সুনেত্রা সাধু - মায়াজম

Breaking

২৫ সেপ, ২০২২

সুনেত্রা সাধু

                  লবণ জল

                      



‘রেড স্কাই ভিউ পয়েন্টে’ ওদের দেখা হওয়ার কথা। ইবা পৌঁছেছে একটু আগেই। বসে আছে ‘বাবল বারে’র ভাসমান কেবিনে। একমনে তাকিয়ে আকাশের রং বদল দেখছে। এই সময় সাতটা চাঁদকে একসঙ্গে দেখা যায়। সে এক অপার্থিব দৃশ্য। একটু আগেই এরিনা অস্ত গিয়েছে। আকাশটা রক্তলাল। মাঝে মধ্যে হলুদ মেঘের ছিঁটেফোটায় আসন্ন বৃষ্টির আভাস। আর কখনো বৃষ্টি দেখা হবে কিনা ইবা জানে না। সময় ফুরিয়ে আসছে। ঘড়ির ডায়ালে একটা লাল বিন্দু ক্রমাগত জ্বলছে নিভছে। সেদিকে তাকিয়ে ইবা দীর্ঘশ্বাস  ফেলল। নির্লিপ্ততার ওষুধটা পার্সেই ছিল, জিভের তলায় রাখল। কয়েক সেকেন্ডেই মনখারাপটা ভ্যানিশ হয়ে যাবে। ৩৬ নম্বর স্কাইওয়েতে চোখ রেখে বসে রইল ইবা। বুত্রাস আজও লেট, বরাবরের মতোই…


এই কেবিনের দায়িত্বে থাকা ‘জেনোবটস’ কিছুটা দূরে খুব শান্ত ভাবে অপেক্ষা করছে। বুত্রাস এলে ইবা ওর সক্রিয়তার বোতামটা চালু করে দেবে। কাচের টেবলটা  এখন আস্ত একটা মনিটর। দেখাচ্ছে ওরা কী কী খাবার অর্ডার করতে পারে। ইবা বুত্রাসের পছন্দের সঙ্গে পরিচিত। সেই মতো খাবার বেছে রাখল। ঘড়িটা সংকেত দিচ্ছে, প্রয়োজনের থেকে কত ক্যালারি বেশি খাবার অর্ডার দিতে চলেছে সেটা জানিয়ে সতর্ক করে দিল।  আগামীকাল এই ‘সতর্ক সংকেত’ থেকে মুক্তি পাবে ইবা। শরীর জুড়ে ছেয়ে আছে অনাবিল নির্লিপ্ততা, আসন্ন মুক্তিতেও ওর আনন্দবোধ হল না। বুত্রাস খুব কাছেই, ঘড়ি জানান দিল। একটা লীল রঙের ‘উইন্ড বাইক’ ৩৬ নম্বর স্কাইওয়ে ধরে এগিয়ে আসছে। ইবা মুগ্ধ দৃষ্টিতে সেই দিকে তাকিয়ে থাকল। বুত্রাস ওর সব থেকে প্রিয় সঙ্গী। বহু সুখকর মুহুর্ত ওরা একসঙ্গে কাটিয়েছে। আজ ওদের শেষ আড্ডা। বুত্রাসের জন্য এই অধীর অপেক্ষাটা ইবা কি মিস করবে? সেরকম কোনো ইনপুট ফিউচার ডেটায় থাকবে কি ? ইবা জানে না। 


কেবিনে ঢুকেই হইচই লাগিয়ে দিল বুত্রাস।  ওর নাকি অসম্ভব খিদে পেয়েছে। এক্কেবারে ‘ঘর খাই, বাড়ি খাই খিদে’।  হাবিজাবি অর্ডার দিচ্ছে, স্মার্ট জেনোবটস ওয়েটারও বুত্রাসের মাইন্ড রিড করতে পারছে না। দু’বার ‘পার্ডন স্যার’ বলল। অর্ডার নিয়ে চলে যাবার পর একগাল হেসে বুত্রাস বলল, 

  • দেখলে কেমন গুলিয়ে দিলাম? 

