গৌতম সেন - মায়াজম

Breaking

২৪ জানু, ২০১৬

গৌতম সেন


                                                           সমাপ্তি 




নয়নতারার দল উঁকি মারছে এ বাড়ির নীল অপরাজিতার দিকে। শিউলিভরা গাছ সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে। খুশির এই মহোৎসবে ঝরে ঝরে পড়ছে কমলা আশীষ হয়ে। বোধিসত্ত্ব - হাতে চায়ের কাপ, বাগানমুখী জানলার গ্রিলের গরাদের এধারে দাঁড়িয়ে।এক আনমনা দৃষ্টি বিন্যস্ত আজ আসন্ন শারদীয়ায়। এক দশকের সামান্য বেশিকিছু সময়, তার জীবনযুদ্ধের সে লড়াইকে সামান্যতম ফিকে করতে পারে নি আজও। চায়ের এক এক চুমুক যেন স্মৃতিরোমন্থনের এক এক ডুব ......

......
সময়টা দুপুর গড়িয়ে বিকেল। বর্ধমান  মার্কেটে তখন আসন্ন উৎসবের জমজমাট মহড়া।দেখছে কিন্তু কিনছে নাঅবস্থাটা পুরো পালটে গ্যাছে। সবাই ব্যস্ত কেনাকাটায়। এখন লোকে কিনছে বেশি, ভাবছে কম। হাতে-গরম বোনাস সব পকেটভরা। শরিফ মেজাজ।

গাড়ি-ঘোড়া বাঁচিয়ে রাস্তা পেরোলেই লাইফ লাইন নার্সিং হোম। ফুটপাতে পায়চারী করছে বোধিসত্ত্ব এই ব্যস্ত শহরে যেন সাহারায় মরুপথ যাত্রী সে।দিন দশেকের বেশি হয়ে গেল, অসুস্থ কেয়া আই.সি.ইউ এ দড়ি টানাটানি রতবাঁচা কিম্বা মরা।  মাঝে মাঝে জ্ঞান ফিরে আসে তো ওর ইচ্ছেও ফিরে আসে, ছটফট করে বাড়িতে ফেরার জন্যে। আশার আলোটুকু যেন স্তিমিত হয়ে আসছে, সে এক অনন্ত জমাট অন্ধকার টানেলের দিকে ক্রমেই হেঁটে চলেছে, এগিয়ে চলেছে এক যান্ত্রিক ভবিতব্যের কাছাকাছি। তার নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছা তলিয়ে যাচ্ছে কেয়ার এই ক্রমবর্ধমান প্রাণ-বিপর্যয়ের অতলান্ত খাদে। যুদ্ধক্ষেত্রে ক্লান্তি যেমন যুদ্ধের অনিবার্য পরিণতি বলে দেয়, বোধিসত্ত্ব ও যেন চোখের সামনে এক হেরে যাওয়া যুদ্ধের ছবি ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে উঠতে দেখছে।ডাক্তারদের হাব-ভাব, চাহনি, অভিব্যক্তিও তার চোখে কেমন শীতল, নিরাশ, নিষ্প্রাণ বলে মনে হচ্ছে তার আজকাল।

আর কদিন পরেই কলকাতা সেজে উঠবে রঙে মণ্ডপে মণ্ডপে বর্ণময় দেবীমূর্তি, বহুবর্ণ শোভিত মণ্ডপসজ্জা, মানুষের মিছিল, সেখানেও রঙের স্রোত। অথচ সময় এখন এক দূর্বহ টানাপোড়েনের নির্ঘন্ট যেন তার কাছে। নাঃ, আর ভাবতে পারছে না সে। আপাতত: ডাক্তারের আসার অপেক্ষায়। বেলা একটায় ডাক্তারের আসার কথা মিনিট পনেরোই বাকী। আবার চা, আবার সিগারেট আর ফাঁকে ফাঁকে সমব্যথী স্বজন-বন্ধুদের কেমন আছে? আজ কেমন? ডাক্তার কি বলছে?” –এ জাতীয় মোবাইল অনুসন্ধানের যান্ত্রিক জবাব দেওয়া বোধিসত্ত্বকে এগিয়ে নিয়ে যায় দুপুর একটার দিকে একটু একটু করে।

