দেবাশিস মুখোপাধ্যায় - মায়াজম

Breaking

৫ জুন, ২০১৫

দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

 মুখোশ সরে যাওয়া মুখ 






মুখোপাধ্যায়ের ভেতর একটা মুখ আছে আর মুখোশও আছে নিশ্চয়ই আর সেই মুখোশ খুঁজে হয়রান । একটা অন্দরমহল আছে এই পাঁচ মহলা বাড়ির ।খুঁজতে হবে নইলে আপনাকে এই জানা আমার ফুরোবে না । এই যে পোশাক তার ভেতর এক অন্তর্বাস আর সেটা খুলে ফেললেই কি ধরা পড়ে আসল চেহারা কারণ ত্বকের নীচে আছে হাড় আর এক অন্তঃস্থল । আয়নার সামনে একটা আমি আয়নার ভেতরের আমিকে চিনতে পারে না তখন আয়নার-ভাঙন পর্ব চলে আর কাচে টুকরো টুকরো অসংখ্য আমি । রূপে তোমায় ভোলাবো না বলেও ভোলাতে হয় । মুখোশ খসে গেলে অন্ধকারের একটা ভোর বেরিয়ে আসে ।

মুখস্থ হতো না বালকের । মায়ের স্তনে মুখ রেখে সব পড়া হয়ে যেত তার । সে মাতৃরস মুখে লাগিয়ে যেতো প্রাথমিক পাঠশালায় আর মুখে থাকতো সরলতার মুখোশ অথচ দুষ্টুমিটা সেই করত । চোখ আম ধরত তার আর সেইসব ঝুলন্ত আম তার ঝুলি ভরিয়ে দিত । পাড়াতুতো দিদি খেলত তার মুখোশ নিয়ে আর এভাবেই সে শিখে নিল খোলা পরার রহস্য । রহস্য গল্পের সেই পোকা জ্বালিয়ে যেতো তার রাত আর সকালে উল্টে সে খুলে বসত উল্টোরথ , প্রসাদ আর নবকল্লোলের নিষিদ্ধ পাতা ।
সুন্দরী ফর্সা মেয়ে দেখলেই বন্ধু করার একটা ইচ্ছে জাগে কিন্তু কে বোঝে ওই রূপের আড়ালে লুকিয়ে কতো মারাত্মক এক বিষাক্ত কীট । সে বন্ধু সেজেছিল রঙ্গমঞ্চে কিন্তু প্রেমিকা হতে পারে নি । আহা কি পেত সে !একটা অসুখের বাড়ি ,অভাবের সংসার । কি হবে সেইসব কবিতার সেইসব কখনো সে ভাবে নি । সে টেনে খুলে দেখেছিল সেখানে দানোর মুখ আর তাই সে বাবার চিতায় জ্বালিয়ে দিয়েছিল সব কবিতা ।

তারপর কতো লড়াই মাঠ পেরলো । কতো মুখ আর তার থেকে মুখোশ বেশি দেখা হয়ে গেলো । একটি ছেলেকে আস্তাকুঁড় থেকে তুলে মানুষ করতেই সে ফসকে ভিড়ে গেলো । আসলে সে ভেবেছে সে একটা ধূর্ত শেয়াল কিন্তু সে একটা বড়ো ভেড়া । কাক ময়ূর হয় না তবে একটা বৃথা
চেষ্টা চালিয়ে যায় । এইসব ধান্দাবাজ থেকে সরিয়ে ফেললে নিজেকে সুস্থ মনে হয়। এরাই সমাজের অসুস্থতা । দলবদলের ভেতর তাদের মুখোশ ননা মুখই খসে পড়ে ।লজ্জার মুখ ।
মুখুজ্জে মশায় , আপনি বড়ো ঈর্ষাকাতর আর হিংসুটে । আপনি প্রেমিক হতে পারেন নি , কবি হতে পারেন নি । একটা ভালো মানুষের মুখোশ আপনি পরে আছেন আর প্রতিদিন নাটক করে চলেছেন । আপনার আমি �ভেঙে দিন আর আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখুন কতো বদলে গেছেন,মানবিক মুখ বেরিয়ে একটা কঙ্কাল দেখা যাচ্ছে ।

নাটক শেষ ।

গ্রীণরুমে পড়ে আছে বিচিত্র পোশাক আর নানা মুখের অসংখ্য মুখোশ .

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured post

সোনালী মিত্র