 ছেলেটা এমনই, কে বলবে ওর হাতে বাঁধা ঘড়িতেও একটা লাল আলো জ্বলছে নিভছে। আর সাতাশ ঘন্টা পরে সেটা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। বুত্রাসের আবেগ দেখে মাঝে মধ্যে দ্বন্ধে পড়ে ইবা। ছেলেটা সত্যি সত্যি ‘হোমোবটস’ তো? নাকি ‘হোমোসেপিয়েন্স’? কিন্তু সেটাই বা কীভাবে সম্ভব? প্রায় দুহাজার বছর হল, ‘হোমোসেপিয়েন্স’রা লুপ্ত ……… 


  • আমাকে নিয়ে এত ভাবো? 

বুত্রাসের প্রশ্নে চমকে উঠল ইবা, কানের পিছনে লাগানো ‘এরিয়াল’টা খোলা হয়নি। এটা পরে থাকলে যে কেউ ওর মাইন্ড রিড করতে পারে। একমাত্র অবসর যাপন ছাড়া সবসময় ‘এরিয়াল’ পরে থাকা বাধ্যতামূলক। যদিও বুত্রাস এসবের ধার ধারে না। নিয়ম ভাঙতে ওর জুড়ি নেই। ওর ‘ব্যবহারিক পঞ্জি’ থেকে প্রায়ই পয়েন্ট কাটা যায়। সারাজীবন নিজের ভাল ব্যবহার দিয়ে ইবা বহু পয়েন্ট জমা করেছে। আগামীকাল সেসব তার ‘ফিউচার ডেটা’য় ট্রান্সফার হবে। বুত্রাসের পয়েন্টের ভাঁড়ার শূন্য, তাতে অবশ্য ওর কিছু এসে যায় না। শূন্য থেকে শুরু করার চ্যালেঞ্জটা বুত্রাসের বড় পছন্দ। 


'বিমিম' নামের বেগুনি চাঁদটার দিকে তাকিয়ে বুত্রাস বলল,

  •  যেদিন আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল সেদিন তুমি একটা বেগুনী রঙের স্পেসসুট পরেছিলে। তাই 'বিমিমে'র দিকে তাকালেই তোমার কথা মনে পড়ে। ভাগ্যিস সেদিন তোমার স্পেসক্রাফটে ধাক্কা দিয়েছিলাম। 


  • সে তুমি জেনে বুঝেই দিয়েছ। থাকো ‘নেত্রাভিস্কা টাউনে, আমার পিছনে ধাওয়া করে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পথ উজিয়ে ‘মিরোভিয়া’ চলে এলে। ওদের প্রথম দেখার কথা মনে করে হেসে ফেলে ইবা।

  • যাহ, সুন্দরীদের পিছনে ছুটে বেড়ানো ছাড়া বুঝি আমার কোনো কাজ নেই? 

  • আছে বুঝি? এই সাত বছরে তো চোখে পড়েনি। নিজের টাউন ছেড়ে ‘মিরোভিয়াতে’ই তো পড়ে থাকো। 

  • সেই, আমার দুঃখ তুমি কী আর বুঝবে সুন্দরী? হাজার হাজার পয়েন্ট জমিয়েছ। থাকো নামী-দামী হোমোবটসদের কলোনিতে, শাস্তিস্বরূপ জেনোবটসদের বস্তিতে তো আর থাকতে হয় না। একটা ভাল মুখ নেই, যা দেখে প্রেম আসে। সবকটা যেন এক ছাঁদে গড়া। মাপা হাসি। অতি বিনয়ী। মিলনে আনন্দ নেই, বিচ্ছেদে কান্না নেই। এদের ভালবেসে সুখ পাওয়া যায়? 


