে। একহাতে একটা দেশলাই, আর অন্য হাতে ট্রেনের হলুদ হ্যান্ডেলের একেবারে নিচের দিকটা ধরা। আমি কাঁধে হাত রাখতেই একবার ধড়ফড় করে উঠতে গেল। তবে, আমার মুখটা দেখেই আবার আস্বস্ত হয়ে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বললো - বসবি নাকি এখানে? বলেই একটুখানি সরে গিয়ে জায়গা করে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। আমি বললাম - না, না, থাক। আমি ওপাশের দরজাটা খুলে দাঁড়াচ্ছি।
সৌমেন বলেই চললো - খানিকটা আগেই জানিস তো রুরকির আই. আই. টি. ক্যাম্পাস পেরিয়ে এলাম। আরো খানিকটা পরে বললো - ওর কয়েকটা বন্ধু এখন এখানে আছে।
আমার একটু সময় লাগলো বুঝতে। তারপর বললাম তুই যদি চাস, ফেরার সময় না হয় একটা জায়গা বাদ দিয়ে একবার ঘুরে আসতে পারি এখান থেকে।
ও কোনো জবাব দিলো না।
আমি বললাম - সামনের বড়ো কোনো স্টেশনেই কি নেমে পড়ে ফিরে আসতে চাস? এখুনি কি যেতে ইচ্ছে করছে? সাহারানপুর কি পেরিয়ে গেছে?
- অনেকক্ষণ আগেই পেরিয়ে গেছে।
আমি ঘড়ি দেখলাম। বললাম - তাহলে তো সামনে আম্বালা। কিন্তু সে স্টেশন ঘন্টা দেড়েক দূরে তো বটেই। এরমধ্যে তো আর ট্রেন থামবে না। মধুজাকে কি বলবো, তৈরি হয়ে নিতে?
সৌমেন হাতটা শুধু ওপরে তুললো।