সময় দুপুর বেলা দুটো। ডাক্তার নতুন কিছু আশার কথা শোনায় নি। এম.আর.আই করা হয়েছে। ব্রেইনে কিছু ধরা না পড়লেও পেশেন্টের ঘন ঘন কন্‌ভালসান্‌ বোধিসত্ত্বের মত ডাক্তারদের কাছেও আশঙ্কার আশু ইঙ্গিত বলেই মনে হচ্ছে। এক বন্ধুস্থানীয় ক্যান্সার বিশারদ ডাক্তার বলেছে এম.আর.আই. এ সব সময় ধরা নাও পড়তে পারে। সুতরাং এ রোগ ব্রেইনে বিস্তার করেছে কি না, তা এখনি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

ক্যালেন্ডারের পাতা মেনে এল মহালয়া।বাতাস ভরানো প্রত্যুষবাণী – “আশ্বিনের শারদ প্রাতে।মেতে উঠল ভুবন যেমন মাতাতো বোধিসত্ত্ব ও কেয়ার জীবনে মাত্র বছর দুয়েক আগেও। আবাসনের পুজো, সেখানে কাজে-কর্মে কেয়ার নিরবচ্ছিন্ন উপস্থিতি, এমন আরও কত কি তার চিন্তায় সজল ফ্ল্যাশব্যাক হয়ে দেখা দিল। সামনে ভাতের থালা। নিয়মের কয়েক দানা ভাত তাকে মুখে তুলতেই হচ্ছে, এ কদিন বাড়ি যাবার ফুরসত মেলে না তার। তার স্ত্রী ইন্টেন্সিভ কেয়ারে, যখন তখন ডাক পড়তে পারে।

উৎসব এসে গ্যাছে শহরে। সন্ধ্যায় বিজলি আলোর ঝলক এ মাথা থেকে ও মাথা। মানুষের মুখ যেন সব খুশির ঘাম তেল মাখা। বোধিসত্ত্ব ভাবে আজ তার এই অবস্থা না হলে, এমন ছেঁকে নেওয়া উপলব্ধি হয়ত হতই না তার। রাতের অন্ধকারকে যেন ছুটি দেওয়া হয়েছে আলোর ঝরনাধারায়। কিন্তু সে তো জানে সব অন্ধকার লুকিয়ে বেঁচেছে তার মনের ভিতরে। এ এক হেরে যাওয়া যুদ্ধ, সমাপ্তি ক্ষণের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত।

ইতিমধ্যে ডাক্তার বদলানো হল, নার্সিং হোম থেকে ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হল রোগীকে। বোধিসত্ত্ব বুঝতে পারে এসবই হোপিং এগেইন্‌স্ট হোপ। তবে নতুন ডাক্তার একটু বেশীই সংবেদনশীল। তিনি ওর সঙ্গে কার্য-কারণ সম্বন্ধপূর্বক খুঁটিনাটি বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন চিকিৎসার গতিবিধি নিয়ে। আশা তেমন না দিলেও তার জীবন কুরুক্ষেত্রের মহাযুদ্ধে তিনি যেন পার্থসখা শ্রীকৃষ্ণ।

আজ উৎসবের অভিসার শহর জুড়ে- ষষ্ঠীর সকাল। অকাল বোধনের এ সন্ধিক্ষণে অসময়ে বিসর্জনের সুর হালকা হলেও বাজতে শুরু করেছে।কুয়াশাছন্ন প্রিয় মানুষটি তার লড়ছে, বেঁচে থাকার চাবিকাঠি যেন জোর করে লুঠ হতে চলেছে। যুদ্ধ এখন শুধুই নিয়মরক্ষা বোধিসত্ত্বের কাছে।