  • ‘কান্না’ শব্দটা বেশ কয়েকবার রিপিট করল ইবা। সারাজীবনে আমি একবারও কাঁদিনি বুত্রাস। এমনকি কাউকে কাঁদতেও দেখিনি। আমাদের ‘আবেগ পঞ্জি’ থেকে কান্না শব্দটা বহু বহু বছর আগে মুছে দেওয়া হয়েছে। তুমি এই শব্দটা কেন ব্যবহার করলে? আমি কখনো তোমার জন্য কাঁদিনি বলে? 


  • নাহ সুন্দরী। চলেই তো যাব। তাই আজ পিছন ফিরে দেখতে ইচ্ছে করছিল। আমার পয়েন্টের ভাঁড়ার শূন্য। ভালবাসা নামের এই অনন্য অনুভূতিটাও ওরা ফিউচার ডেটায় ট্রানফার করতে দেবে না। যখন ফিউচার ফর্ম ফিলাপ করছিলাম তখন দেখলাম ইচ্ছে পূরনের কলামটা ব্লকড। রাষ্ট্রই ঠিক করে দেবে আমার ভবিষ্যত। তাই আজ সারাদিন ভালবাসা নামের অনুভুতির সঙ্গে কাটিয়েছি। আমার গ্রেট গ্র্যান্ডপার সাহিত্য সংগ্রহের কথা তোমাকে আগেই বলেছি। আজ ফোল্ডারগুলো নড়াচাড়া করতে গিয়ে অদ্ভুত একটা ফাইল পেলাম। তুমি নিশ্চয় ‘আর্থ’ নামের প্ল্যানেটের কথা শুনেছ। আমরা মহাকাশে ঘর বেঁধেছি ঠিকই, কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষ হোমোসেপিয়েন্সরা নাকি আর্থেই থাকত।

  •  হ্যাঁ গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স আর ম্যাগনেটিক ফিল্ড-এর ওল্ড থিয়োরি চ্যাপটারে আর্থের কথা লেখা আছে। আর হোমোসেপিয়েন্স থেকে হোমোবটসে রুপান্তরের একটা হিস্ট্রি আছে বটে কিন্তু আমি সেসব  খুঁটিয়ে পড়েছি, তা নয়। 


  • সে তো বিজ্ঞানের কথা। কিন্তু তুমি কি জানো, ওরা ভালবেসে একজন আর একজনের জন্য প্রাণ দিয়ে দিতে পারত? সেসব গল্পে ‘কান্না’র কথা কত বিশদে লেখা আছে দেখে বেশ অবাক হলাম। অশ্রুবিহীন ভালবাসা নাকি অলীক কল্পনা ছিল।

 

  • ভালবেসে কাঁদত? প্রাণ দিত? আচ্ছা, প্রাণ দিতে পারমিশন লাগতো না ?


  • নাহ, হোমোসেপিয়েন্সরা বিশেষ উন্নত মস্তিস্কের ছিল না। ছাড়ো এসব। কান্নার কথা বলে তোমার মনটা খারাপ করে দিলাম, তাই না ইবা? 


ইবা খেয়াল করল ওর সত্যি সত্যি মনখারাপ করছে। নির্লিপ্ততার ওষুধটা কাজ করছে না। ডোজ বাড়ানো উচিত? 


  • তোমার আর আমার বন্ধুত্ব কবে থেকে গাঢ় হল জানো? যেদিন জানলাম আমরা একই দিনে জন্মেছি।

  • শুধু জন্মদিন বলছ কেন বুত্রাস? বলো জন্মদিন আর মৃত্যুদিনটা একই বলে। কি অদ্ভুত না ? যেদিন জন্মালাম, একটা ঘড়ি বেঁধে দিল হাতে। সে রোজ জানান দিচ্ছে জীবনের আর কতদিন বাকি। হাসব, কাঁদব , ইচ্ছে মতো মনখারাপ করব সেই অধিকারটুকুও আমাদের নেই। নিয়ম করে নির্লিপ্ততার ওষুধ গিলতে হবে। সবসময় সুখে থাকতে কেমন যেন পানসে লাগে। তুমিই ভাল করেছ বুত্রাস। পয়েন্টের ভয় দেখিয়ে রাষ্ট্র তোমাকে হাতের পুতুল বানাতে পারেনি। এখন মনে হচ্ছে তোমার মতো বেহিসাবি জীবন কাটালেই ভাল হত। ‘ফিউচার ডেটা’য় পয়েন্ট ট্রান্সফার করে কী লাভ? রাষ্ট্রই ঠিক করবে পরজন্মে আমি কী হব। ওরাই যদি সব ঠিক করে দেয় তাহলে আমাদের সঙ্গে  জেনোবটসদের ফারাকটা কী রইল? 