(৪)
নিজেদের কামরায় এসে দেখলাম আমাদের তিনটে বার্থ-ই ফাঁকা। একদিন আমাদের স্কুলের স্টাফরুমের দরজার সামনে পর্দার এপারে দাঁড়িয়ে শুনেছিলাম, ভেতরে জোর আলোচনা চলছে। ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর চিত্তদাই বোধহয় বলছিল - ছেলেটা বিয়ে থাওয়াও করলো না, কোন মধুতে যে আটকে আছে, কে জানে। আজকে এতোদিন পরে আবার হঠাৎ করেই এই কথাটা আমার মনে পড়লো। কিন্তু অবাক হয়েই লক্ষ্য করলাম, চিত্তদার ওপর আজকে আর আমার রাগ হচ্ছে না, বরং একটুখানি হাসিই পাচ্ছে।
মধুজা জায়গায় ফিরে এলো মিনিট পাঁচেক পর, উল্টোদিক থেকে। আমাকে বললো - ওর খোঁজ পেলে?
আমি বললাম - এই তো সামনের কামরাতেই রয়েছে। তবে, ও বোধহয় পাঠানকোট পর্যন্ত যেতে চাইছে না। তার আগেই নেমে পড়তে চাইছে।
ওড়নাটা বুকের ওপর ঠিক করতে করতেই ভুরু তুলে আমার দিকে তাকিয়ে মধুজা জানতে চাইলো - কিন্তু কেন?
- সেটা আমি কী করে বলবো? কিন্তু ওকে একা একা তো নামতে দেওয়া যাবে না। তাই গুছিয়ে নাও।
আমরা দুজনে দ্রুত হাতে সবকিছু ঠিকঠাক করে নিতে নিতেই ফিরে এলো সৌমেন। বললো - সামনে একটা স্টেশনে গাড়ি ঢুকছে, সিগন্যাল রেড আছে দেখলাম। আমার সুটকেসটা এগিয়ে দে। তাড়াতাড়ি চলে আয়।
আমিও দেখলাম যে, ট্রেনের গতি অনেক কম হয়ে গেছে, কিন্তু এখানে তো থামার কথা নয়! এটা কোন স্টেশন?
নিচু প্ল্যাটফর্মে কামরার সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে সৌমেন বললো - সেটা তো প্ল্যাটফর্মে নেমেও দেখে নেওয়া যাবে।
পেছনের থেকে মধুজা বিড়বিড় করে বলে উঠলো - বাপের থেকেই মেয়ে এমন হঠকারী স্বভাব পেয়েছে - যেখানে সেখানে নেমে যাবার।
প্ল্যাটফর্ম পুরো ফাঁকা - জনমানবহীন। বোঝা যাচ্ছিল - এখানে খুব বেশি ট্রেন থামে না। অন্তত, এইসময় কোনো ট্রেনের এখানে থামার কথা নয়। রেলিঙের ওপারে বিশাল একটা গাছ, তার পরেই ঢেউ খেলানো ঊষর জমি আদিগন্ত বিস্তৃত হয়ে আছে। উল্টোদিকে হয়তো স্টেশনের টিকিট কাউন্টার। সেদিকে নিশ্চয়ই রাস্তাঘাট বসতি সবকিছুই রয়েছে।
আমি বললাম - আম্বালায় নামলে হতো না? ওখানে স্টেশনের কাছাকাছি একটা হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে, একটা গাড়ি ভাড়া করে, সুন্দর আসা যেত।
- দেরি হয়ে যেত, বুঝলি। আমার মন কেমন যেন বলছে ....
ওকে শেষ করতে না দিয়ে মধুজা বললো - কিন্তু তোমার মেয়ে এখানে নেই।
- কীভাবে জানলে?
- কীভাবে আবার। আমার মেয়ে আর আমিই জানবো না? মেসেজ কি শুধু তোমার ফোনেই আসে বলতে চাও?
- তোমাকে কিঙ্কি মেসেজ করেছিল? বলোনি তো?
- আমিও ডিলিট করে দিয়েছি।
আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, মধুজা ঠিক সত্যি কথা বলছে কিনা। শুধু আমার ফোনে যে কোনো মেসেজ আসেনি, আমি শুধু এইটুকুই বলতে পারি।
হঠাৎ করেই নরম গলায় সৌমেন বললো - ডালহৌসি-ধরমশালা তো বেশ কয়েক বছর আগেও গেছি, মধুজা। এবার ওখানে গিয়ে তোমার সেই আগের কথাগুলোই মনে পড়তো। ভালো লাগতো না।
খানিকটা দূরেই একটা নিঃসঙ্গ ওভারব্রিজ। আমি সেইদিকে তাকিয়ে বললাম - তোরা একটু অপেক্ষা কর। আমি একটু খোঁজ খবর নিয়ে দেখি, এখানে কিছু পাওয়া যায় কিনা।
ওভারব্রিজের ধাপগুলো কেমন এবড়োখেবড়ো। একমাত্র আমরা নিজেরাই জানি, মেয়েটার চলে যাওয়ার পেছনে কে কতখানি দায়ী। কিন্তু আমাদের কারোরই সেই সৎসাহস নেই, সেটা নিয়ে একসাথে বসে আলোচনা করার। দূর থেকে ইঞ্জিন হুইসেল বাজিয়ে দিল, এবারে সিগন্যাল গ্রীন হয়েছে। আমি আর পেছনে ফিরে তাকালাম না। ভাঙাচোরা ওভারব্রিজের ধাপগুলো পেরিয়ে উঠতে থাকলাম ওপর দিকে। ট্রেন ছেড়ে দিল।

২৪টি মন্তব্য:

  1. উত্তরগুলি
    1. মনকে ছুঁতে পেরেছে। অতএব এককথায় ভালো।

      মুছুন
  2. বেশ অন্যরকম।

    উত্তরমুছুন
  3. খুব ভালো লাগলো গল্পটা,
    মনটা ভারাক্রান্ত

    সহজ ভাষায়, রোজ যে ভাষায় কথা বলি সেই ভাষায় লেখা

    উত্তরমুছুন
  4. একটু নতুন স্বাদের গল্প। শেষটাও বেশ আকস্মিক।

    উত্তরমুছুন
  5. হ্যাঁ আশ্চর্য ভ্রমণই বটে। একটা রহস্যময় উৎকন্ঠা আছে। ভাল লাগল।

    উত্তরমুছুন
  6. এই ভ্রমণের মূল জায়গা ছিল সোমেন-মধুজার মেয়ে কিঙ্কির রহস্যজনক অন্তর্ধান। সেই কারণেই সোমেন বড় উতলা। কিঙ্কি কী মেসেজ করেছিল, আর, কেনই বা সেটা ডিলিট করতে বলা হয়েছিল, সেটা সম্পূর্ণ অজানা। তার এই চলে যাওয়ার পেছনে শুধুই কি বেরিয়ে পড়ার হাতছানি, নাকি অন‍্য কিছু, সে-সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি গল্পে, শুধু এটুকুই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, কিঙ্কির চলে যাওয়া নিয়ে তিনজনের মিলিতভাবে আলোচনা করার কোনো অবকাশ নেই। সবটাই পাঠকের ভাবনার খোরাক হয়ে রইল।