প্রদীপ দ্বিগুণ উজ্জ্বলতায় জ্বলে ওঠে, জ্বালানী ফুরোবার আগে। তেমনই ডাক্তার আজ বোন্‌ ম্যারো পরীক্ষায় পাঠিয়েছে,আর কোন এক জাদুমন্ত্রে কেয়া আজ যেন অনেক সুস্থ। আই.সি.ইউ থেকে কেবিনে ট্রান্সফার করা হল তাকে। কথা বলছে, ক্লান্ত হাসির ক্ষীণ ঝিলিক মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে তার ঠোঁটে। টিভির পর্দায় অহরহ দেখাচ্ছে দুগ্‌গা ঠাকুরের মুখ। উদাসীন চোখে দেখছে সে, দৃষ্টিতে শান্ত নির্লিপ্ত ভাব। জানলা দিয়ে সে তাকিয়ে দেখে শরতের আকাশ তার জন্যে আজ এই প্রথমএকই রকম নীল। অবরুদ্ধ যন্ত্রণা  নীরব দীর্ঘশ্বাসের ভাঁজেমুড়ে মিশিয়ে দিল সে আকাশের গায়ে।

ভিজিটিং আওয়ার। ছেলে তার সঙ্গেই আছে, মা এখানে আসার পর থেকে। যে সব শুভাকাঙ্ক্ষীর দল এল, যৎসামান্য কথা বলল যাবার সময় মৃত্যুপথযাত্রী এই মানুষটিকে অনেক আশার কথাও শুনাল, বোধিসত্ত্বকেও ভরসা দিল অনেক।

আমি আর বাড়ি যেতে পারলাম না গো!” – লোকজন চলে গেলে কেয়ার অস্ফুট স্বগতোক্তি কানে এল বোধিসত্ত্বের। ও তাড়াতাড়ি বেডের কাছে আসে, কেয়ার মুখটা চাপার চেষ্টা করে। দূর্বল হাতে বোধিসত্ত্বের হাত নামিয়ে সে বলে – “মেয়েটাকে এনো না এখানে, ও বড় ছোট্ট, আমার নাকে, মুখে, সারা শরীরে এত নল ও সহ্য করতে পারবে না।” “তুমি আর একটু সুস্থ হয়ে ওঠো, ওকে নিয়ে আসব একদিন।” - বোধিসত্ত্ব বলে অসাড় গলায়। বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ। ছেলেটাকে কাছে ডেকে নেয় ইশারায় –“বোনটাকে দেখিস। বাবাকেও।ছেলের মুখ বিবর্ণ হয়ে আসে। একেবারে ছোট তো নয় সে, যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং -দ্বিতীয় বছরের ছাত্র। চোখের জল চেপে সে মায়ের মাথায় হাত বোলায়।

ছেলেকে বাড়ি পাঠিয়ে বোধিসত্ত্ব আবার হাসপাতালে ঢোকে। চারিদিকে ঢক্কানিনাদ, মাইকের গানের ভেসে আসা সুর। হয়ত বাবুবাগানে বুঝি এতক্ষণে সন্ধ্যা বোধন শেষে মানুষের খুশির ঢল নেমেছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখার মত সময় বা স্থিতি কোনটাই ছিল না তার মনের। পদক্ষেপে তার দিকভ্রষ্ট নাবিকের দীর্ঘশ্বাসের সুর। তবুতেমন কিছু নয়ভাবের মুখোশটাকে ঠিকঠাক করে সে কেয়ার কেবিনে ঢুকল। টিভিটা চলছে কিন্তু মানুষটা নিস্তেজ বিছানায় লেপটে রয়েছে। টিভি বন্ধ করে দেয়, ঘরের ডিম লাইটা টা জ্বালিয়ে দিয়ে ছোট বেঞ্চটার কোণায় গিয়ে বসে। অপেক্ষায় থাকে একটু বাক্যালাপের যদি সুযোগ ঘটে।