ইবার কথাটা শেষ হবার আগেই খাবার এল। মাপা হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে সার্ভ করে গেল জেনোবটস ওয়েটার। বুত্রাস ‘স্টারি ক্রিম চপে’ কামড় দিয়ে বলল,

  • তোমার একটা ‘মন’ আছে ইবা। সেটা কিছুটা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকে ঠিকই, তবে মনটা তোমার একান্ত নিজস্ব। আর মন আছে বলেই কিছু আবেগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। জেনোবটসদের ব্রেন আছে কিন্তু কোনো মন নেই। ওরা ভালবাসতে জানে না।

আড্ডাটা অন্যদিনের মতো জমল না। বুত্রাস নিজেকে উচ্ছল দেখাবার চেষ্টা করছে ঠিকই কিন্তু তাল কাটছে, ইবা সেটা স্পষ্ট বুঝতে পারছে। খাওয়া পর্ব চুপচাপই মিটল। ‘বাবল বার’ থেকে বেরিয়ে ওরা ‘স্পেসিকো’তে এসে বসেছে। শূন্যে ভাসমান ছোট ছোট বেঞ্চ। সাতটা চাঁদের দিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওরা। ইবা বুত্রাসের হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে। বলল,

  • আর কখনো বৃষ্টি দেখা হবে না। শুনে ইবার কপালে একটা চুমু দিয়ে বুত্রাস বলল, মন খারাপ কোরো না। আগামীকাল মৃত্যু আসবে সেটা তো আমরা আগেই জানতাম। তাই না ? আর তুমি আমি একসঙ্গে মরব। কাউকে একলা বাঁচতে হবে না, এটা সুখের নয়? ব্লু! 'উইন্ড বাইক' দেখে তোমার আমাকে মনে পড়বে অথবা 'বিমিম'কে আকাশে দেখলে তোমার জন্য মন খারাপ হবে সেটা তো আর হচ্ছে না। চলো ইবা মৃত্যুটাকে সেলিব্রেট করি। আজ তোমাকে খুব আদর করব। দেখো পরজন্মেও এই আদরের কথা তোমার মনে থাকবে। 

ইবার মনটা উথালপাথাল করছে, এরকমটা আগে কখনো হয়নি। সে বুত্রাসকে জড়িয়ে ধরল। 


                        ২

‘গ্রেভ টাউনে’র সরকারি হাসপাতালটা চোখে পড়ার মতো সাদা। তারই ‘রিবর্ন বিভাগে’ ওদের দেখা হয়ে গেল। ইবাকে অবাক করে দিয়ে বুত্রাস আজ নির্দিষ্ট সময়ে এসে পৌঁছেছে। হিসেব মতো দশজন মৃত্যমুখী মানুষ লাউঞ্জে অপেক্ষারত। সবার পরনে সাদা পোশাক। দশজনের মধ্যে আটজনই ভাবলেশহীন। শুধু ইবা আর বুত্রাসের ভীষণ ভাবে বাঁচতে ইচ্ছে করছে। ওরা একে অপরের হাত ধরে রেখছে। 

 

  • তোমার সুন্দর চোখ দুটো ওরা কাকে দেবে জানিয়েছে? ইবাকে প্রশ্ন করে বুত্রাস। 


  • হ্যাঁ, কী যেন নাম। আমি জেনেই বা কী করব, বলো। শরীরের প্রতিটা অঙ্গের বিলি ব্যবস্থা হবে। এমনকি মনটাকেও ফ্যাক্টরি রিসেট মেরে ওরা অন্যজকে দিয়ে দেবে। আমাদের ভালবাসার স্মৃতিগুলো মুছে যাবে। ইবা হয়তো আরো কিছু বলত। একজন নার্স এসে ওকে ডেকে নিয়ে গেল। ইবা বুত্রাসকে সঙ্গে নিতে চাইলে নার্সটি আপত্তি করল না।


