রত্নদীপা দে ঘোষ - মায়াজম

Breaking

৩ আগ, ২০১৫

রত্নদীপা দে ঘোষ

                                              তোর্সা থেকে তুঙ্গভদ্রা
                          












কবিতার যখন অর্থ বুঝিনি । সেই সময় চাড় বছর বয়েস আমার । আমি কুচবিহারের একটি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছিলাম ' দেবতার গ্রাস ' । বাবা আবৃত্তি করতেন । আমি শুনে শুনে । সেই প্রথম একটি বয়স্ক কবিতার সাথে একটি শিশু কবিতার হাত ধরাধরি ...
এর পর স্কুলজীবন । বাংলা ভাষার প্রতি একটা ভীষণ টান অনুভব করতাম । মনে হত এ আমার নিজস্ব । আমি এর সাথে খেলা করতে পারি । এর ধুলো গায়ে মাখতে পারি ... ইচ্ছে করতো একটার পর একটা শব্দ সাজাই ... শব্দ দিয়ে প্রজাপতি বানাই । প্রজাপতির থেকে একটু রঙ চুরি করে আরেকটি নতুন প্রজাপতি বানাই । সেই শুরু আমার । শব্দের সাথে শব্দকে বিবাহিত করে , তাদের ছানাপোনা বাচ্চা সহকারে আশ্রমের জীবন যাপন । 

যখনি মন চাইতো লিখে ফেলতাম একটা দুটো পঙক্তি । বিশেষ করে প্রাকৃতিক রূপ রস গন্ধ শ্রবণ আমাকে হাতছানি দিত । আমি চাইতুম সেসব চকমকি গ্যাসবাতি । আমার সন্ধ্যের মুখগুলিতে বিজলির চার হাত এক করে দিক । বৃষ্টির দিন গুলোকে মনে হত আমার শোবার ঘরের পাশে নারকেল গাছটি । ওড়না দুলিয়ে দিয়ে হাসছে লাগাতার । উত্তরবঙ্গের বৃষ্টি থামতেই চাইত না । এইরকম কোন এক দুপুরবৃষ্টিতে লিখেছিলাম ... বৃষ্টি তুমি নারীর শোভা , কোথায় তোমার ধাম / বৃষ্টি তুমি রাইকিশোরীর স্বাধীনতা সংগ্রাম । বৃষ্টি তুমি প্রথম প্রণয় এক পশলা কৌতুক / বৃষ্টি তুমি হৃদয়ের প্রতিদান , প্রকৃতির যৌতূক ...পুরো কবিতাটা মায়ের কাছে রাখা ছিল বহুদিন । অনেক পরে , আমি তখন পাটনায় । ' আধুনিক কবিতা পরিচয় , বইমেলা সংখ্যা ২০০৮ ' এ এই কবিতাটি ছাপা হয়েছিল । লেখার প্রায় কুড়ি বছর বাদে ।
এখন পেছনে ফিরলে অবাক লাগে । আমিও লিখতুম ... কে আমায় দিয়ে লেখাত ? আমি কি তখন প্রেমে ছিলুম ? রাইকিশোরীর স্বাধীনতা সংগ্রাম ? কী ভেবে লিখেছিলাম ...
অই কবিতার ই আর দুটি লাইন ... বৃষ্টি তোমাতে হাসনুহানার বাস / বৃষ্টি তুমি পুরুষ হাতের রাশ ... সেই কোন কিশোরীবেলায় আমি কি চিনতে পেরেছিলাম ... কোথায় সেই আগুন ... কাহারবা তালের যজ্ঞমিথুন ... কোথায় আমার প্রিয় অশ্বশক্তি ; ' তোমার জন্যে সূর্য লুকায় মুখ / তোমার জন্যে চাঁদ ভুলেছে সুখ ... 