না, আর কথা হল না। সপ্তমীর সকাল, কলাবউদের দল বেঁধে স্নানযাত্রা চলছে বাইরে। ঢাক বাজছে, গঙ্গার বুকে কলাগাছের নববস্ত্র পরিধান লালপেড়ে কোরা শাড়ির ব্যাপ্তিতে গোটা শহর সধবা। কেবিন নং ২০৭। রোগীর আবার সংকটাপন্ন অবস্থা। অসহায় বোধিসত্ত্বের ছোটাছুটি হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তারদের সাথে। বোধিসত্ত্বের প্রাণের স্বত্বা, জীবনসঙ্গী যুঝতে পারে নি আর। সকাল হতে না হতেই পেসেন্ট আবার গুরুতর অসুস্থ। আবার ইনটেন্‌সিভ কেয়ার। শূন্য দৃষ্টিতে মাঝে কাঁচের নো এনট্রি দেয়ালের দিকে চেয়ে আছে বোধিসত্ত্ব। এপারে সে ওপারে কেয়ার অসুস্থ দেহ শোয়ানো বেডে, ডাক্তার ও নার্স ব্যস্ত। লাইফ সাপোর্ট ঘিরে ধরল শরীরময়, বোধিসত্ত্বর ঝাপসা চোখে সে যেন বিপন্ন দশভুজা। এ কোন পরিণতি। কর্কট-বেশে এ কোন অসুর পর্যুদস্ত করছে তার প্রিয়াকে। সাতপাঁচ ভেবে চলেছিল সে। ছেলে তাকে নিয়ে চলল চা খাওয়াতে।

মহালয়ায় বাড়ি যাব, ষষ্ঠীর দিন নিয়ে চল” – বাজতেই থাকল কানে, চায়ের দোকানে বসে তখন বাবা আর ছেলে। একবার বাড়ি যেতে হয়- বোধিসত্ত্ব তার ছেলেকে নিয়ে বাড়ি রওনা হল। আবাসনে তখন সপ্তমীর পুষ্পাঞ্জলির পর্ব চলছেঅন্যদিকে যুদ্ধবিদ্ধস্ত এক জীবনযুদ্ধের নাগরিক প্রস্তুত হয়ে চলেছে আসন্ন বিসর্জনের বাজনা শোনার জন্যে। সে জানেবাড়িতে কেউ এখনও যুদ্ধ শেষের ইঙ্গিতটা ধরতে পারে নি। হঠাৎ সে ইঙ্গিত বেজে উঠল তার মোবাইলে। ডাক্তার নিজে ফোন করে তাকে দেরী না করে হাসপাতালে চলে আসতে বললেন।

আই.সি.সি.ইউএ তখন বেশ কিছু সিস্টার কেয়াকে নিয়ে ব্যস্ত, প্রচণ্ড ক্ষিপ্ততা তাদের প্রতিটি আচরণে। কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে। ওনার একটা কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়ে গেছে এইমাত্র” –ডাক্তার বোধিসত্ত্বকে ডেকে বললেন – “খুব সম্ভবত, পেশেন্টকে ভেনটিলেটরে দিতে হবে।বন্ডে সই সাবুদ হল, যেন বিধাতার সাথে চুক্তি সম্পাদিত হল।  রাত কাটে রাতের মত। উৎসব মেতে ওঠে প্রবল উন্মত্ততায়। বাইরে এক অকৃত্রিম আনন্দ-বাতাবরণ, মানুষের ঢল। হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ারে কাঁচের ঘরে, মরণের পথে জীবনের শেষ সম্বলটুকু ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতি চলছে - যমে মানুষে টানাটানি। স্থবির বোধিসত্ত্ব তখন উল্টানো বালুঘড়িতে ঝরে পড়া অন্তিম সময়। বিধাতার নির্মম ফন্দীর কাছে যুদ্ধ বিজিত বন্দী।