    উত্তরমুছুন
  7. Ekta ghotonar poripurno chitro paoa sottweo pathoker Kaj ses holo na...borong tar aro onek kichu vabnar poth khule gelo...jure roilam golpotar songe...
    bola valo, golpo ta nijeke nijo gunei mone korie rakhlo...etai tomar lekhar Ekta Boro boishisthya...aro golpo sunte Chai...

    উত্তরমুছুন
  8. পাঠকের ভাবনার জন্য এতটা স্পেস - একদম অন্যরকমের গল্প। গল্পের তিনটি চরিত্র শুধু নয় পাঠকও বাধ্য হয় কিঙ্কির খোঁজ করতে। গল্পের চরিত্ররা আর পাঠক যৌথভাবে এই গল্পের মধ্যে মিশে আছে । বেশ ভালো লাগলো।

    উত্তরমুছুন
  9. Besh valo laglo..onno swader ekti golpo.

    উত্তরমুছুন
  10. ঝরঝরে গদ্য। খুব ভালো লাগলো।

    উত্তরমুছুন
  11. Mon chuye jaoa mon kemon kora golpo......erokom golpo aro chai

    উত্তরমুছুন
  12. একটা সুলিখিত গল্প পড়লাম

    উত্তরমুছুন
  13. একটা সুলিখিত গল্প পড়লাম। গল্পটা তৃষ্ণা মিটিয়ে শেষ হল না। যেহেতু খুব ছোট গল্প তাই বাবা মা মেয়ে লেখক ইত্যাদি চরিত্রদের সব কিছুই পাঠকদের অনুমান করে নিতে হবে। যে পাঠক সাহিত্য প্রেমী তিনি এমন গল্পে আনন্দ পাবেন। তবে সাধারণ পাঠক যারা কেবল বিনোদন পেতে গল্প পড়েন তাদের জন্যে গল্পটা তৃপ্তির হবে বলে মনে হচ্ছে না।

    উত্তরমুছুন
  14. ভালো লেগেছে | আশ্চর্য ভ্রমন টা রিঙ্কির, গল্পকার এর বিচিত্র ভ্রমণ নেশা, হঠাৎ ট্রেন থেকে নেমে যাওয়াটা - ভাবনার |

    উত্তরমুছুন
  15. মেসেজে লেখা কি ছিল, কিঙ্কির অন্তর্ধান কিভাবে হল, সৌমেন, মধুজা আর বক্তার মনে কি কি উঁকি দিচ্ছিল কিঙ্কির অন্তর্ধান নিয়ে, এসব নিয়ে অনিসন্ধিৎসু পাঠকের মনে গল্পকার চিন্তাভাবনার ময়দান তৈরী করলেন। অনেকটা অণুগল্পের আদলে হয়তো ছোটগল্প। তৃপ্তিদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে গল্পকার সার্থক। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

    উত্তরমুছুন
  16. ভালো হয়েছে।অনেক অভিনন্দন। অপেক্ষায় থাকলাম।

    উত্তরমুছুন
  17. গল্পের ভ্রমণ শেষ হলেও পাঠকের মনে
    "আশ্চর্য ভ্রমণ" চলতেই থাকে। ত্রিমাত্রিক সেই ভ্রমণপথ। এখানেই গল্পটির সার্থকতা। খুব ভালো।