আরেকটি কবিতার কথা মনে পড়ে । খুব প্রিয় ছিল আমার । ' চরিত্র আমার হাতের মুঠোয় ' ... কবিতাটি হারিয়ে ফেলেছি । ক্লাস সেভেন্থ এ টিফিন পিরিয়ড এ লিখেছিলাম ' ঋতুরঙ্গ ' স্কুলম্যাগ এ ছাপা হয়েছিল । কবিতা লিখতুম আর হারিয়ে ফেলতুম । মা সংগ্রহ করতে পারতেন যতগুলো সেগুলো চলে যেত স্কুলম্যাগে । তবে বেশির ভাগ কবিতাই মায়ের ভাগ্যে জুটতো না ... সব স্কুলেই লেখা হতো কিনা ... তারা আর বাড়ি অব্দি পৌঁছত না । আমি এতোটাই অগোছালো ।ছিলাম । এখনো আছি ।
ক্লাস টেন এ বুঝে গেলাম সম্পূর্ণ । নিজেকে চেনা জানাও পুরো হোলো । না লিখলে ভাল লাগে না । প্রেমে ব্যর্থ হলে কবিতা । মৃত্যুশোকে কবিতা । যুদ্ধে হেরে কবিতা । জিতেও কবিতা । বন্ধুনাশে কবিতা । বন্ধুভাগ্যেও কবিতা ... সেসময় বড় কবিতাময় ছিল নিঃশ্বাস প্রশ্বাস বেদনার বেঁচে থাকা ...
আরেকটি কবিতার কথা মনে পড়ে । তখন আমি ষোল । পরিচিত কারুর বিবাহবিচ্ছেদে অত্যন্ত আঘাত পেয়েছিলাম । রাত জেগে লিখেছিলাম ... 