  • আমরা ক্ষমাপ্রার্থী , আপনার ফাইলে খুব বড় রকমের একটা এরর ধরা পড়েছে। এত বড় ভুল ঠিক কীভাবে হয়েছে জানি না। একজন ডাক্তার বিন বিন করে একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছে। ওদের মাথায় ঢুকছে না।

  •  কী হয়েছে পরিস্কার করে বলুন। বেশ জোরেই বলল ইবা। 

  • আপনার মৃত্যু দিন আজ নয়। এক বছর পরে। আপনাকে 'গ্রেভ টাউনে' আগাম ডেকে পাঠানোর জন্য আমরা দুঃখিত।

  • মানে! শুধু আমার একার? বুত্রাসের? 

  • ওনার সব ফাইল ওকে। আজই ওনার মৃত্যুদিন। স্যার আপনি ওই কেবিনে বসুন এখানে আপনাকে অ্যালাও করা যাবে না।

  • ও গেলে আমিও যাব। আমি আজই মরতে চাই। ইবার গলায় আকুতি।

  • সেটা হয় না ম্যাডাম। আমরা ভুলের ক্ষতিপূরণ দেব, কিন্তু এক বছরের আগে আপনার মৃত্যু সম্ভব নয়। 

দুজন অতিকায় জেনোবটস কাচের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। বুত্রাস না গেলে ওরা জোর করে নিয়ে যাবে। চোখভরা অবিশ্বাস নিয়ে ইবার দিকে তাকালো বুত্রাস তারপর ওদের সঙ্গে চলে গেল। একবারের জন্যও পিছন ফিরে তাকালো না। 


প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রণা হচ্ছে ইবার। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার ওর শরীরে কড়া ডোজের নির্লিপ্ততার ওষুধ ইঞ্জেক্ট করল। ওর হাতের ঘড়ি আর ‘এরিয়াল’টা রিসেট করে ফিরিয়ে দিল। জমা পয়েন্টস ওর খাতায় ট্রান্সফার করে ভুলের জন্য আবার ক্ষমা চাইল। যদিও ততক্ষণে এই অপ্রত্যাশিত ‘এররে’র খবরটা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতায় হোমোবটসরা ক্ষুদ্ধ।

রিপোর্টারদের ভিড় আছড়ে পড়ার আগেই সেখান থেকে বেরিয়ে এল ইবা। নিলামঘরে বুত্রাসের ‘উইন্ড বাইক’টা খদ্দেরের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। সামান্য কিছু পয়েন্ট খরচ করে সেটা কিনে নিল ইবা। তার পর কানের পিছনে লাগানো এরিয়ালটা মহাশূন্যে ছুঁড়ে ফেলে দিল। স্পিড লিমিটের তোয়াক্কা না করে, ট্রাফিক রুল ভেঙে ভীষণ গতিতে 'উইন্ড বাইক' চালিয়ে বেরিয়ে গেল । অনেক গুলো নিয়ম ভেঙেছে, ওর 'ব্যবহারিক পঞ্জি' থেকে হু হু করে পয়েন্ট কাটা যাচ্ছে। ও চাইছে আজই সব শেষ হয়ে যাক। বুত্রাসের সেই অবিশ্বাসী চাউনিটা চোখের সামনে ভাসছে, কান্না পাচ্ছে ইবার। ওর চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়ছে লবণ জল। 

সেদিন আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কবাণী ছাড়াই ‘মিরোভিয়া’য় বৃষ্টি নেমেছিল। ইবার চোখের জলে ভেসে গিয়েছিল সারা শহর…………

 


৩টি মন্তব্য:

Featured post

সোনালী মিত্র