    উত্তরমুছুন
  18. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  19. গল্পটি নিছক ভ্রমণের গল্প নয়, গল্পের নামের মধ্যেও রয়েছে সেই ইঙ্গিত। কিঙ্কি চরিত্রটির মধ্যে লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। সে কোন নতুন পথে হাঁটতে চেয়েছিল? কেনই বা সে নিখোঁজ হল? তার নিখোঁজ হওয়া শুধুই কি হঠকারিতা, নাকি তার পিছনে ছিল অন্য কারণ? এত সব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে পাঠকের মাথায়? তবে তার নিখোঁজ হওয়ার পিছনে যথেষ্ট যে কারণ ছিল তা গল্পের শেষে এসে আমরা বুঝতে পারি। যখন কথক বলেন - ''একমাত্র আমরা নিজেরাই জানি মেয়েটার চলে যাওয়ার পিছনে কে কতখানি দায়ী। কিন্তু আমাদের কারোরই সৎসাহস নেই, সেটা নিয়ে একসাথে বসে আলোচনা করার।'' নিঃসঙ্গ ওভারব্রিজ তার এবরোখেবরো ধাপ কিসের ইঙ্গিত বহন করেছে? সম্পর্কগুলোর উল্লেখ রয়েছে মাত্র, রসায়ন গুলো পাঠককে অনুমান করে নিতে হয়। সৌমেন-মধুজার সম্পর্ক যে ভালো নয় - তা আমরা অনুমান করতে পারি। চিত্ত দা কথকের বিয়ে না করার কারণ হিসেবে যে 'মধু'র কথা বলেছেন তাও আমাদের অজানা। মধুজা-কথকের সম্পর্কের রসায়ন কি? কিঙ্কির সঙ্গেই বা কথকের কেমন সম্পর্ক - এত সব প্রশ্ন ধাওয়া করে পাঠককে।
    মাত্র কয়েক মিনিট সময়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত এই গল্পের সূচনালগ্নে কেন সৌমেন ট্রেন থেকে নেমে যেতে চেয়েছিল তার উত্তর অন্বেষণ করতে গিয়ে আমরা এত সব প্রশ্নের সম্মুখীন হই। যার কোনটার উত্তরই লেখক দেন নি। পাঠকের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন সেই উত্তর খোঁজার দায়ভার। পাঠককে অনেকটা বড় স্পেস দিয়েছেন এই উত্তর খোঁজার জন্য, ভরসা রেখেছেন পাঠকের কল্পনাশক্তির উপর। আর তাতে করেই এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাঠক মনে জন্ম নিয়েছে নতুন নতুন গল্প। সচরাচর কোনো লেখক পাঠককে এতটা অবকাশ দেন না। পাশাপাশি সহজ সরল সাবলীল ভাবে গল্পের এগিয়ে চলার ধরণ, গল্পের প্রথম অধ্যায়ের অনুপূঙ্খ ডিটেল নির্মাণ পাঠকের নজর কেড়েছে। সব মিলিয়ে গল্পটা পড়ে মনে হল একটা নতুন ধরণের গল্প পড়লাম।

    উত্তরমুছুন
  20. অসাধারণ একটা ছোটোগল্প পড়লাম। সম্পর্কের টানাপোড়েনকে এভাবেও প্রকাশ করা যায়, জানা ছিল না। কথক চরিত্রের মানসিক অবস্থা, তার বিয়ে না করা, কিঙ্কির চকোলেট অপছন্দ, রহস্যময় ডিলিটেড মেসেজ আর বেশ কিছু ইঙ্গিত নিয়ে গল্পটি সত্যিই পাঠকের কাছে এক আশ্চর্য ভ্রমণ। ধন্যবাদ লেখককে।

    উত্তরমুছুন
  21. নিখোঁজ কিঙ্কির কী হল? গল্পকার বলেননি। পাঠকের ভাবার জন্য রেখে দিয়েছেন। খুব ভালো লাগল এই জায়গাটা। আর গল্পের গঠন, ভাষ্য দারুণ। সবমিলিয়ে ভীষণ উপভোগ্য।

    উত্তরমুছুন
  22. একেবারে অন্যরকম গল্প। পাঠককে ভীষণ ভাবিয়ে তুলবে। দারুণ লাগলো রে। ... গল্পের পরবর্তী অংশ কী হতে পারতো তা নিয়ে পাঠকদের মতামত কিন্তু নেওয়া যেতে পারে।

    উত্তরমুছুন
  23. একটা অদ্ভুত অন্যরকমের গল্প। কিঙ্কির হারিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক ধোঁয়াসা আবার শেষ হয়েও শেষ না হওয়ার গল্প। মনে হল এখান থেকেই শুরু হয় আরো একটা গল্প। ভালো লাগলো।

    উত্তরমুছুন

Featured post

সোনালী মিত্র