' আদালতের নিঃশব্দ পরিসরে অকাল সন্ধে । জমাট বাঁধা মান এবং অভিমান । ত্রিমাত্রিক জটিলতায় দৃষ্টি হারিয়েছি আমরা , কালো কালির ছোঁয়ায় হৃদয়ে ছোট্ট আঁচড় । ঘর ভাঙছি আমরা । কচি কচি মুখগুলি বড় অসহায় । নিরুপায় কান্না ওদের চোখে । ওরা সব আমাদেরই । ওদের ভাঙছিও আমরাই ' ...
এখন বেয়াল্লিশ আমি । রঙিন কাগজ ক্রমশ সাদা হয়ে আসছে । শিশুপাঠ্য রচনাতে যা লিখেছিলাম তাকি এখন লিখতে পারি ? কবিতাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কি কবি রাখতে পেরেছে । নাকি হৃদয় দিয়ে শব্দ মাপামাপি করতে গিয়ে আরও বেশি মোহগ্রস্ত হয়েছি কবিতায় ...
একদিন কবিতাকে জেনে বুঝে মুখোশ পড়িয়েছিলাম । এখন টানাপোড়েনের অন্ধকারে কবিতাকে কি বিস্ফোরক করবো ? নাকি চারদিকে ঢি ঢি পড়ে যাবে ... মায়াবিনী নারীর চোখ যেখানে কবিতাকে অশ্রু করে রাখা ছিল ...
পূর্ণিমার কোলাহলে দাঁড়িয়ে মনে হয় , মৃত্যুর আগে একবার যদি কবি হতে পারতাম ...
তারপর ... তারপর ... তার ও পর আছে বৈকি ...
চিঠি । চিঠি । এবং চিঠি । যাদবপুর উনিভারসিটি । লেডিস হোস্টেল । ওল্ড ব্লক । বিল্ডিঙে ঢোকার মুখে ডানদিকের জানলায় সারি সারি চিঠি । সেলফোন তখন কোথায় ? চিঠি শুধু চিঠি তো নয় । মায়ের টিপ জ্বলছে বন্ধ খামে । বাবার চশমার ফ্রেম । সোনালি অক্ষরগুলো কুণ্ডলী পাকিয়ে বইছে আদরে আবদারে । চিঠি দেখলেই আমার মনে পড়ে শান্ত একটি স্বপ্ন । তোর্সা রঙ্গের জল । এখনো ছলা কলা শেখেনি ... শুধু শালিকের বকুনি মেনে নিতে শিখেছে ... সরল তারের মতো ঝিরঝিরে পাহাড় ... যার অনেক উঁচুতে ওঠা যায় না কিন্তু তার বেদানাফুলের কোড আমার সিঁড়িটি ছুঁয়ে থাকে ...
বস্তুত যাদবপুর আমায় জীবন চিনতে শেখায় প্রথম । নারকোটিক আবহাওয়া চেনায় ক্যান্টিনের কবুতর । কোকেনের সাথে কাদম্বিনীর পরিমিত ব্যাবহার । আমি জানলুম , মাদক এক আশ্চর্য উদ্ভিদ । লতায় পাতায় জড়ানো এক ঘর ঝিম ... মা- বাবা- বোন আঁকা সবুজ সানগ্লাস । একটুকরো রোদ পড়ে আমি মন রাখি ঝিলের অনুস্বারে ... টেলিস্কোপের উচ্চারণে অর্ধেক তারাশতাব্দী ...বিসর্গ সমেত আমাকে আলাপ করে হেঁটে যায় বন্ধুতার বেগুনী খাঁচা । মুখ মুখোশ আলাদীনের নিস্তব্ধ দুপুর ...
কলকাতার গ্রীষ্মবাতাসে বড় নুন । সেই নুনের স্বাদ পেয়ে আমি যেন এক দীর্ঘ ধ্বনিবিপর্যয় । ব্যথারা উড়ে যায় ভুরুর বকপাখি বেয়ে । কলিঙ্গ জয়ের পর অশোক যেমন করুণ ... পাতায় পাতায় মৃত্যুর নতুন সংসার .. বৃক্ষভেদে কোনো আলপনা নেই ... প্রতিটি শিলামূর্তির নখ নাভি কান্ট্রিলিকার ...
বান্ধববিহীন বুনো সুবাসে কবিতা সেই আদি মাটির স্যালাইন ... মনে করিয়ে দ্যায় , আমি ছিলুম ... আমি কিন্তু আছি ।
' জলে না ডুবেই সাঁতার শিখলে বুঝি ? আর আগুন চেবাতে ? মুরি মিছরিতে ভেসে গেল জুন মাসের আকাশ , তুমি মহুয়া ফুলের ভাষা চেন ? পাঠশালা জারি করতে করতে যাদের স্তনের বোঁটাগুলো সাঁওতালি ঝর্না হয়ে গেছে ... তাদের ক্রিয়াপদ্ধতি জানো ... পোকামাকড়ের অন্য খিদেও পায় বুঝি ? না শুধুই অন্নবেদনা ... '
কবিতা বহুগামী । তৃতীয় ধারার প্রচ্ছদ । ব্ল্যাকহোলের খিদে । জোনাকির ধিকিধিকি শুক্রকীট ... আমি প্রশ্নগুলি গুণে গুণে তুলি কবিতার অনন্তশয়নে ... মাঝবয়েসি ফেরিওয়ালারা চোখ বেচতে চায় আমার কাছে ... গভীর রাতে ভেঙে যায় ঘুম ... মাকে খুঁজি , হাতড়াই বাবা... বোনের সুগন্ধ ... তারপর ষ্টীমার ঘাটা মুছে উঠে বসি । কবিতায় ... লিখে রাখি ... নিবু-নিবু মোম ... ' আফিমের জ্যোৎস্নায় ছাই হতে হতে জেনেছি চাঁদের চেয়ে বড় শবসাধনা নেই । মৃত্যুর কপিকল গেঁথে আছে হাতে । তবু প্রস্তরযুগের শোক কুড়োতে কুড়োতে আমি বুনেছি শিশুকাল ... পানপাতার দোলনা । প্রিন্টেড স্লেট । কাঁপা হাতের খয়েরি দাদুআম্মা ... চাঁদের চেয়ে বড়ো শৈশব নেই । গুমরে ওঠা আতরবাঁশী । বেলা যত বাড়ে আঁজলায় টানিয়ে রাখি চিরুনি না চালানো এক্কাদোক্কার চুল ... ''
শিশুকাল ফেলে এসেছি কবেই । কিশোরীবেলার ওম । কবিতার হাত ধরে বার বার ফিরে যাওয়া । ফিরে ফিরে চাওয়া ' ‘ দৃষ্টিলন্ঠনের সামনে দাঁড়াই । আকাশ ফুঁড়ে ঢুকে সময়ের নাভি । আমাকে ফিরিয়ে দাও মৃত ভাস্কর্য । অশ্রু দাও আদিবাসী শিল্পীর ক্ষরণ ... হোম দাও চিত্রকল্পের কণ্ঠনালী ছুঁয়ে ... অনেক পিপাসা , আমি অন্তিমের চিবুক ধরে বসে থাকি ...’’
তারপর একদিন মুনিয়ার ঝাঁক হই হই করে পালকের গান শোনায় ।নতুন জীবনে পা ...কবিতাও সেদিন সঙ্গী ছিল বৈকি । সাক্ষীও । ‘ আজ আমার বিবাহ । আজ আমি পানপাতা । লয়কারি । কলসপক্ষের বৃন্তছেঁড়া চাঁদ । আর এইসব লিখে রাখছি ভ্রূ-সন্ধির গোপন নথিপত্রে ‘’ ...
গান নিয়ে খেলা করি । কবিতা দিয়ে আঁকা করি রোম রোম নদীর বিস্তার । পটনা প্রবাস আমার পিঠ ছুঁয়ে থাকে । সংসারের সাত-পাঁচ বুঝতে বুঝতে আমি মেলে ধরি শীতঘুম । উজান-গঙ্গা হ্যারিকেনের দ্যুতি । কবিতার অপার্থিব সংসার ...
‘ বৃদ্ধ হয়ে গেলেও বেশ কিছু স্বপ্ন হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে আজও । এখন প্রশ্ন হচ্ছে আকাশটা এতটা নীল রঙ পেলো কোথা থেকে ? অনন্ত জৌলুশ এতখানি ? বৃষ্টিতো এখনো বর্ষা আনেনি ... ‘’
ঈশ্বর আমার কাছে একদলা বিশ্বাস । এক হাতা গরম শিউলি ফুলের কমলা । তার বেশি কিছু নয় । হঠাৎ একদিন পটনা কালীবাড়ির দেবীমূর্তি দেখে আমার কবিতা বোধ হয় প্রবল । বাড়ি ফিরে এসেই লিখে ফেলি ‘ আমি ঈশ্বর হতে চাই ‘’ কবিতাটি ।... ‘ মন্দিরে গিয়েছিলাম । প্রদীপের মিঠে আলো আর কোমল শঙ্খধ্বনি ... সব মিলিয়ে যেন একঝাঁক শারদীয়া কাশফুল ... ঈশ্বর তখনো বিটোফেনের সুরে আচ্ছন্ন ... নতজানু হয়ে প্রার্থনা করি , আমি ঈশ্বর হতে চাই ‘’ কার কাছে চেয়েছিলুম এই ভয়ঙ্কর চাওয়া ? কেনই বা চেয়েছিলুম ... চাইলে তো কোনো ক্ষতি নেই । সব চাওয়াদের পেতেও নেই । সব কবিতাদের লিখতে নেই । কোন কোন কবিতা না লেখাই ভালো । যেমন সব কান্নাদের দিব্যদৃষ্টি নেই । যেমন কিছু অন্ধকার আলোর জন্যে ভালো ... 