দেবী উৎসব তখনও জমজমাট। মহাষ্টমীর সকাল। রাত শেষে ভোরের আলোয় পুজোর সবেমাত্র দ্বিতীয় দিন। আলোতে আলোতে শারদীয়া গন্ধ। ফুটপাথের চায়ের দোকান দেখল বোধিসত্ত্বের চায়ের গেলাস শেষ হতে পারেনি, আবার ফোন বেজে উঠল। ওর কানে ভেসে এল প্রাণ বিসর্জনের খবর ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়া হচ্ছে। কেয়া আর নেই!!

বোধিসত্ত্ব তুমি কাঁদো। কাপুরুষ নও তুমি, এতদিনের যুদ্ধ সে কথা প্রমাণ করেছে। আজ তুমি কাঁদো। এ শরত তোমার নয়। এ শারদীয়া অকাল বোধন, আগমনী সব আজ তোমার কাছে অর্থহীন। তোমার জীবনে আজ অকাল বিসর্জন। অকাল বর্ষণ।

মহালয়া নয়, ষষ্ঠীর দিনও নয় অষ্টমীর দিন বাড়ি এল বাড়ির বউ শুধু প্রাণহীন দেহখানা নিয়ে। ছোট্ট মেয়েটা তার মাকে হাসপাতালে যেতে দেখেছিল, এবার সে দেখল তার মায়ের অন্তিম সৎকারের আয়োজন তার চোখের সামনে। শোকের প্রকাশ তার যত নাছিল, ছিল তার বাবার দিকে সজাগ দৃষ্টি বাবাকে সে বার বার কাঁদতে বারণ করছিল, মনে করিয়ে দিচ্ছিল বোধিসত্ত্বকে তার নিজের শরীরের কথা তার ব্লাড সুগার। এই সামগ্রিক বিপর্যয়ের ভিতর অতটুকু মেয়ে কোথা থেকে এই পূর্ণতা পেল রাতারাতিভেবে অবাক হয় বাকি শোকাকুল উপস্থিত ছিল যারা।
শারদ উৎসব জমাট, অষ্টমী পুজোর সকাল ঠিক এইরকম একটা সময় বোধিসত্ত্বের জীবনে, তার ছেলে-মেয়ের জীবনে চিরতরে লিখে দিল এক অপূরণীয় ক্ষতির খতিয়ান। সৎকার সমিতির শববাহী শকট এগিয়ে চলল শ্মশানের পথে, বোধিসত্ত্ব লণ্ডভণ্ড মন নিয়ে সামিল হল সে বিসর্জন যাত্রায়। উৎসবের শহরে মণ্ডপে মণ্ডপে পূজার উপাচার, পুরোহিতের পুষ্পাঞ্জলির মন্ত্র এরই মধ্যে বোধিসত্ত্ব শুনতে পায় তার ছেলেকে আর এক পুরোহিত মন্ত্রোচ্চারণ করাচ্ছে, তার মায়ের প্রাণহীন শবের সামনে। তাকে ঘি, চন্দনে চর্চিত করে অনন্তযাত্রার জন্যে তৈরি করা হচ্ছে। অবশেষে সেই অগ্নিপথ যাত্রা। অগ্নিগর্ভ সে সাগর এই অসময়ের অন্তিম নিরঞ্জনের অপেক্ষায়। আজ তার জীবনে এক অন্তহীন বিজয়া দশমী, শুভ না অশুভ সময় বলবে তা! রণক্লান্ত মানুষটা গতপ্রাণ সেই ভালবাসার দিকে শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে রইল।

কাছেপিঠে কোন পুজো মন্ডপ হতে গান ভেসে এল – “জাগো তুমি জাগো..
 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র