এরপর জীবন । যুদ্ধ ? ঠিক তা বলতে পারি না । স্পিডোমিটারে কন্যার গায়ের গন্ধ । অনেক শব্দ । অনেক হাসি । গল্প বদলে ফেলি । কবিতার ভাষাও শিশুমুখের ঘ্রাণ । ‘ সংসার এসে গেলে কবিতা হারিয়ে যায় রাতের নিউক্লিয়াসে ...’
সত্যি কি হারিয়ে ফেলেছিলুম কবিতা ? হয়ত অন্য সৌরবস্তুর মতো , হয়ত পরবাসী ক্লাউডের মতো হারিয়ে ফেলেছিলুম তাকে । যাযাবরের দড়ি টেনে টেনে অবশেষে মিশেছি তুংগভদ্রার ইলেকট্রনে ...
একের পর এক কবিতা সমস্ত কার্নিভাল জ্বালিয়ে দ্যায় । রাতশামুকের খোলস ছাড়িয়ে আমার কপালে লালসকালের পারিজাত । এই পর্বটি যেকোনো আষাঢ়ের থেকে আকাশী মেঘদূত । যে কোন রজনীগন্ধার চাইতে সুদূরপ্রসারী পেন্সিল ... আমি যেন নক্ষত্রের যোনিতে জন্মেছি এইমাত্র । কবিতার খাঁজকাটা পদ্মজহরে মৃত্যু হয়েছে আমার । আমি বেঁচে থেকেও বেঁচে নেই ... আমার গায়ের রঙ কেন পরাজিত গ্রহের মত আশ্বিন হয়ে উঠেছে ? আমার বুঝি অনেক দুঃখ ...বন্ধুরা বলে ‘ আমি যখন কবিতা লিখি দূর থেকে তখন আমাকে স্ফটিক রঙের স্থাপত্যের মতো দেখায় ... ‘
মৃত্যুতে ঝরে গিয়েও বার বার আঙুল তুলি ‘ আর দেরী করো না যীশু , মৃত্যুকে নিষিদ্ধ করো আজ রাত থেকে ... ‘’ কেন আজ রাত থেকে ... এই মুহূর্ত থেকে নয় কেন ? ... এ আহ্বান কবিজীবনের নোটিশ ভাঙার গান । এ গান আকাঙ্ক্ষিত গোলাপের চিত্তশুদ্ধির প্রলাপ ...
নিপুণভাবে স্বপ্নিত পাণ্ডুলিপিরা দ্বিতীয় আর পথ নেই বলে দু / চারটি কবিতার বই হয়ে যায় ... ।
তুঙ্গভদ্রা ক্ষীণকোটি । নাইটল্যাম্পে আঁকড়ে থাকে বৈশাখ । কখনো কখনো সেরিব্রাল এলাকায় শোনায় মৃদুরিদিম আর আমি কোঁচকানো কবিতায় ছক্কা-পাঞ্জার বৃষ্টি বাজাতে থাকি ... বেলা হয় । লুডোখেলার স্বর বাড়ে । মেঘএক্সপ্রেস লেট করে খুব ... ‘ প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু বৃষ্টি থাকে ... ” তবুও ।
যেমন প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু কবিতাও থাকে । হে চিরপ্রনম্য কবিতা , গোলাপি গ্যালনে আমাকে বাঁচিয়ে রাখো ..দেবদূতের ফলভারনম্র চিরকুটে ঘন করে রাখো আয়ু । শব্দে শব্দে কতো আলো , বিন্যাস ... অশ্রুর চার পাক স্বরলিপি... সেই ধোঁয়ায় পাখিদের বেণীবাঁধা ম্যাজিক । কিশোরী অ্যালফাবেট , মা-গর্ভের সারস অন্ধকার । 

কী অসম্ভব গভীর ঠোঁট ... একলব্যের ছায়াদেয়াল চিড়ে কবিতার অঙ্গুলিনির্দেশ ... দীক্ষিত জবার ইবাদত !
অন্য কোন সরোদে জমা রাখি গন্ধরাজের কুয়াশা । ধ্যানের মায়াপ্রধান স্ত্রীহরিণ , মার্বেল মূর্তিতে এই প্রথম কৃত্তিকার নাম ধরে ডাকি । রুগ্ন অরণ্য ফেলে চুপিসারে উঠে যায় গোপন সিঁদুর ... অক্ষয়পাত্রে ঘুরে দাঁড়াই , চিৎকার করি । এমন কোনো অরণ্য নেই যার ফুসফুসে বয়ে যায়নি মঙ্গলকাব্যের কবীর ... এমন কোনো ঘুড়ি নেই যার ফোলাপেটে দ্রাক্ষাক্ষেতের সুসন্তান নেই ... পার্লার বোলানো মরুতে সিঁথির মতো সরু সরু বর্ষা ... বাড়ন্ত গড়নের বিদ্যুৎ ...
দেবতার বাড়ি থেকে ক্রমশ প্রসারিত হতে থাকি বেশুমার কবিতার দিকে ...

২টি মন্তব্য:

  1. এই লেখাটা যেন একটা রাস্তা অনেক দূর থেকে নিজের ভিতরে ফিরে এসে নিজেকে ছুঁয়ে ফেলার। নিজেকে জড়িয়ে ধরে আদর করার। "সিঁথির মতো সরু সরু বর্ষা " ভালোবাসার অসংখ্য লাল নীল পিবলস তোমার দিকে গড়িয়ে দিলাম"..... শম্পা

    উত্তরমুছুন
  2. তোমাকে পাঠ করলুম!

    উত্তরমুছুন

Featured post

সোনালী মিত্র